ঢাকা সোমবার, ২৮ জুলাই, ২০২৫

মতলব উত্তরে কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্য আতঙ্কে এলাকাবাসী

মতলব উত্তর (চাঁদপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জুলাই ২৮, ২০২৫, ০২:২৬ এএম

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্য বেড়েই চলেছে। বাজার, স্কুল, কলেজ এমনকি সরকারি অফিস এলাকা পর্যন্ত কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাত এখন নিত্যদিনের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সন্ধ্যার পর দলবদ্ধ হয়ে আড্ডা, চিৎকার, ধূমপান, মেয়েদের উত্ত্যক্ত করা, চাঁদাবাজি ও মাদক সেবনের মতো অপরাধমূলক কর্মকা-ে জড়িয়ে পড়ছে কিশোররা।

বিশেষ করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এলাকায় কিশোরদের আড্ডা নিয়মিত হয়ে উঠেছে। এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘প্রতিদিন সন্ধ্যায় কিছু কিশোর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভেতরে ঢুকে পরিবেশ নষ্ট করে। এতে রোগী ও স্বজনরা আতঙ্কিত হন।’

এ ছাড়া এখলাসপুর, ফরাজীকান্দি, ছেংগারচর, গজরা, পাঁচআনী, পূর্ব ফতেপুর, চান্দ্রাকান্দি, সুগন্ধী, মোহনপুর পর্যটন কেন্দ্র, আমুয়াকান্দি এলাকাজুড়ে সন্ধ্যার পর থেকেই চলে কিশোরদের আড্ডা, উচ্চ স্বরে গান বাজানো, মোটরসাইকেলে হর্ন বাজিয়ে বেপরোয়া চলাফেরা। কেউ কেউ মোবাইলে অশ্লীল ভিডিও দেখার মতো অপসংস্কৃতিতে জড়িয়ে পড়ছে।

স্থানীয় অভিভাবক ও ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, অনেক কিশোর অজান্তেই এই গ্যাংয়ের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়ছে। এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘এক কিশোর গ্যাং সদস্য চাঁদা দাবি করে, না দিলে হেলমেট দিয়ে মারার চেষ্টা করে।’ এমন অভিজ্ঞতা রয়েছে আরও অনেক ব্যবসায়ীর।

এদিকে হরিনা এলাকার বাসিন্দা কামাল হোসেন জানান, ‘চুরির ঘটনা বেড়ে গেছে। মোবাইল চুরি বেড়েছে। দিনের বেলাতেও জানালা বন্ধ করে রাখতে হয়। কিশোর গ্যাংয়ের কারণে আমরা সবসময় আতঙ্কে থাকি।’
অভিভাবক, শিক্ষক ও স্থানীয় নেতারা বলছেন, পুলিশি অভিযানের পাশাপাশি সামাজিক সচেতনতা, পারিবারিক নজরদারি, নৈতিক শিক্ষা ও সংস্কৃতিচর্চা বাড়াতে হবে।

এ পরিস্থিতি সামাল দিতে মতলব উত্তর থানা পুলিশ সম্প্রতি টানা দুই দিন অভিযান চালিয়ে ২০  কিশোরকে আটক করে। ওসি মো. রবিউল হক জানান, ‘আটকদের যাচাই-বাছাই করে অভিভাবক ও জনপ্রতিনিধিদের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে অপরাধে জড়িত থাকলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘অপরাধপ্রবণতা রোধে সবাইকে সচেতন হতে হবে। সন্তানদের গতিবিধি নিয়মিত খেয়াল রাখতে হবে।’

সচেতন মহল পুলিশের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলছেন, এই অভিযান যেন ধারাবাহিক হয় এবং দীর্ঘমেয়াদি সামাজিক পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়, সেই দাবি এখন সর্বত্র।