লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে এখন বিলুপ্তির পথে বাঁশ-বেতশিল্প। এক সময় গ্রামগঞ্জে, পাড়া-মহল্লায় বাঁশ-বেত দিয়ে বিভিন্ন উপকরণ তৈরি করে বহু পরিবার জীবিকা নির্বাহ করলেও প্লাস্টিকের প্রসারে এ পেশা এখন হুমকির মুখে।
এক সময় উপজেলার হাট-বাজারগুলোতে বাঁশের তৈরি কুলা, ডালা, টুপরি, কুড়ি চালুন, মই, বেড়া, ঘরের দরজা, খেলনা ও বিভিন্ন শিল্প বিক্রি হতো। আর বেত দিয়ে তৈরি হতো ঢাকি, কাটা, দাঁড়িপাল্লা, শিশুদের বিভিন্ন খেলনাসামগ্রী। ব্যাপক চাহিদাসম্পন্ন এসব পণ্য তৈরি করে স্থানীয় কারিগররা জীবিকা নির্বাহ করতেন। এখন সরকারি সহায়তা ও প্রশিক্ষণ ও বাঁশ-বেতের মূল্যবৃদ্ধির কারণে কারিগররা এই পেশা থেকে সরে যাচ্ছেন।
উপজেলার শ্র”তিধর এলাকার আবির আলী মার”ফা বেগম দম্পতি। তারা বংশ পরম্পরায় বাঁশ-বেত শিল্পের সঙ্গে জড়িত। ওই দম্পতি জানালেন, আগে বাঁশ-বেতের পণ্য তৈরি করে ভালো আয় করতেন। এখন প্লাস্টিকের প্রসারে এ শিল্পের চাহিদা কমে গেছে। তা ছাড়া লাভের পরিমাণ কমে যাওয়ায় অনেকেই পেশা পরিবর্তন করছেন। যারা এখনো এই পেশায় আছেন, তারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। সরকার ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো যদি এই শিল্পের উন্নয়নে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করে, তাহলে এটি আবার লাভজনক ও টেকসই শিল্পে পরিণত হতে পারে। প্রয়োজন প্রশিক্ষণ, সহজ শর্তে ঋণ, কাঁচামালের সহজলভ্যতা এবং বাজারজাতকরণের জন্য সহায়তা।
এ বিষয়ে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা সুকান্ত সরকার বলেন, ‘সমাজসেবা অধিদপ্তর প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে কাজ করছে। ইতোমধ্যে আমরা আর্থিক সহায়তা ও প্রশিক্ষণ দিয়েছি। প্রকল্প চলমান আছে। যারা এখনো সুবিধা পাননি, তাদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এই সহায়তা দেওয়া হবে।’ স্থানীয়দের প্রত্যাশা, প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিলে কালীগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী বাঁশ-বেতশিল্প আবারও নতুন জীবন পাবে।