বুধবার, ১৩ আগস্ট, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


ফয়সাল আহমেদ, রাজবাড়ী

প্রকাশিত: আগস্ট ১৩, ২০২৫, ০৫:৪৩ এএম

রাজবাড়ী রেলপথে ১৪ স্টেশন বন্ধ

ফয়সাল আহমেদ, রাজবাড়ী

প্রকাশিত: আগস্ট ১৩, ২০২৫, ০৫:৪৩ এএম

রাজবাড়ী রেলপথে ১৪ স্টেশন বন্ধ

  • বেশ কিছু স্টেশনে নেই টিকিট বিক্রির ব্যবস্থা
  • পর্যাপ্ত টিটিই না থাকায় নজরদারি বাইরে থাকছে যাত্রীরা
  • লাখ লাখ টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার

জনবলসংকটে রাজবাড়ী রেলওয়ে সেকশনের ১৪টি স্টেশন বহু বছর ধরে বন্ধ রয়েছে। কিছু স্টেশনে টিকিট বিক্রি হলেও কিছু স্টেশনে সে সুযোগও নেই। এতে টিকিট কাটার সুযোগ না থাকায় এবং পর্যাপ্ত ভ্রাম্যমাণ টিকিট পরীক্ষক (টিটিই) না থাকায় যাত্রীদের সম্পূর্ণ নজরদারি সম্ভব হচ্ছে না। ফলে লাখ লাখ টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।

এদিকে স্টেশন বন্ধ থাকায় ক্রসিং সুবিধা না পেয়ে ট্রেনগুলোকে এক থেকে দুই ঘণ্টা পর্যন্ত সামনে অথবা পেছনের স্টেশনে ট্রেনগুলোকে বসিয়ে রাখতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ। যে কারণে নির্ধারিত সময়ের থেকে কখনো ১ ঘণ্টা, কখনো ২ ঘণ্টা বিলম্বে গন্তব্যে পৌঁছায় ট্রেনগুলো।

রাজবাড়ী রেলওয়ে সূত্র জানায়, রাজবাড়ী-গোয়ালন্দ ঘাট, রাজবাড়ী-পোড়াদহ, রাজবাড়ী-ভাঙ্গা, রাজবাড়ী-ভাটিয়াপাড়া রুটে প্রতিদিন সাটল ও রাজবাড়ী এক্সপ্রেস নামে দুটি ট্রেন চলাচল করে। এ ছাড়া খুলনা-ঢাকা-খুলনা রুটে বেসরকারি নকশী কাঁথা এক্সপ্রেস মেইল ট্রেন, রাজশাহী-ঢাকা আন্তঃনগর মধুমতি এক্সপ্রেস, বেনাপোল-ঢাকা আন্তঃনগর বেনাপোল এক্সপ্রেস, খুলনা-ঢাকা আন্তনগর সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেন রাজবাড়ীর ওপর দিয়ে চলাচল করে।

জনবলসংকটের কারণে ৫ বছরের বেশি ধরে রাজবাড়ী রেলওয়ে জোনের সূর্যনগর, বেলগাছি, মাছপাড়া, গোয়ালন্দ বাজার, খানখানাপুর, বসন্তপুর, বাখুন্ডা, তালমা, পুকুরিয়া, রামদিয়া, বহরপুর, নলিয়া জামালপুর, সাতৈর, ভাটিয়াপাড়া স্টেশনগুলোয় মাস্টার নেই। এগুলোর মধ্যে সূর্যনগর, মাছপাড়া, বেলগাছি, গোয়ালন্দ বাজার, বসন্তপুর, বাখুন্ডা, রামদিয়া স্টেশনে টিকিট বিক্রিরও ব্যবস্থা নেই। আন্তঃনগর ছাড়া অন্য সব ট্রেন এসব স্টেশনে থামছে এবং যাত্রী ওঠা-নামা করছে। তবে স্টেশনগুলো বন্ধ থাকায় সুবিধামতো ট্রেনের ক্রসিং দেওয়া হচ্ছে না।

স্টেশন সূত্রে জানা যায, রাজবাড়ীতে প্রায় একই সময়ে তিনটি ট্রেন এসে দাঁড়াচ্ছে। ভাটিয়াপাড়া এক্সপ্রেস ট্রেনটি ভাঙ্গা থেকে রাজবাড়ী এসে পৌঁছানোর কথা বেলা ১১টায় এবং ছেড়ে যাওয়ার কথা ১১টা ১১ মিনিটে। রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা আন্তঃনগর মধুমতি এক্সপ্রেস ট্রেনের রাজবাড়ী আসার কথা ১০টা ৫০ মিনিটে এবং ছাড়ার কথা ১১টা ৫ মিনিটে। ঢাকা থেকে খুলনাগামী আন্তঃনগর সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেন সাড়ে ১০টায় পৌঁছে ১০টা ৪০ মিনিটে ছেড়ে যাওয়ার কথা। এখানে আন্তঃনগর এক্সপ্রেস দুটিকে অগ্রাধিকার দিতে গিয়ে ভাটিয়াপাড়াগামী রাজবাড়ী এক্সপ্রেস ট্রেনটিকে কখনো ফরিদপুর, কখনো পাঁচুরিয়া আবার কখনো রাজবাড়ীতে বসিয়ে রেখে পার করা হয় আন্তঃনগর ট্রেন। ফলে এক থেকে দেড় ঘণ্টা ট্রেনের ভেতরে অপেক্ষা করতে হয় যাত্রীদের। একই অবস্থা ঘটে বিকেলেও।

পোড়াদহগামী শাটল ট্রেনের ৪টা ৩৫ মিনিটে ছাড়ার কথা থাকলেও বেশির ভাগ দিনেই তা হয় না। ঢাকাগামী বেনাপোল সাড়ে ৫টায় এসে ছাড়ে ৫টা ৫০ মিনিটে, রাজশাহীগামী মধুমতি ট্রেন পৌনে ৬টায় এসে ৬টা ৫ মিনিটে ছাড়ে। অন্যদিকে ভাটিয়াপাড়া থেকে ভাঙ্গাগামী রাজবাড়ী এক্সপ্রেস ৬টায় এসে ৬টা ১০ মিনিটে ছাড়ে যায়। এখানেও সুবিধামতো স্টেশনে ক্রসিং করতে না পারার কারণে লোকাল ট্রেন দুটিকে অপেক্ষা করতে হয়।

অন্যদিকে কিছু স্টেশনে টিকিট কাটার সুযোগ না থাকায় বিনা ভাড়ায় অনেকেই রেল ভ্রমণের সুযোগ পেয়ে যাচ্ছে। একটি ট্রেনে কখনো একজন, কখনো দুজন টিটিই থাকেন। যাদের পক্ষে পুরো ৫টি বগির সব যাত্রীকে নজরদারি করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। কখনো যাত্রীরা টাকা দিয়েও টিকিট পান না। কারণ, ৯০ টাকার নিচে কাগজের টিকিট দেওয়া যায় না। এনিয়ে কখনো কখনো টিটিদের সঙ্গে যাত্রীদের বাগবিত-ার সৃষ্টি হয়। ঘটে অপ্রীতিকর ঘটনাও।

রাজবাড়ী শিশুরাজ্যের অধ্যক্ষ মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ জানান, তিনি মাঝেমধ্যেই গ্রামের বাড়ি নড়াইলে যান। রাজবাড়ী-ভাটিয়াপাড়া রুটে চলাচলকারী রাজবাড়ী এক্সপ্রেস ট্রেনে ভাটিয়াপাড়া নেমে গন্তব্যে যাওয়াটা তার জন্য সহজ হয়। কিন্তু বেশির ভাগ দিনেই ট্রেনটি নির্ধারিত সময়ে রাজবাড়ী স্টেশন থেকে ছাড়ে না। আবার ফেরার সময় কালুখালীতে দীর্ঘক্ষণ বসিয়ে রাখা হয়। এতে তার মতো অনেক যাত্রীই ভোগান্তিতে পড়েন।

রাজবাড়ী রেলওয়ের জুনিয়র টিটিই ইন্সপেক্টর (জেআরআই) এনামুল হক জানান, রাজবাড়ীতে বর্তমানে তিনজন সিনিয়র টিটিই এবং চারজন জুনিয়র টিটিই রয়েছে। অথচ জুনিয়র টিটিই থাকার কথা ১৮ জন। তবে, নকশী কাঁথা ও শাটল ট্রেন বেসরকারি খাতে চলাচল করায় তাদের ওপর চাপ কমেছে। তারপরও সাতজনকে দিয়ে কাজ চালানো খুবই দুরূহ।

রাজবাড়ী স্টেশনমাস্টার তন্ময় কুমার দত্ত বলেন, লোকবল সংকটের কারণে রাজবাড়ী জোনের বেশির ভাগ স্টেশনে মাস্টার নেই। মাস্টার না থাকার কারণে তাদের সুবিধামতো ক্রসিং দিতে পারেন না। রাজবাড়ী থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত শুধু পাঁচুরিয়া ও ফরিদপুরে ক্রসিং দেওয়ার সুযোগ আছে। রাজবাড়ী থেকে মাছপাড়া পর্যন্ত পাংশা ও কালুখালীতে ক্রসিং দেওয়া যায়। যদি সব স্টেশনে মাস্টার থাকতেন তাহলে সুবিধামতো ক্রসিং দিতে পারতেন।

রেলওয়ের পাকশী অঞ্চলের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা হাসিনা খাতুন বলেন, রেলওয়েতে জনবলের সংকট চলছে। যে কারণে কিছু স্টেশনের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। জনবল নিয়োগের ব্যাপারটি তাদের হাতে নেই। নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হলে এ সংকট কেটে যাবে। তবে, তা কবে তা নিশ্চিত করে বলতে পরেননি তিনি।

 

 

রূপালী বাংলাদেশ

Shera Lather
Link copied!