রাজশাহীর তানোরে ডিজিটাল পোস্ট অফিসের ৫৩ জন গ্রহকদের সঞ্চয় পত্রের ১ কোটি ৮৪ লাখ টাকা পোস্ট মাস্টর কর্তৃক আত্মসাৎ হওয়ার প্রমাণ মিললেও দীর্ঘদিনেও টাকা ফেরৎ পাননি ভুক্তভোগী গ্রহকরা। এ ঘটনায় গ্রহকদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এদিকে টাকা ফেরৎ পাওয়ার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন ভুক্তভোগী গ্রাহকরা। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ৩ ঘন্টাব্যাপি তানোর পোস্ট অফিসের সামনে ও উপজেলা প্রশাসনিক ভবনের সামনে তারা এই কর্মসূচি পালক করেন। এ সময় আগামী ১ সপ্তাহের মধ্যে আমাদের জমানো টাকা ফেরৎ না দিলে কঠোর আন্দোলনে যাওয়ার ঘোষণা দেন ভুক্তভোগীরা।
তারা বলছেন, তানোর ডিজিটাল পোস্ট অফিসের পোস্ট মাস্টার মুখছেদ আলী গ্রাহকদের সঞ্চয়পত্রের টাকা পোস্ট অফিসের সরকারী লেজারে জমা না করে আত্মসাৎ করেন। তদন্তে প্রমাণ হওয়ার পরেও সেই টাকা গ্রাহকদের ফেরত দেওয়ার জন্য কোন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছেনা।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও ভুক্তভোগী গ্রাহকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তানোর ডিজিটাল পোস্ট অফিসের পোস্ট মাস্টার মুখছেদ আলী প্রায় ৩ বছর ধরে ৫৩ জন গ্রাহকের সঞ্চয় পত্রের ১ কোটি ৮৪ লাখ টাকা লেজার বইয়ে জমা না করে নিজে আত্মসাৎ করেন। তবে, গ্রহকদের পাশ বইয়ে টাকা জমা দেখানো হয়েছে। বিষয়টি ২০২৪ সালের মার্চ মাসে জানাজানি হলে পোস্ট মাস্টারকে অবরুদ্ধ করে রাখেন গ্রাহকরা। এ ঘটনায় ওই সময় ডাক বিভাগের উর্ধবতন কর্মকর্তাদের তদন্তে গ্রাহকের টাকা আতœসাতের বিষয়টি প্রমানিত হওয়ার পর পোস্ট মাস্টারকে সাময়িক বরখাস্থ করে পুলিশে সোপর্দ করে তানোর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিও করেন ডাক বিভাগ কর্তৃপক্ষ। পরে দুদকে একটি মামলা করা হয়। অভিযুক্ত পোস্ট মাস্টার আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পেলেও আর অফিসে আসছেন না।
এ বিষয়ে তানোর সদর গ্রামের মৃত জামালের স্ত্রী সিরিনা বলেন, ৮ লাখ টাকা পোস্ট অফিসে সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমে জমা রাখা ছিল। মেয়াদ শেষ হলেও সেই টাকা ফেরৎ পাচ্ছিনা। গত ২ বছর ধরে জমানো টাকা ফেরৎ পেতে প্রশাসন ও পোস্ট অফিসের উর্ধবতন কর্মকর্তাদের দ্বারে দ্বারে ধর্না দিয়েও কোন প্রতিকার পাচ্ছি না।
সদর হিন্দু পাড়া গ্রামের মৃত সুরেন্দ্র নাথ পালের ছেলে হিরেন্দ্রনাথ পাল বলেন, আমি ১০ বছর মেয়াদে ১০ লাখ টাকা জমা রেখেছিলাম। মেয়াদ শেষে আমার ১৩ লাখ টাকা পোস্ট মাস্টার আতœসাৎ করেছে। কোয়েল গ্রামের সৈয়দ আলীর ছেলে মাসুদ রানা বলেন, আমার ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা ফেরৎ পাচ্ছিনা।
তানোর পোস্ট অফিসের পোস্ট মাস্টার আব্দুল মালেক ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আদালত থেকে মুক্তি পাওয়ার পর বরখাস্ত হওয়া আগের পোস্ট মাস্টার মুখছেদ আলী আতœগোপনে রয়েছে। এ বিষয়ে তিনি বিভাগীয় পোস্ট মাস্টার ডেপুটি জেনারেল রাকিব বিশ্বাসের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন।