যশোরে ভৈরব নদের ওপর কচুয়া-ছাতিয়ানতলা সেতু নির্মাণ তিন বছর ধরে বন্ধ রয়েছে মামলার জটিলতায়। জরাজীর্ণ বাঁশের সাঁকোই এখন দুই পাড়ের মানুষের একমাত্র ভরসা। প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে এ সাঁকো দিয়ে যাতায়াত করছেন অন্তত ৩০ গ্রামের মানুষ। বন্ধ রয়েছে রিকশা, ইজিবাইক, মোটরসাইকেলসহ সব ধরনের যানবাহন। এতে বিশেষ করে অসুস্থ রোগী ও শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি চরম আকার ধারণ করেছে।
জানা যায়, ভৈরব নদের পশ্চিমে যশোর সদর উপজেলার কচুয়া ইউনিয়নের ঘোপ এলাকা, পূর্বে বাঘারপাড়া উপজেলার ছাতিয়ানতলা ইউনিয়ন। এই দুই এলাকার মানুষের চলাচলের একমাত্র ভরসা ছিল একটি পুরোনো সেতু। ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় ২০২২ সালে তা ভেঙে ফেলে এলজিইডির তত্ত্বাবধানে সাড়ে ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন ব্রিজ নির্মাণের কাজ শুরু হয়। তবে নির্মাণকাজের মাত্র ৬০ শতাংশ শেষ হওয়ার পর নদী রক্ষা কমিটির মামলায় কাজ বন্ধ হয়ে যায়।
ভৈরব নদ সংস্কার কমিটির উপদেষ্টা ইকবাল কবির জাহিদ বলেন, ‘বিআইডব্লিউটিএর অনুমোদন ছাড়াই কম উচ্চতায় ব্রিজ নির্মাণ শুরু হয়েছিল। তাই আদালতে মামলা করা হয়। এলজিইডি ছয় মাস আগে নীতিমালা মেনে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিলেও এখনো তা বাস্তবায়ন হয়নি।’
স্থানীয় বাসিন্দা শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘ব্রিজ না থাকায় এলাকার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। আগে নৌকায় পারাপার করতাম, এখন বাঁশের সাঁকো দিয়ে জীবন হাতে নিয়ে চলাচল করতে হয়।’
অন্য এক বাসিন্দা অনুপ সাহা জানান, ‘সাঁকো ব্যবহার না করলে কচুয়া থেকে ছাতিয়ানতলায় যেতে ৭ কিলোমিটার ঘুরে যেতে হয়। তাই ঝুঁকি জেনেও সবাই সাঁকো ব্যবহার করছে।’
এলাকাবাসী জানায়, সেতুটি চালু হলে কচুয়া ইউনিয়নের ঘোপ, নিমতলী, রসুনকাটি, দেয়াপাড়া এবং ছাতিয়ানতলা ইউনিয়নের অন্তত ৩০ গ্রামের মানুষের সহজ যোগাযোগব্যবস্থা নিশ্চিত হবে। এ ছাড়া আশপাশের সাতটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাও সরাসরি উপকৃত হবেন।
এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী আহমেদ মাহাবুবুর রহমান বলেন, ‘নদী রক্ষা কমিটির মামলার কারণে কাজ বন্ধ রয়েছে। আদালতে আবেদন করা হয়েছে। রায় পেলে দ্রুত কাজ শুরু হবে।’
সেতুটি নির্মিত হলে দুই উপজেলার মানুষের যাতায়াত ব্যবস্থায় নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে বলে আশা করছে এলাকাবাসী। কিন্তু মামলা নিষ্পত্তির অপেক্ষায় দিন গুনতে হচ্ছে তাদের।