- ৪০ বছর ধরে গ্রামবাসীর অন্ধকারে জীবন
- সন্ধ্যা নামলেই গ্রামে নেমে আসে ভূতুড়ে পরিবেশ
- মোমবাতি, হ্যারিকেন, কুপি আলোয় চলছে পড়াশোনা
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার মুরাদপুর ইউনিয়নের বশতনগর ১নং হাজারী সড়ক এলাকায় এখনো বিদ্যুৎ সুবিধা থেকে বঞ্চিত ২০-২২টি পরিবার। দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে আধুনিক সভ্যতার সঙ্গে তাল মেলাতে না পেরে অন্ধকারেই দিন কাটছে এসব পরিবারের।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বহুবার জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কাছে ধরনা দিলেও মিলছে শুধু আশ্বাস, বাস্তবে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। সন্ধ্যা নামলেই গোটা গ্রাম অন্ধকারে ঢেকে যায়। ভূতুড়ে পরিবেশে চোর-ডাকাতের আতঙ্কে রাত কাটাতে হয় গ্রামবাসীকে। গরমে শিশু-কিশোররা ঘরে থাকতে না পেরে বাইরে হাটে।
বিদ্যুৎ না থাকায় আজও গ্রামবাসীর প্রধান ভরসা মোমবাতি, হ্যারিকেন কিংবা কুপির টিমটিমে আলো। পড়াশোনায় সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি পোহাচ্ছে শিক্ষার্থীরা। হ্যারিকেনের আলোয় পড়তে গিয়ে পিছিয়ে পড়ছে তারা।
কলেজপড়ুয়া এক ছাত্র বলেন, ‘ফোন-ল্যাপটপ চার্জ দিতে হলে অন্য গ্রামে যেতে হয়। দোকানপাট চালাতে পারছি না। বিদ্যুৎ না থাকায় আমাদের জীবনযাত্রা থমকে আছে।’
স্থানীয় কৃষকেরা জানান, বিদ্যুৎ না থাকায় মোটর দিয়ে সেচ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। ফলে কৃষিকাজে ব্যয় বাড়ছে। প্রতিদিন কেরোসিন, মোমবাতি কিনতে গিয়ে অতিরিক্ত খরচও যোগ হচ্ছে।
এ বিষয়ে বাড়বকু- বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রিয়াজুল হক বলেন, ‘ওই এলাকার বেশির ভাগ জায়গা খাস খতিয়ানভুক্ত হওয়ায় বিদ্যুৎ লাইন দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। যদি রেজিস্ট্রিভুক্ত নিষিদ্ধ জমি হয়ে থাকে এবং কেউ আবেদন করে, সে ক্ষেত্রে বিষয়টি আমরা বিবেচনা করব।’
স্বাধীনতার অর্ধশতাব্দী পরও বিদ্যুৎ সুবিধা থেকে বঞ্চিত সীতাকুণ্ডের বশতনগর হাজারী গ্রামের পরিবারগুলো আজও অপেক্ষায়, কবে তারা আলো দেখবে, কবে শেষ হবে অন্ধকারের এই দুর্ভোগ।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন