পুরোনো কার্ডধারী হয়েও ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) পণ্য কিনতে পারছে না কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে ১২ হাজার ৬৮১ পরিবার। সরবরাহকৃত ফ্যামিলি কার্ড হালনাগাদের জন্য জমা দিয়ে দীর্ঘ অপেক্ষার পরও মিলছে না নতুন কার্ড। ফলে ডিলারদের কাছ থেকে নির্ধারিত মূল্যে পণ্য কিনতে পারছে না এসব পরিবার।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় মোট উপকারভোগীর সংখ্যা ২১ হাজার ৩৫০ জন। এর মধ্যে নাওডাঙ্গা ইউনিয়নে ৩ হাজার ৩, শিমুলবাড়ী ২ হাজার ৪২৪, ফুলবাড়ী ৪ হাজার ৫৭৬, বড়ভিটা ৩ হাজার ৬২৩, ভাঙ্গামোড় ৩ হাজার ৭৮৪ এবং কাশিপুর ইউনিয়নে রয়েছেন ৩ হাজার ৯৪০ জন। এসব উপকারভোগীদের মাঝে স্মার্ট কার্ড সরবরাহ করার সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক অনলাইনে হালনাগাদের কাজ শুরু করা হয়। তথ্য হালনাগাদ শেষে ইতিমধ্যে ৮ হাজার ৬৬৯টি স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ড উপকারভোগীদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। এর মধ্যে নাওডাঙ্গা ইউনিয়নে ৭৫৬, শিমুলবাড়ী ৯৫১, ফুলবাড়ী ২ হাজার ২৩৩, বড়ভিটা ৬১২, ভাঙ্গা মোড় ১ হাজার ৯৬৭ এবং কাশিপুর ইউনিয়নের ২ হাজার ৩৭০ জন স্মার্ট কার্ড পেয়েছেন। এরা ছাড়াও এখনো স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ড পাননি ১২ হাজার ৬৮১ জন।
এদিকে স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ড না থাকায় সরকার নির্ধারিত মূল্যে ডিলারদের কাছ থেকে পণ্য কিনতে না পেরে ক্ষোভ জানিয়েছেন বঞ্চিতরা। তারা বলছেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির সময় টিসিবি পণ্য কিনতে পেরে তারা খুব উপকৃত হতেন। কম মূল্যে চাল, তেল, ডাল ছাড়াও চিনি ও ছোলা বুট কিনতেন। চলতি বছরের শুরুর দিকে ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে কার্ড জমা দিয়ে অনলাইনে তথ্য প্রদানের জন্য বলা হয়। সে মোতাবেক তারা পুরোনো কার্ড জমা দিয়ে অনলাইনে তথ্য প্রদান করেন। এরপর কয়েক মাস কেটে গেলেও হদিস মিলছে না স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ডের। স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করেও মিলছে না কোনো সদুত্তর। এ মাসে পাবেন, পরের মাসে পাবেনÑ এমন আশ্বাসই দিচ্ছেন বারবার।
টিসিবির উপকারভোগীর তালিকায় থাকা হতদরিদ্র ও দিনমজুর মানুষেরা অতিদ্রুত তাদের মাঝে স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ড প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন ভুক্তভোগীরা।
ভুক্তভোগী কাশিপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা পুরোনো কার্ডধারী মো. হারুনুর রশিদ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আগে সব সময় টিসিবির পণ্য পেতাম। সাশ্রয়ী মূল্যে চাল, ডাল, তেল, চিনি নিয়ে মাস চলে যেত। এখন দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে পরিবার-পরিজন নিয়ে খুবই কষ্টে আছি। তার মধ্যে আগের কার্ড জমা দিয়ে স্মার্ট কার্ড এখনো হাতে পায়নি। এ কারণে বাধ্য হয়ে বেশি দাম দিয়ে বাজার থেকে ছোলা, তেল, চিনি, চাল ও ডাল কিনতে হচ্ছে। এখন আমরা পরিবারসহ মহাবিপদের মধ্যে আছি, না পারি কইতে না পারি সইতে।
ফুলবাড়ী সদর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ বলেন, পুরোনো ফ্যামিলি কার্ডে তথ্য লেখার জায়গা না থাকায় এবং নতুন স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ড সরবরাহের লক্ষ্যে পুরোনো কার্ডগুলো জমা নেওয়া হয়। পাশাপাশি অনলাইনে উপকারভোগীদের তথ্য হালনাগাদ করা হয়। যতটুকু জানি, ইতিমধ্যেই বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে উপকারভোগীদের তথ্য হালনাগাদের কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। অচিরেই জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের মাধ্যমে উপজেলা প্রশাসনের কাছে উপকারভোগীদের স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ডগুলো সরবরাহ করা হবে। আশা করি, চলতি মাসে উপকারভোগীদের মাঝে স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ড বিতরণ করা যাবে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সিরাজুদ্দৌলা জানান, টিসিবির উপকারভোগীদের মাঝে স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ড প্রদানের কাজ চলমান রয়েছে। কিছু স্মার্ট কার্ড এসেছে। সেগুলো বিতরণ করা হয়েছে এবং কার্ডধারীরা নিয়মিত পণ্য কিনছেন। অবশিষ্ট কার্ডগুলো এলে সেগুলো বিতরণসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 
                            -20250905064827.webp) 
                                     সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন 
                                     
                                     
                                     
                                                                                    -20251031020255.webp) 
                                                                                     
                             
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
       -20251031190935.webp) 
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
       -20251025002118.webp) 
        
        
        
        
        
        
        
       
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন