ঢাকা রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় যেন মাদকসেবীদের আস্তানা

তৌফিকুর রহমান, ভূঞাপুর
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২৫, ০১:১৮ এএম

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে একসময় প্রতিবন্ধীদের শিক্ষার জন্য প্রতিষ্ঠিত পুষ্পকলি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় এখন পরিণত হয়েছে মাদকসেবীদের আস্তানায়। বিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত শ্রেণিকক্ষে প্রতিদিনই চলছে অবাধে মাদক সেবন।

গতকাল শনিবার সরেজমিনে দেখা যায়, ভূঞাপুর প্রেসক্লাবসংলগ্ন বিদ্যালয়টির ফটক ও শ্রেণিকক্ষের দরজার সামনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে অসংখ্য ফেনসিডিলের খালি বোতল ও মাদক সেবনের সরঞ্জাম।

স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও পৌরসভার প্যানেল মেয়র খন্দকার জাহিদুল ইসলাম (জাহিদ কমিশনার) ২০১২ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন। সরকারি স্বীকৃতির আশ্বাসে শিক্ষকও নিয়োগ দেওয়া হয়। শুরুতে উদ্যোগটি প্রশংসিত হলেও সরকারি সহায়তা না আসায় কার্যক্রম ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তী সময়ে বিদ্যালয়টি শিক্ষার্থীশূন্য হয়ে পড়ে। প্রতিষ্ঠাতা জাহিদুল ইসলাম অফিস কক্ষ ব্যবহার করতেন ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক কর্মকা-ে।

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর জাহিদুল ইসলাম লাপাত্তা হলে বিদ্যালয়টি অচল হয়ে পড়ে। সেই সুযোগে পরিত্যক্ত ভবনটি দখলে নেয় মাদকসেবীরা। প্রতিদিন সেখানে পড়ে থাকতে দেখা যায় ফেনসিডিলের বোতল ও মাদকের সরঞ্জাম।

এদিকে নবনিযুক্ত এসিল্যান্ড ও পৌর প্রশাসক মো. রাজিব হোসেন ভূঞাপুর শহরকে আধুনিকায়নের উদ্যোগ নিয়েছেন। শহরের যানজট নিরসন ও রাস্তার বেদখল উচ্ছেদের পাশাপাশি পরিত্যক্ত এ বিদ্যালয়ের বিষয়টিও উঠে এসেছে। জানা গেছে, বিদ্যালয়টি সরকারি জায়গায় হওয়ায় সেটি সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। তবে স্থানীয় বিএনপির একটি অংশ বিদ্যালয়টিকে রক্ষা করার চেষ্টা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

ভূঞাপুর থানার ওসি এ কে এম রেজাউল করিম বলেন, ‘মাদকের বিষয়টি আগে কেউ আমাকে জানায়নি। এখন জানলাম। জায়গাটা নজরে রাখা হবে এবং আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

বিদ্যালয়টি ভাঙা হবে কি না, জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর প্রশাসক মো. রাজিব হোসেন বলেন, ‘বিদ্যালয়টি দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। সেখানে অনেকের আনাগোনা আছে বলে জেনেছি। তাদের নিজস্ব জায়গা রয়েছে এ বিষয়ে শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে সেখানে কার্যক্রম চালু করার অনুরোধ করা হয়েছে।’