ঢাকা রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

টি-টোয়েন্টিতে সল্টের ১৪১

রেকর্ড বই ওলট-পালট করে জিতল ইংল্যান্ড

স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২৫, ০২:০২ এএম

সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে রেকর্ড ওলট-পালট করে জিতল ইংল্যান্ড। এই ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ১৪৬ রানে হারায় তারা। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ইতিহাসে ইংল্যান্ডের সবচেয়ে বড় জয়ের রেকর্ড এটি। আর দক্ষিণ আফ্রিকার সবচেয়ে বড় ব্যবধানে হারের রেকর্ড। শুধু তাই নয়, আরও অনেক রেকর্ড গড়েছে ইংল্যান্ড। বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ে ২ উইকেটে ৩০৪ রানের বিশাল স্কোর দাঁড় করায় স্বাগতিকেরা। জবাবে ১৬.২ ওভারে ১৫৮ রানে অলআউট হয় দক্ষিণ আফ্রিকা। নিজেদের টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে সবচেয়ে বড় দলীয় স্কোর গড়ার রেকর্ড গড়ল ইংল্যান্ড। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটেও রেকর্ড হয়েছে।

ইংল্যান্ডের করা ৩০৪ রান তৃতীয় সর্বোচ্চ দলীয় স্কোরের রেকর্ড। এর আগে ২০২৬ টি-টোয়েন্টি বিশ^কাপের আফ্রিকান উপ-আঞ্চলিক বাছাইপর্বে গত বছরের অক্টোবরে গাম্বিয়ার বিপক্ষে ৪ উইকেটে ৩৪৪ রান করেছিল জিম্বাবুয়ে। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে এশিয়ান গেমস ক্রিকেটে মঙ্গোলিয়ার বিপক্ষে নেপালের ৩ উইকেটে ৩১৪ রানের রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ড গড়েছিল জিম্বাবুইয়ানরা। তবে ম্যানচেস্টারে যা ঘটেছে, তার মহিমা জিম্বাবুয়ে ও নেপালের ইনিংস দুটির চেয়েও অনেক বেশি। স্বীকৃত টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে আগে ইংল্যান্ডের মাটিতে ৩০০ রানের স্কোর দেখেনি কোনো দল। আগের রেকর্ডটি ছিল সমারসেটের ২৬৫ রানের স্কোর।

ইংলিশ ব্যাটার ফিল সল্টও ১৪১ রানের ইনিংস খেলে রেকর্ডের পাতায় নাম তুললেন। ইংল্যান্ডের হয়ে টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত সংগ্রহের রেকর্ড এটি। আগেরটিও তার দখলে ছিল (১১৯)। এ ছাড়া ইংল্যান্ডের ব্যাটাররা ২২৮ রান তোলেন বাউন্ডারি থেকে, যা আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে তৃতীয় সর্বোচ্চ। আজ সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে আবার ইংল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকা মুখোমুখি হবে। সিরিজে ১-১ সমতা বিরাজ করায় এই ম্যাচ ফাইনাল ম্যাচে রূপ নিয়েছে।

দ্বিতীয় ম্যাচে টসে হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে স্রেফ ঝড় বইয়ে দিয়েছে ইংল্যান্ড। প্রথম ১০ ওভারে তুলেছে ১ উইকেটে ১৬৬ রান। ১২.১ ওভারেই ছাড়িয়ে যায় ২০০ রানের কোটা। শেষ পর্যন্ত নিজেদের টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহের রেকর্ড গড়ে থেমেছে, যেটা আবার এই সংস্করণের ইতিহাসে তৃতীয় সর্বোচ্চ। টেস্ট খেলুড়ে দুটি দেশের মধ্যে টি-টোয়েন্টি ম্যাচে এটি সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহের রেকর্ডও। ইংল্যান্ডের রেকর্ড গড়ার রাতে নায়ক সল্ট। ৮ ছক্কা ও ১৫ চারে ৬০ বলে ১৪১ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছেন।

টি-টোয়েন্টিতে ইংল্যান্ডের হয়ে শুধু সর্বোচ্চ রানের ইনিংস নয়, সেই পথে ইংল্যান্ডের হয়ে এই সংস্করণে গড়েছেন দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ডও। ২০২১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে লিয়াম লিভিংস্টোনের ৪২ বলে সেঞ্চুরির রেকর্ড ভেঙে ৩৯ বলে সেঞ্চুরি তুলে নেন সল্ট। এই সংস্করণে ইংল্যান্ডের হয়ে সর্বোচ্চ রানের ছয়টি ইনিংসের মধ্যে চারটিই সল্টের। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে এটি তার চতুর্থ সেঞ্চুরি।

চমৎকার ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে ইংল্যান্ড নিজেদের ইনিংসে চার মেরেছে ৩০টি এবং ছয় মেরেছে ১৮টিÑ অর্থাৎ, শুধু বাউন্ডারি থেকেই ২২৮ রান তুলেছে ইংল্যান্ড, যা তাদের মোট রানের ৭৫ শতাংশ। তাতে অবশ্য শুধু সল্ট নয়, ৩০ বলে ৮০ রানের ইনিংস খেলা জস বাটলারের অবদানও কম নয়। ৭ ছক্কা ও ৮ চারে সল্টের (২৩৫.০০) চেয়ে বেশি স্ট্রাইক রেটে ব্যাট করেছেন বাটলার (২৭৬.৬৬)। ২১ বলে ৪১ রানে অপরাজিত ছিলেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক হ্যারি ব্রুক।

দক্ষিণ আফ্রিকার বোলারদের জন্য রাতটা ছিল স্রেফ দুঃস্বপ্নের। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে তারা এর আগে কখনোই এত রান হজম করেননি। তাদের তিনজন বোলার এক ম্যাচে সবচেয়ে খরুচে বোলিংয়ের তালিকায় শীর্ষ ছয়ে জায়গা করে নিয়েছেন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

ইংল্যান্ড: ২০ ওভারে ৩০৪/২ (সল্ট ১৪১*, বাটলার ৮৩, ব্রুক ৪১*; ইয়ানসেন ০/৬০, রাবাদা ০/৭০, উইলিয়ামস ০/৬২)

দক্ষিণ আফ্রিকা: ১৬.১ ওভারে ১৫৮ (মার্করাম ৪১, ফরচুন ৩২, স্টাবস ২৩, ফেরেইরা ২৩; আর্চার ৩/২৫, ডসন ২/৩৪)

ফল: ইংল্যান্ড ১৪৬ রানে জয়ী।

ম্যাচ-সেরা: ফিল সল্ট (ইংল্যান্ড)

সিরিজ: তিন ম্যাচের সিরিজে ১-১ সমতা।