ঢাকা রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

অ্যাভোকাডো চাষে বাজিমাত

ফিরোজ মাহমুদ, মিরসরাই (চট্টগ্রাম)
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২৫, ০১:২০ এএম

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের পাহাড়ে চাষ করা হয়েছে ইন্দোনেশিয়ার অ্যাভোকাডো চাষে সফল উদ্যোক্তা মো. ওমর শরীফ। অন্য বছরের তুলনায় এবার ভালো ফলন হয়েছে। বাজারে বিক্রিও করা হচ্ছে বিদেশি এ ফল। প্রতি কেজি অ্যাভোকাডো বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকায়।

জানা যায়, কয়েক বছর আগে মো. ওমর শরীফ ইন্দোনেশিয়া থেকে ১০টি অ্যাভোকাডো গাছের চারা সংগ্রহ করে তার জোরারগঞ্জ ফার্মস অ্যান্ড নার্সারিতে রোপণ করেন। নিয়মিত পরিচর্যা এবং অনুকূল পরিবেশের কারণে দুই বছরের মধ্যে গাছগুলো ফল দিতে শুরু করেছে। এ পর্যন্ত তিনি প্রায় ৫০০ কেজির বেশি ফল সংগ্রহ করতে পেরেছেন। তার এ প্রাথমিক সাফল্য প্রমাণ করেছে বাংলাদেশের আবহাওয়া অ্যাভোকাডো চাষের জন্য উপযোগী। তিনি আশা করছেন, আগামী কয়েক বছরের মধ্যে আরও বড় আকারে বাণিজ্যিকভাবে অ্যাভোকাডো ফলন সম্ভব হবে।

ওমর শরীফ জানান, তিনি মেক্সিকান জাতের প্রতিস্থাপনযোগ্য অ্যাভোকাডো চারা লাগিয়েছেন, যা অর্থনৈতিকভাবে স্থানীয় চাহিদা পূরণে সহায়ক হবে। অ্যাভোকাডো একটি মিষ্টি সুস্বাদু ফল যা প্রযুক্তি ও পুষ্টিগুণে ভরপুর। এতে চিনির পরিমাণ কম হওয়ায় এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অত্যন্ত উপকারী।

ফলটির ওজন প্রায় ৪০০-৮০০ গ্রাম পর্যন্ত হতে পারে এবং এর ভেতরের অংশ মাখনের মতো মসৃণ ও হালকা মিষ্টি স্বাদের। অ্যাভোকাডো বিভিন্নভাবে খাওয়া যায়, যেমন কাঁচা, পাকা, সবজি, সালাদ, স্যান্ডউইচ বা টোস্টে। স্যাটুরেটেড ফ্যাট না থাকায় এটি মানুষের রোগ-প্রতিরোধে কার্যকর। দেশের বাজারে এ ফলের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে, তাই এর বাণিজ্যিক সম্ভাবনা ব্যাপক।

ওমর শরীফ শুধু অ্যাভোকাডো চাষেই সীমাবদ্ধ নন। পাশাপাশি তিনি থাইল্যান্ড থেকে আনা অ্যাভোকাডোর চারা বাজারজাত করার পরিকল্পনা করেছেন। তার উদ্যোগ অন্য কৃষকদেরও এ ফল চাষে উৎসাহিত করবে এবং দেশের কৃষি অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

অ্যাভোকাডো ছাড়াও ওমর শরীফ সফলভাবে রোপণ করেছেন মিয়ামোটা (কিউই), ব্লুবেরি, ব্ল্যাকবেরি, মাল্টা, লেবু, কমলালেবু এবং কফি চাষাবাদ। এর মধ্যে অনেক দেশি-বিদেশি ফলের গাছ রয়েছে। তার এ বহুমুখী উদ্যোগ দেশের কৃষি ক্ষেত্রে নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে। ওমর শরীফ বলেন, অ্যাভোকাডো চাষের এ সাফল্য দেখে অনেকেই উৎসাহিত হয়ে চাষাবাদ শুরু করেছেন। তার মতে, উদ্যোক্তাদের মাধ্যমে বিদেশি ফলের চাষ দেশে সম্প্রসারিত হলে একদিকে খাদ্যে পুষ্টি চাহিদা পূরণ সম্ভব হবে, অন্যদিকে কৃষকদের জন্য নতুন আয়ের পথ তৈরি করবে। তার এ উদ্যোগ নিঃসন্দেহে দেশের অন্যান্য তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য অনুকরণীয়।