হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলায় দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে প্রতিমা তৈরিতে এখন মহাব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন প্রতিমা তৈরির কারিগররা। পূজাম-পগুলোর প্রস্তুতির কাজ চলছে পুরোদমে। হিন্দু সম্প্রদায়ের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয়া দুর্গা মা’র আগমনকে সামনে রেখে ভিন্ন আমেজে উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে উপজেলা সর্বত্র।
উপজেলার বুল্লা, হরিশ্যামা ও কাটিয়ারা এলাকার প্রতিমা ভাস্করদের সঙ্গে আলাপকালে জানা যায়, প্রতিমা তৈরির উপকরণ এটেল মাটি, বাঁশ, সুতলি, লোহা ও তারের দামসহ সব ধরনের উপকরণের দাম আগের চেয়ে অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। সে জন্য অন্য বছরের তুলনায় এ বছর প্রতিমা তৈরিতে খরচ বহুগুণে বৃদ্ধি পাবে বলে জানান ভাস্কররা। তার পরও প্রতিযোগিতামূলকভাবে মাধবপুরে চলছে ভিন্নতর আকৃতির প্রতিমা তৈরির কাজ।
মাধবপুর উপজেলা বাংলাদেশ পূজা উদযাপন ফ্রন্টের আহ্বায়ক হীরেশ ভট্টাচার্য হিরো জানান, এখন পর্যন্ত উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন ও একটি পৌর সভায় ১১৫টি পূজাম-পে পূজা উদযাপনের প্রস্তুতি চলছে। আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর শারদীয়া দুর্গা দেবীর বোধন ও ষষ্ঠাদির মধ্য দিয়ে পূজা অনুষ্ঠান শুরু হবে। ২ অক্টোবর দশমী পূজা শেষে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে এ উৎসবের সমাপ্তি হবে। কাটিয়ারা গ্রামের প্রতিমা ভাস্কর রিপন পাল (৪০) জানান, গত প্রায় ২ মাস যাবত প্রতিমা তৈরির কাজ শুরু করেছেন। এবার তিনি ২০টি প্রতিমার বায়না পেয়েছেন। অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর উপকরণের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রতিমার মজুরিও কিছুটা বাড়িয়ে নেওয়া হচ্ছে। এবার সর্বনিম্ন ৪০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত তার তৈরি প্রতিমার মজুরি নেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যেই তার তৈরি প্রতিমাগুলোর নির্মাণকাজ শেষ হয়ে এসেছে। এখন থেকে রংতুলির কাজ শুরু করেছেন বলে জানান তিনি। মাধবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদ বিন কাশেম জানান, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে দুর্গাপূজা উদযাপনের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে।
শারদীয় দুর্গোৎসব চলাকালীন যাতে কোনো প্রকার ক্ষতি না হয় সেজন্য আয়োজক কমিটিকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে এবং পুলিশ প্রশাসনে টহল টিম সতর্ক রয়েছে। হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা যেন শান্তিপূর্ণ পরিবেশে তাদের ধর্মীয় উৎসব উদযাপন করতে পারেন সেজন্য প্রয়োজনীয় সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে। আশা করছি প্রতি বছরের মতো এবারও কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে শারদীয় দুর্গোৎসব পালিত হবে। মাধবপুর থানার ওসি সহিদুল্যা জানান, পুলিশের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখতে পুলিশ সর্বদা বদ্ধপরিকর।