চট্টগ্রামের চন্দনাইশ-সাতকানিয়া উপজেলার চরতী সর্বিরচর এলাকায় গ্যাস ক্রসফিলিং গুদামে ভয়াবহ বিস্ফোরণে দগ্ধ হওয়া শ্রমিকদের মধ্যে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। গত শনিবার রাতে ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় চন্দনাইশের ছৈয়দাবাদ এলাকার নাসির উদ্দীনের ছেলে মো. ইদ্রিস (২৫) এবং কক্সবাজার জেলার মো. ইউসুফ (৩২) মারা যান।
নিহত ইদ্রিসের ছোট ভাই মো. আবু তালহা অভিযোগ করে বলেন, বিস্ফোরণের পর প্রথমে দগ্ধদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। পরে তাদের অবস্থার অবনতি হলে চারজনকে ঢাকায় নেওয়া হয়। তবে ঢাকায় গিয়ে চিকিৎসাসেবা সঠিকভাবে পাননি তারা। গুদাম মালিকপক্ষ আহতদের চিকিৎসা ব্যয়ের দায়িত্ব না নিয়ে সমাজসেবা অধিদপ্তরে ফ্রি চিকিৎসার জন্য আবেদন করে সময় নষ্ট করে এবং ওষুধ কেনার জন্য যথাযথ সহযোগিতাও দেয়নি বলে অভিযোগ করেন তিনি। ফলে পরিবারগুলোকেই নিজেদের খরচে চিকিৎসা চালাতে হয়েছে।
শ্রমিক ইউসুফের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাবেক চন্দনাইশ উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশের চন্দনাইশ মানবিক টিমের প্রধান মাওলানা মো. সোলাইমান ফারুকী।
উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরে বৈলতলী ইউনিয়নের মৃত কবির আহমদের ছেলে মাহাবুবুল আলমের নেতৃত্বে একটি সিন্ডিকেট সাতকানিয়ার চরতী ইউনিয়নের নির্জন এলাকায় গড়ে তোলে অবৈধ গ্যাস ক্রসফিলিং গুদাম। সেখানে সরকারি বড় সিলিন্ডার থেকে ছোট সিলিন্ডারে গ্যাস ভরে বাজারজাত করা হতো।
গত বুধবার ভোর সাড়ে ৬টার দিকে ওই গুদামে সিলিন্ডার বিস্ফোরণ ঘটে। মুহূর্তেই আগুন ছড়িয়ে পড়লে গুদাম মালিক মাহাবুবুল আলমসহ ১০ জন শ্রমিক দগ্ধ হন। খবর পেয়ে চন্দনাইশ ফায়ার সার্ভিসের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে তিন ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে প্রথমে দোহাজারী হাসপাতাল, পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখান থেকে চারজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকায় নেওয়া হয়। তাদের মধ্যে দুইজন শনিবার রাতে মারা যান।