- মহেশপুর, হরিণাকু-ু, শৈলকুপা ও কালীগঞ্জে দীর্ঘদিন ধরে সিজারিয়ান বন্ধ
- অ্যানেস্থেসিয়া বিশেষজ্ঞ ও গাইনি চিকিৎসকের অভাবই প্রধান কারণ
- প্রতি মাসে অন্তত ২০০ প্রসূতি সেবা থেকে বঞ্চিত, ব্যয়বহুল ক্লিনিকে ছুটতে বাধ্য
ঝিনাইদহের ছয় উপজেলার মধ্যে চারটিতে (মহেশপুর, হরিণাকু-ু, শৈলকুপা ও কালীগঞ্জ) চিকিৎসক সংকটের কারণে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে প্রসূতিসেবা ও সিজারিয়ান অপারেশন। কেবল জেলা সদর ও কোটচাঁদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ সেবা চালু আছে। বিশেষ করে অ্যানেস্থেসিয়া বিশেষজ্ঞ না থাকায় এ সংকট দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
ফলে প্রসূতি মায়েদের বেসরকারি ক্লিনিক ও হাসপাতালে ছুটতে হচ্ছে। এতে একদিকে বাড়ছে চিকিৎসা ব্যয়, অন্যদিকে ঝুঁকির মুখে পড়ছেন মা ও নবজাতক।
স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, ঝিনাইদহ জেলার প্রায় ২০ লাখ মানুষ সরকারি স্বাস্থ্যসেবার ওপর নির্ভরশীল। চিকিৎসক থাকলে প্রতি মাসেই অন্তত ২০০ প্রসূতি মা জেলা ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা সেবা নিতেন। কিন্তু প্রায় এক বছর ধরে সিজারিয়ান বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন প্রসূতি মা ও তাদের পরিবারগুলো।
মহেশপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আধুনিক অপারেশন থিয়েটার, অক্সিজেন সিলিন্ডার, স্যালাইন স্ট্যান্ডসহ সব সরঞ্জাম থাকলেও প্রায় এক বছর ধরে কোনো সিজারিয়ান হচ্ছে না। ৫০ শয্যার এ হাসপাতালে ২১ জন চিকিৎসকের অনুমোদিত পদ থাকলেও ১৭টি পদ দীর্ঘদিন শূন্য পড়ে আছে।
প্রসূতি শিরিন আক্তার বলেন, ‘সরকারি হাসপাতালে সিজার হলে খরচ কম হতো। কিন্তু সেবা বন্ধ থাকায় বাধ্য হয়ে ক্লিনিকে যেতে হচ্ছে। অভাবের সংসারে এত টাকা জোগাড় করা কষ্টকর।’
স্থানীয় বাসিন্দা বাবর আলী বলেন, ‘আগে এখানে প্রতি মাসে গড়ে ১৪ থেকে ১৮টি সিজার হতো। এখন প্রায় এক বছর ধরে অপারেশন বন্ধ। প্রতিদিন ৩৫০-৫০০ রোগী চিকিৎসা নিতে আসে, কিন্তু চিকিৎসক সংকটে সেবা ব্যাহত হচ্ছে।’
হরিণাকু-ুর গৃহবধূ ফারজানা খাতুন জানান, ‘ক্লিনিকে সিজার করাতে গেলে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা লাগে। এত টাকা জোগাড় করা গরিব মানুষের জন্য কষ্টসাধ্য।’
এ বিষয়ে ঝিনাইদহের সিভিল সার্জন ডা. মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘অপারেশনের যন্ত্রপাতি সব উপজেলাতেই আছে। তবে চিকিৎসক সংকট বড় সমস্যা। কোটচাঁদপুরের একজন চিকিৎসককে আপাতত সপ্তাহে এক দিন হরিণাকু-ে পাঠানো হয়েছে। দ্রুত চিকিৎসক পদায়ন হলে সিজারিয়ান সেবা আবার চালু হবে।”
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন