ঢাকা শুক্রবার, ০৩ অক্টোবর, ২০২৫

গ্রাম-গঞ্জে ছড়িয়ে রয়েছে কথিত পশুচিকিৎসক

লালমোহন (ভোলা) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: অক্টোবর ৩, ২০২৫, ০৩:৫৩ এএম

উপজেলা শহরসহ গ্রাম-গঞ্জে ছড়িয়ে রয়েছে কথিত পশুচিকিৎসক। নামমাত্র প্রশিক্ষণ নিয়ে অবলা প্রাণীদের জীবন নিয়ে রীতিমতো খেলা করেন তারা। এসব কথিত পশুচিকিৎসকের অপচিকিৎসায় অকালেই প্রাণ হারায় বিভিন্ন প্রজাতির পোষা প্রাণী।

তেমনি ভোলার লালমোহনেও বিভিন্ন গ্রাম-গঞ্জে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন এসব কথিত পশুচিকিৎসক। উপজেলার রমাগঞ্জ ইউনিয়নের রায়চাঁদ এলাকার এমনই এক পশুচিকিৎসক ভাস্কর চন্দ্র দাস। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, কোনো প্রশিক্ষণ না নিয়েই গরু-ছাগলসহ অন্য পোষা প্রাণীকে তিনি চিকিৎসা দিচ্ছেন। তার অপচিকিৎসায় এরই মধ্যে মারা গেছে কয়েকটি গরু।

রমাগঞ্জ ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের খামারি আব্দুর রহিম বলেন, আমার একটি গরু অসুস্থ্য হলে স্থানীয় পশুচিকিৎসক ভাস্করের কাছে নিই। তিনি গরুটিকে চিকিৎসা দেন। কিন্তু চিকিৎসার পর গরুটি আরও অসুস্থ হয়ে পড়ে। এরপর গরুটি উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালে নিয়ে যায়। তবে আগেই ভুল চিকিৎসা দেওয়ায় গরুটিকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ভেটেরিনারি কাউন্সিল আইন-২০১৯ অনুসারে ডিভিএম ডিগ্রি ছাড়া কেউ গবাদি পশু চিকিৎসা করতে পারবেন না- এটা আমি আগে জানতাম না। অথচ ভাস্কর বাবু নিজেকে পশুচিকিৎসক হিসেবে পরিচয় দিয়ে গ্রাম-গঞ্জের খামারিদের সঙ্গে প্রতারণা করছেন। তার প্রতারণার শিকার আমিও।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ভাস্কর চন্দ্র দাসের বিরুদ্ধে অপচিকিৎসায় এলাকার বেশ কয়েকটি গরু মারা গেছে। কথিত পশুচিকিৎসক ভাস্করের কাছে অবলা প্রাণিদের জীবনের যেন কোনো মূল্য নেই।

অভিযোগের বিষয়ে ভাস্কর চন্দ্র দাস জানান, পশুচিকিৎসার জন্য আমার প্রশিক্ষণ রয়েছে। এ ছাড়া আমি নিয়ম মেনেই চিকিৎসা দিয়ে থাকি। আব্দুর রহমের গরুটিকে নিয়ম নেমে চিকিৎসা দিয়েছে। এরপরও অন্য কোথাও গরুর চিকিৎসা করানোর কারণে সেটি মারা গেছে।

কেবল ভাস্কর চন্দ্র দাসই নন, লালমোহনের আনাচকানাচে এভাবেই দিনের পর দিন অবলা প্রাণীদের অপচিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন কথিত পশুচিকিৎসকরা। গ্রামের পর গ্রাম দাপিয়ে বেড়ালেও এদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন না সংশ্লিষ্টরা। এসব কথিত পশুচিকিৎসকদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি স্থানীয় খামারি ও পোষা প্রাণীর মালিকদের।

এ বিষয়ে ভোলা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম খান বলেন, গ্রাম-গঞ্জে স্থানীয় যেসব পশুচিকিৎসক রয়েছেন তারা কেবল প্রাণীদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেবেন। তা-ও উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে যোগাযোগ করে। আর কেউ যদি তা না করেন তাহলে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কারণ আমরা চাই না অপচিকিৎসার কারণে কোনো খামারি বা গবাদি পশুর মালিক ক্ষতির সম্মুখীন হন।