সরকারের হস্তক্ষেপ ও ষড়যন্ত্রের অভিযোগে বিসিবি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান তামিম ইকবালসহ ১৬ পরিচালক পদপ্রার্থী। গত বুধবার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর তামিম বলেছিলেন, ‘আগে নির্বাচনের ফিক্সিং বন্ধ করুন, পরে ক্রিকেটের ফিক্সিং বন্ধ করার চিন্তা করুন।’ তামিমের সেই বক্তব্যের প্রেক্ষাপটেই যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া পাল্টা অভিযোগ করে বলেছেন, বিসিবি নির্বাচনে নাকি ফিক্সিংয়ের চেষ্টা করেছেন তামিমরাই!
একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আসিফ মাহমুদ বলেছেন, ‘যারা নিজেদের স্বার্থে অনেক পক্ষের দুয়ারে যায়, সমঝোতা ভঙ্গ করে, তারাই বিসিবি নির্বাচনের আসল ফিক্সার।’ তিনি আরও বলেন, ‘ফিক্সিংটা তামিম ভাইয়েরাই করতে চেয়েছেন। তবে সেখানে ব্যর্থ হয়েছেন। সভাপতি, সেক্রেটারিÑ এদের ওনাদের পক্ষ থেকে কল দিয়ে বলা হয়েছে যে তাকে কাউন্সিলর দিতে হবে, ডিসিদের ধমক দেওয়া হয়েছে, অনেক কিছু করা হয়েছে। সেগুলো না-ই বলি। ফিক্সিংটা করতে ওনারা, মানে ইলেকশনটা ফিক্স করতে ওনারা ব্যর্থ হয়েছেন।’ এমনকি, বিরাট কোহলি-গৌতম গম্ভীরের কাছেও বিসিবি নির্বাচন নিয়ে অভিযোগ করা হয়েছেÑ দাবি ক্রীড়া উপদেষ্টার। তিনি বলেন, ‘কেউ একজন ফোন করে বিরাট কোহলিকে অভিযোগ দিয়েছে আর কোহলি সেটা গৌতম গম্ভীরসহ অন্যদের সঙ্গেও শেয়ার করেছেন। এমন ঘটনা ঘটেছে। দেশের জন্য লজ্জাজনক হয় এমন কোনো কাজ করা বা কোথাও অভিযোগ দেওয়া উচিত নয়।’ বিসিবির সাবেক সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন তিনবার নির্বাচিত হয়েছিলেন। অভিযোগ ছিল, নিজের ছকে নির্বাচন সাজিয়ে জয় নিশ্চিত করতেন তিনি। অনেকে অভিযোগ তুলেছেন, আসিফ মাহমুদ নাকি পাপনের পথেই হাঁটছেন। এ প্রসঙ্গে ক্রীড়া উপদেষ্টা বলেন, ‘পাপন ভাইয়ের সময় কাউন্সিলর হতেন আওয়ামী লীগের নেতা বা তাদের সন্তানেরা, যাদের সঙ্গে ক্রীড়া সংস্থার কোনো সম্পর্ক নেই।
আমরা কিন্তু ক্রীড়া সংগঠকদেরই সামনে আনছি।’ ১৫ ক্লাবের বিষয় নিয়ে আাদালতে রিট করা প্রসঙ্গে আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘যদি ভোট কারচুপির জন্য অনিয়মতান্ত্রিকভাবে ক্লাব নিয়ে এসে ভোট দখল করেন বা বাকিদের সুযোগ সীমিত করে দেন, তাহলে যে কেউ আদালতের দ্বারস্থ হতে পারেন। ফারুক আহমেদ তা-ই করেছেন এবং সেই রায় পেয়েছেন। যদিও এটি চূড়ান্ত রায় নয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘একটি রাজনৈতিক দলের সন্তানদের জায়গা করে দিতে তামিমকে সরানোর চেষ্টা করেছে কিছু ক্রিকেট সংগঠক। সমস্যার সূত্রপাত সেখান থেকেই। বিভাজন তৈরি হয়েছে, বাদানুবাদ হয়েছে, উত্তপ্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। শেষ পর্যন্ত মেকানিজমটা কাজ করেনি।’ আসন্ন বিসিবির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যেমন পাল্টাপাল্টি অভিযোগ বাড়ছে, তেমনি ক্রিকেটপ্রেমীদের চোখও এখন এই ভোটযুদ্ধের দিকেই। নির্বাচনের আগে শেষ মুহূর্তের এই নাটক আরও কোন দিকে মোড় নেয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।