চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে দুর্গাপূজার নিরাপত্তা নিশ্চিতে আনসার-গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর (ভিডিপি) নামে নিয়োগ দেওয়া হয় একঝাঁক প্রশিক্ষণহীন ও অপেশাদার কর্মী। অভিযোগ উঠেছে, ভাতা আত্মসাতের উদ্দেশ্যে স্থানীয় কর্মকর্তারা ইউনিফর্ম পরিয়ে দিনমজুর শ্রেণির লোকজনকে দায়িত্বে বসিয়েছেন।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, এ বছর ফটিকছড়ির ১২৭টি ম-পে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর মধ্যে তিন শ্রেণিতে ভাগ করে মোট ১ হাজার ১৪৮ জন আনসার-ভিডিপি সদস্য মোতায়েন দেখানো হলেও অধিকাংশ ম-পে এর অর্ধেক কর্মীও পাওয়া যায়নি। এমনকি অনেক ম-পে তালিকাভুক্ত আনসার সদস্যদের পরিবর্তে দেখা গেছে স্থানীয় যুবকদের।
গত বৃহস্পতিবার সরেজমিনে হারুয়ালছড়ি ইউনিয়নের বড়বিল ত্রিপুরা পাড়ার কালি ও দুর্গা মন্দিরে গিয়ে দেখা যায়, তালিকায় নাম থাকলেও দায়িত্ব পালন করছেন চুক্তিভিত্তিক দুই স্থানীয় যুবক। প্রতিদিন মাত্র ৩০০ টাকা মজুরিতে ৫ দিনের জন্য তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। অথচ ওই ম-পকে ‘অতি ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল এবং কাগজে-কলমে সেখানে ৮ জন আনসার থাকার কথা।
একই অবস্থা পূর্ব ফটিকছড়ির মাতব্বরপাড়া দুর্গা মন্দিরেও। ওই দিন বিকেলে সেখানে দেখা যায়, কোনো আনসার সদস্য উপস্থিত নেই। পরে যারা এসেছেন, তাদের নাম তালিকার সঙ্গে মেলেনি। জানা যায়, ওই ম-পে মাত্র ৪ জনকে চুক্তিভিত্তিক ৮ হাজার টাকায় নিয়োগ করা হয়েছে।
এ ছাড়া অধিকাংশ ম-পেই আনসার সদস্যদের সার্বক্ষণিক উপস্থিত না থাকা, কমসংখ্যক লোক মোতায়েন, রাতের বেলায় দায়িত্বে গাফিলতি এসব অনিয়ম চোখে পড়েছে।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি মাস্টার রতন কান্তি চৌধুরী বলেন, ‘এমন ঘটনা আমাদের ব্যথিত করেছে। প্রশাসন যেন বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেন।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে উপজেলা আনসার ভিডিপির প্রশিক্ষক মিজানুর রহমানকে অফিসে পাওয়া যায়নি। পরে ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া মন্তব্য করতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘কিছু ম-পে আনসার সদস্যদের অনুপস্থিতি ও ভুয়া নাম লিপিবদ্ধ হওয়ার তথ্য পেয়েছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
আনসার-ভিডিপি চট্টগ্রাম ও পার্বত্য রেঞ্জের উপ-মহাপরিচালক ড. মো. সাইফুর রহমান বলেন, ‘এ বিষয়ে আমাকে কেউ কিছু জানায়নি। তবে বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা হবে। যারা অনিয়মে জড়িত, তাদের ছাড় দেওয়া হবে না।’