মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল শহরের কলেজ রোডে চার দশক পর ‘শ্রীমঙ্গল পৌরসভা মিলনায়তন কাম গ্রন্থাগার’-এর পুনর্নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করা হয়েছে। গত বুধবার রাত ৮টায় প্রধান অতিথি হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার (অতিরিক্ত সচিব) খান মো. রেজা-উন-নবী। এ সময় উপস্থিত ছিলেন মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মো. ইসরাইল হোসেন, শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর প্রশাসক মো. ইসলাম উদ্দিন, পৌরসভা নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জহিরুল ইসলাম, উপজেলা প্রকৌশলী মো. ইউসুফ হোসেন খান প্রমুখ।
স্থানীয়রা জানান, চল্লিশ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত এ লাইব্রেরিটি গত ১৩ বছর ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। এছাড়া টানা ৮ বছর ‘উপাধ্যক্ষ মোহাম্মদ আব্দুস শহীদ কলেজ’-এর নামে পাবলিক লাইব্রেরির ভবনটি অবৈধভাবে দখলে নিয়ে প্রশাসনিক ও শ্রেণিকক্ষ কার্যক্রম চালিয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা ও সাবেক কৃষিমন্ত্রী আব্দুস শহীদ।
জানা গেছে, ১৯৮৩ সালে শ্রীমঙ্গল পাবলিক লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠিত হলেও ২০১২ সাল থেকে এটি বন্ধ রয়েছে। তখন প্রচুর বই ও আসবাবপত্রে সজ্জিত গ্রন্থাগারটি শিক্ষক, সাংবাদিক, জনপ্রতিনিধি, শিক্ষার্থী, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র সিটিজেনসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের আড্ডাস্থলে পরিণত হয়েছিল।
স্থানীয়রা জানান, এক সময় এই লাইব্রেরিটি সব বয়সি মানুষের জ্ঞানার্জনের অন্যতম কেন্দ্র ছিল। ১৯৮৩ সালের ২২ জুলাই শ্রীমঙ্গল পৌরসভা কার্যালয়ের একটি টিনশেড কক্ষে ‘শ্রীমঙ্গল গণগ্রন্থাগার’ নামে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৮৪ সালে কলেজ রোডে জেলা প্রশাসকের খাস খতিয়ানভুক্ত জমিতে টিনশেড ভবন নির্মিত হয়। ১৯৯৩ সালে এটি পৌরসভার কাছে হস্তান্তরিত হয়ে ‘শ্রীমঙ্গল পৌরসভা অডিটোরিয়াম কাম লাইব্রেরি’ নামে পরিচিত হয়।
শ্রীমঙ্গল পৌরসভা নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জহিরুল ইসলাম জানান, শ্রীমঙ্গল পৌরসভার বাস্তবায়নে ‘শ্রীমঙ্গল পৌরসভা মিলনায়তন কাম গ্রন্থাগার’-এর দুই তলা ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে। এর নিচতলায় আধুনিক লাইব্রেরি এবং দ্বিতীয় তলায় কফি কর্নার, বয়স্কদের বিশ্রামাগার ও শিশু-কিশোর পাঠককেন্দ্র থাকবে। প্রকল্পটির মোট আয়তন তিন হাজার ৯১৯ বর্গফুট। এর মধ্যে নিচতলা ২ হাজার ৮২৫ বর্গফুট এবং দ্বিতীয় তলা ১ হাজার ৮৪ বর্গফুট। বাজেট ৯৯ লাখ ৩৩ হাজার ৫৫৮ টাকা।
পৌর প্রশাসক ও ইউএনও মো. ইসলাম উদ্দিন বলেন, উপজেলাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি বাস্তবায়নের জন্য জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে আমরা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পরিকল্পনা পাঠিয়েছিলাম। অবশেষে প্রস্তাবনা অনুমোদিত হয়েছে। গ্রন্থাগার ও মিলনায়তনের কাজ পর্যায়ক্রমে সম্পন্ন হবে এবং এটি উপজেলার বইপ্রেমী পাঠক ও সিনিয়র সিটিজেনদের বিনোদনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো হিসেবে কাজ করবে। আশা করছি, এর মাধ্যমে মানুষের মেধা ও মননশীলতার বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা যাবে।

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন