ঢাকা শুক্রবার, ০৭ নভেম্বর, ২০২৫

জরাজীর্ণ ভবনে ঝুঁকি নিয়ে চলছে পাঠদান

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: নভেম্বর ৭, ২০২৫, ১২:৩৭ এএম

**** চরভূতা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে
*** ভবনের চার দিকের দেয়াল থেকে খসে পড়ছে পলেস্তারা
*** ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে পাঠদানের কারণে দিনদিন কমছে শিক্ষার্থীর সংখ্যা

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের মধ্য চরভূতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনটি দীর্ঘদিন ধরে জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। তবুও শিক্ষকরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পাঠদান চালিয়ে যাচ্ছেন। এভাবে বছরের পর বছর একটি জরাজীর্ণ স্কুলে চলছে পাঠদান কার্যক্রম। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের কারণে অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানকে অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়ে গেছেন। যার ফলে দিনদিন শিক্ষার্থীর সংখ্যাও কমে যাচ্ছে এ বিদ্যালয় থেকে।

বিদ্যালয়টির ভবনের চতুর্দিকে কোথাও খসে পড়ছে পলেস্তারা, কোথাও আবার মাথার ওপর থেকে ঝরে পড়ছে ইট আর শুরকি। ভবনের বিভিন্নস্থানে ফাটল ধরে বেরিয়ে পড়েছে রড। বর্ষাকালে ছাদ বেয়ে পড়ে পানি। বিদ্যালয়ের পেছনের অংশ হঠাৎ করে তাকালে মনে হবে যেন ভূতের বাড়ি। বর্তমানে ১৪২ জন ছাত্র-ছাত্রী ও ৬ জন শিক্ষক নিয়ে চলছে ঝুঁকিপূর্ণ এ বিদ্যালয়টি।

বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানান, আমাদের স্কুলটি ভাঙাচোরা। বৃষ্টি আসলে পানি পড়ে। মাঝে-মধ্যে পলেস্তারা খসে পড়ে। আমরা ঝুঁকির মুখে পড়ালেখা করি। আমাদের অনেক ভয় হয় এ স্কুলে। আমাদের অনেক সহপাঠী অন্য স্কুলে চলে গেছে। বৃষ্টির সময় স্কুল আসতে কষ্ট হয়। আমরা একটি সুন্দর স্কুল চাই।

বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী সাকিব মাহমুদ বলেন, তিনি অত্র স্কুল থেকে ২০১৫ সালে পিএসসি পরীক্ষা দিয়েছেন। তখন থেকেই বিদ্যালয়টি ঝুঁকিপূর্ণ। বর্তমানে এতোটাই জরাজীর্ণ তাই ছাত্র-ছাত্রীরা ক্লাস করতে আগ্রহী নয়। দেখা যাচ্ছে অভিভাবকরা তাদের স্কুল ভর্তি করে। কিন্তু তারা দুর্ঘটনার ভয়ে বিদ্যালয়ে আসে না। আমাদের এ গ্রামে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় কোনো কেন্দ্র নাই। আমরা চাই আমাদের বিদ্যালয়টি সাইক্লোন সেন্টার হিসেবে নতুন ভবন করার দাবি জানাচ্ছি। পাশাপাশি চলাচলের মাটির রাস্তাটি পাকা অথবা সলিং করা হোক।

বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মর্জিনা বেগম জানান, আমার দেখা এমন ঝুঁকিপূর্ণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এ জেলায় একটিও নেই। সরকারি চাকরি করি এজন্য পরিস্থিতির কারণে বাধ্য হয়ে শ্রেণি কক্ষে পাঠদান নিতে হচ্ছে।

প্রধান শিক্ষক মো. জহির উদ্দিন বলেন, বিদ্যালয়টি ছিল রেজিস্ট্রার প্রাথমিক বিদ্যালয়। এরপর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসেবে রূপান্তরিত হয়। বর্তমানে বিদ্যালয়ের ভবন একেবারে ঝুঁকিপূর্ণ। ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ কারণে অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানকে অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়ে গেছে। দিনদিন শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমে যাচ্ছে।

লক্ষ্মীপুর জেলা প্রাথমিক প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাজ্জাদ জানান, ইতোমধ্যেই আমাদের উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে ঝুঁকিপূর্ণ বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করা হয়েছে। আমরা প্রকৌশলীর কাছে লিখিত আবেদন দিব। তারা কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে পর্যালোচনা করবে। এরপর তারা আমাদের তদন্ত রিপোর্ট দিলে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের চিঠি দিব। যেন ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের বিষয়ে তারা কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।