আজ (সোমবার) থেকে ২১ নভেম্বর ব্রাজিলের বেলেমে অনুষ্ঠিত হচ্ছে কপ-৩০ সম্মেলন। সেখানে বিশ্বের প্রায় ১৫০ দেশের প্রতিনিধি মিলিত হয়ে বৈশ্বিক জলবায়ু সংকট মোকাবিলার সমাধান খুঁজবেন। ১২ হাজারের বেশি জলবায়ু আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী এই সম্মেলনে অংশ নিবেন। এবারের এই বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে বাংলাদেশ থেকে শিশু প্রতিনিধি হিসেবে অংশ নিচ্ছেন সাতক্ষীরার নওশীন ইসলাম ও নুর আহমেদ জিদান।
নওশিন আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর গ্রামের শিক্ষক মো. শহীদুল ইসলাম ও জেসমিন নাহার দম্পতির সন্তান। সে প্রতাপনগর ইউনাইটেড বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। গত কয়েক বছর ধরে শিশু সুরক্ষা, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় কাজ করছে নওশিন।
অন্যদিকে নুর আহমেদ জিদান শ্যামনগর উপজেলার মুন্সীগঞ্জ ইউনিয়নের যতীন্দ্রনগর গ্রামের জি.এম. রইসউজ্জামান এবং মোছা. লায়েকা খানম দম্পতির সন্তান। জিদান সুন্দরবন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। একইসঙ্গে সে কেন্দ্রীয় উপকূলীয় শিশু ফোরামের সভাপতি। গত শনিবার ওই দুই শিশু বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাবের মুখে দাঁড়িয়ে তারা বিশ্বের সামনে বাংলাদেশের উপকূলের শিশুদের বাস্তবতা তুলে ধরবেন। আগামী শুক্রবার তারা ‘ঈযরষফৎবহ রহ ঈৎরংরং’ বিষয়ে ণড়ঁঃয চধারষরড়হ প্যানেল আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন।
নওশীন ইসলাম বলেন, উপকূলের শিশুদের দুঃখ-দুর্দশাকে তুলে ধরব। আগামী প্রজন্মের জন্য বাসযোগ্য পৃথিবী রেখে যাওয়া সবার দায়িত্ব। প্রতিবছর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব প্রকট হচ্ছে আর আমরা শিশুরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। পড়াশোনা বন্ধ হচ্ছে, খাদ্য সংকট দেখা দিচ্ছে, শিশুশ্রম ও বাল্যবিবাহ বেড়ে চলেছে প্রতিনিয়ত। এ জন্য ক্ষতিগ্রস্ত শিশুদের শিক্ষা, পুষ্টিকর খাবার, স্বাস্থ্যসহ সব মৌলিক অধিকার যেন পায় সে জন্য উন্নত দেশের নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করব।
অপর শিশু নুর আহমেদ জিদান জানায়, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সাতক্ষীরা উপকূলীয় অঞ্চল বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠছে। এটা এখন বাঁচা-মরার লড়াই। এই সম্মেলনে বিশ্ব নেতাদের সামনে আমাদের পরিস্থিতির কথা তুলে ধরব। উন্নত দেশগুলো যেন তাদের অতীতের ভুলগুলোর মাশুল আমাদের উপরে চাপিয়ে না দেয় সে জন্য বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্বান রাখব।
নওশীন ইসলামের বাবা মো. শহীদুল ইসলাম জানায়, বিশ্বমঞ্চে আমার মেয়ে বাংলাদেশের কথা বলবে, সাতক্ষীরা উপকূলের জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্ত শিশুদের কথা বলবে। আমি পিতা হিসেবে গর্বিত।
প্রসঙ্গত, আগামীকাল (মঙ্গলবার) বাংলাদেশ থেকে ওই দুই শিশু ব্রাজিলের উদ্দেশে রওনা করবেন। এরপর ১২ থেকে ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত সম্মেলনে অংশগ্রহণ করবেন। ১৭ নভেম্বর ঢাকা ফিরবেন বলে জানা গেছে।

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন