ঢাকা সোমবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৫

রায় পেয়েও জমিতে যেতে পারছেন না কাঠমিস্ত্রি

মাদারীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: নভেম্বর ২৪, ২০২৫, ০১:৫৬ এএম

মাদারীপুরে মামলার পরে আদালতের রায় পেয়েও নিজ জমিতে দখলে যেতে পারছে না কাঠমিস্ত্রির পরিবার। বিবাদীপক্ষ ক্ষমতাধর হওয়ায় চরম আতঙ্কে রয়েছেন ভুক্তভোগীরা। এমন অবস্থায় প্রশাসনের কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন ভুক্তভোগী কাঠমিস্ত্রি মকবুল ফকির।

মামলার নথি ও ভুক্তভোগী পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সদর উপজেলার রাস্তি মৌজায় জমি কিনে নিয়মিত খাজনা পরিশোধ করে আসছেন মোজাফফর ফকিরের ছেলে মকবুল ফকির। সেই জমিতে জোরপূর্বক টিনশেড ঘর নির্মাণ করেন একই এলাকার আমির হোসেনের স্ত্রী নুরজাহান বেগম। এ সময় বাধা দিলে তাদের প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ মকবুলের। শেষমেশ ২০০৪ সালে মাদারীপুরের যুগ্ম জেলা জজ দ্বিতীয় আদালতে একটি দেওয়ানি মামলা দায়ের করেন মকবুল।

মামলাটিতে ২০২৩ সালের ১০ মে বাদী মকবুল ফকিরের পক্ষে রায় দেন আদালত। বিবাদীপক্ষ জেলা জজ আদালত ও পরবর্তীতে উচ্চ আদালতে যান। সেখান থেকেও মকবুলের পক্ষে রায় বহাল থাকে। কিন্তু কোনো অবস্থাতেই মকবুলকে জমি বুঝিয়ে দিচ্ছেন না নুরজাহান। এতে চরম হতাশাগ্রস্ত কাঠমিস্ত্রির পরিবার।

জমি বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য এলাকার গণ্যমান্য লোকজন অভিযুক্তকে বললেও কোনো কর্ণপাত করছেন না। অপরদিকে নুরজাহান বেগমের দাবি, ক্রয়সূত্রে জমির মালিকানা থাকায় ঘর নির্মাণ করে বসবাস করছেন তিনি।

জানা যায়, কাঠমিস্ত্রি মকবুল ফকিরের সাত মেয়ের বিয়ে হওয়ায় শ্বশুরবাড়ি থাকেন তারা। আর একমাত্র ছেলে ইতালি আছেন ১০ বছর ধরে। এই সুযোগে বিবাদীপক্ষ মকবুলকে একা পেয়ে তার জমিতে যেতে দিচ্ছেন না। নিজ জমি দখলে যেতে প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছেন মকবুল।

অভিযুক্ত নুরজাহান বেগম বলেন, ‘আমি ৩০ শতাংশ জমি কিনে ভোগদখলে আছি। মকবুল যে জমি দাবি করে, এটা আমাদের দাগ বা খতিয়ানের অংশ নয়। আমি ল্যান্ড সার্ভে একটি মামলা করেছি। সেই মামলা আদালতে বিচারাধীন। এ ছাড়া ভূমি রেকর্ডের সময় ভুলবশত অন্য নাম অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল। পরে মকবুল মামলা করেছে, সেই মামলায় হেরেছি।

নুরজাহানের আইনজীবীর সহকারী তুষার বলেন, নুরজাহান বেগম একটি ল্যান্ড সার্ভে মামলা করেছেন। সেটি আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। পূর্বে মামলার বিষয় নুরজাহান বেগমই ভালো বলতে পারবেন।

এদিকে মকবুল ফকিরের আইনজীবী অ্যাডভোকেট প্রদীপ সরকার বলেন, মকবুল ফকির মামলা করে রায় পেয়েছেন। সেই মামলায় ডিক্রিও হয়েছে। বিবাদী আদালতের রায় অমান্য করায় মকবুল ফকির নতুন একটি জারি মোকাদ্দমা করেছেন। এই জারি মোকাদ্দমার মাধ্যমেই পরবর্তী কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়া হবে। প্রয়োজনে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করে উচ্ছেদের ব্যবস্থা নিতে আদালতের দ্বারস্থ হবে মকবুল ফকির।

মাদারীপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আল নোমান বলেন, জমিজমা সংক্রান্ত আইনি সিদ্ধান্তের জন্য আদালত থেকে কোনো নির্দেশনা পাওয়া গেলে তা বাস্তবায়ন করা হবে। যেহেতু আদালতে মোকাদ্দমা চলামান, এই মোকাদ্দমার সিদ্ধান্ত দেবেন বিজ্ঞ আদালত। ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে কোনো কার্যক্রম বাস্তবায়নের আদেশ হলে তা পালন করা হবে।