শ্রেণিকক্ষে তালা ঝুলিয়ে দাবি আদায়ের আন্দোলনে যখন শিক্ষকরা; তখন বাহিরে অপেক্ষা করতে দেখা যায় ময়মনসিংহ নগরের শাঁখারীপট্টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থীকে। এ সময় তারা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে না পেরে আক্ষেপ জানান। লাগাতার কর্মবিরতি ও বার্ষিক পরীক্ষা বর্জনের পর তিন দফা দাবি বাস্তবায়নে তৃতীয় দিনে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি পালন করছেন ময়মনসিংহের অধিকাংশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা। গতকাল বুধবার সকাল থেকে ময়মনসিংহের বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে এ কর্মসূচি পালন করতে দেখা যায় শিক্ষকদের।
দুপুরে ময়মনসিংহ নগরের শাঁখারীপট্টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চারজন শিক্ষার্থীকে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে একটি কক্ষের সামনে বসে থাকতে দেখা যায়। দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী উম্মে হাবিবা মেহের জানান, তাদের বাংলা পরীক্ষা ছিল। কিন্তু ম্যাডামদের কর্মবিরতির কারণে পরীক্ষা হচ্ছে না। ক্লাস রুমেও তালা, তাই বসে আছি। মা আসলেই বাসায় যাব।
সায়ন্তী মনি নামে প্রথম শ্রেণির আরেক শিক্ষার্থী জানান, পরীক্ষা না হওয়ায় বসে রয়েছি। ম্যাডামরা ক্লাসে আসছে না। মা আমাকে রেখে বাসায় চলে যাওয়ায় যেতেও পারছি না।
শাঁখারীপট্টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জান্নাতুল নাহার বলেন, আমাদের বেতন স্কেল ১০ম গ্রেডে নির্ধারণ, ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্তির বিষয়ে জটিলতার অবসান, সহকারী শিক্ষক থেকে প্রধান শিক্ষক পদে শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতির দাবিতে বাধ্য হয়ে শাটডাউন কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছি। আমরা শিক্ষার্থীদের কষ্ট দিতে চাই না। সরকার দাবি মেনে নিলেই ক্লাসে ফিরব। নগরের সানকিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খাদিজাতুল কোবরা বলেন, সফল না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবেই। আমরা আমাদের দাবিতে অনড়।
গোহাইলকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সারমিন সুলতানা বলেন, সকালে আমরা প্রত্যেকটি শ্রেণিকক্ষে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছি। ছাত্ররা এসে স্কুল থেকে ঘুরে গেছে। তবে আমাদের দাবির ব্যাপারে সকলেই সহমত।
শাঁখারীপট্টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লিপি মনিকর বলেন, সহকারী শিক্ষকরা কর্মবিরতি পালন করায় একা পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তাই পরীক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। তবে কর্মবিরতি প্রত্যাহার হলে শিক্ষার্থীদের ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া হবে। শিক্ষকদের দাবির বিষয়টি সরকার গুরুত্ব দিয়ে দেখছে জানিয়ে অচিরেই সমাধান হওয়ার আশা ব্যক্ত করে সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবু ইউসুফ বলেন, জেলার ২১৪০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সাড়ে ৫ লাখ শিক্ষার্থী এবং শিক্ষক রয়েছেন ১৩ হাজার। আশা করছি আগামীকাল থেকে সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে পড়বে। প্রাণ ফিরে পাবে প্রতিষ্ঠানগুলো।

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন