মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে সরকারি ইজারাকৃত জলমহাল থেকে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা না পেয়ে ১০ লাখ টাকার মাছ লুটের ঘটনায় যুবদল নেতা মো. আব্দুল আহাদকে প্রধান আসামি করে ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। মামলায় আরও ২০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়।
গত বৃহস্পতিবার দুপুরে মহামায়া মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সম্পাদক ও আলীসারকুলের বাসিন্দা সুজিত সরকার বাদী হয়ে শ্রীমঙ্গল থানায় এ মামলা করেন।
আসামিরা হলেন উপজেলার ভূনবীর ইউনিয়নের আলীশারকুল গ্রামের মৃত মাক্কু মিয়ার ছেলে মো. আব্দুল আহাদ। তিনি ভূনবীর ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক। এ ছাড়া একই গ্রামের আরফান মিয়া (৩৫), হাকিম মিয়া (৫৫), জুয়েল মিয়া (২৫), আব্দুল্লাহ মিয়া (৩৫), বাদে আলীসা গ্রামের সুমন মিয়া (৩২), রুবেল মিয়া (২৭), রিপন মিয়া (২২), ইমন মিয়া (১৮), সানু মিয়া (৩৫), রাজপাড়া গ্রামের তাহির মিয়া (৩৬), বাছিদ মিয়া (৩৫), রুবেল মিয়া (৩২), পাত্রিকুল গ্রামের শাহিন মিয়া (৪৭), এলাইচ মিয়া (৪৫)।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, যুবদল নেতা মো. আব্দুল আহাদ দীর্ঘদিন ধরে জলমহাল ইজারাদার সমিতির কাছে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিলেন। সমিতি চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে গত ৩০ নভেম্বর রাত ১টায় আব্দুল আহাদ মাইকিং করে জলমহালের ইজারা ‘অবৈধ’ বলে প্রচার করেন। পরদিন ১ ডিসেম্বর ৯টায় তার নেতৃত্বে শতাধিক লোক জলমহালে ঢুকে মাছ ধরে নিয়ে যায়। এতে সমিতির প্রায় ১০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করেন। বাধা দিতে গেলে তাদের ওপর হামলার চেষ্টা করা হয়। এ সময় সেখানে উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
সুজিত সরকারের অভিযোগ, আব্দুল আহাদকে টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে আহাদ হাজী মুজিবুর রহমান চৌধুরী তাকে বিলে মাছ মারার নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানায়। সে নিজেকে মৌলভীবাজার-৪ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী ও বিএনপি নেতা হাজী মুজিবুর রহমান চৌধুরীর লোক পরিচয় দিয়ে এলাকায় প্রভাব বিস্তার করেন।
তবে যুবদল নেতা আব্দুল আহাদ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, চাঁদাবাজির বিষয়টি মিথ্যা। আমরা স্থানীয়দের অভিযোগে হাওরের নেটের বেড়া অপসারণ করতে গিয়েছি।
এ বিষয়ে উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন জারু বলেন, অভিযোগ সত্য হলে দলীয়ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক এম এ মুহিত বলেন, দুই দিন আগে এই অভিযোগের বিষয় শুনেছি। সঠিক প্রমাণ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর এটা থানা যুবদল কমিটির দায়িত্ব তারা তদন্ত করে রিপোর্ট দেওয়ার পরে অ্যাকশন নেওয়া হবে। দল এ বিষয়ে কঠোর অবস্থানে আছে। যে দোষ করবে সে শাস্তি পাবে।
ধানের শীষের প্রার্থী বিএনপি নেতা মুজিবুর রহমান চৌধুরী (হাজী মুজিব) বলেন, কেউ যদি চাঁদাবাজি সন্ত্রাসী করে থাকে সে আমার লোক না। আমি ওর সঙ্গে নাই। প্রশাসন দেখবে। সে যদি আমাদের পক্ষ থেকে নেগেটিভ কিছু করে থাকে সে জেলে যাবে।
শ্রীমঙ্গল থানার ওসি মো. আমিনুল ইসলাম জানান, চাঁদাবাজির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে একটি মামলা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি।

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন