ঢাকা রবিবার, ০৬ জুলাই, ২০২৫

তুর্কমেনিস্তানকে উড়িয়ে গ্রুপ সেরা ঋতুপর্নারা

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ৬, ২০২৫, ০২:৩৮ এএম

ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে অনেক এগিয়ে থাকা মিয়ানমার ও বাইরাইনকে হারিয়ে আগেই ২০২৬ অস্ট্রেলিয়া এশিয়া কাপের চূড়ান্ত পর্বের টিকিট নিশ্চিত করার ইতিহাস গড়ে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। গতকাল তুর্কমেনিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচটি ছিল নিয়মরক্ষার। তবে এই ম্যাচেও বড় জয় পেয়েছে বাংলাদেশের মেয়েরা। তারা ৭-০ গোলে হারিয়েছে তুর্কমেনিস্তানকে। এই জয়ে গ্রুপ পর্বে সেরা দল হয়েই এশিয়া কাপে উঠেছে ঋতুপর্ণারা।
বাছাই পর্বে ‘সি’ গ্রুপে নিজেদের শেষ ম্যাচে জয় পাওয়ায় তিন ম্যাচের প্রতিটিতেই জিতল বাংলাদেশ নারী দল। টানা তিন জয়ে ৯ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলে শীর্ষে থেকে বাছাই শেষ করল কোচ জেমস বাটলারের দল। তুর্কমেনিস্তানকে নিয়ে ছেলেখেলা করে বড় জয়ের উচ্ছ্বাসে মাতল বাংলাদেশ। দলের জয়ে জোড়া গোল উপহার দেন শামসুন্নাহার জুনিয়র ও ঋতুপর্ণা চাকমা। একবার করে জালের দেখা পান স্বপ্না রানী, মনিকা চাকমা ও তহুরা খাতুন। এর আগে বাহরাইনকে ৭-০ গোলে উড়িয়ে বাছাই শুরু করেছিল বাংলাদেশ। এরপর শক্তিশালী মিয়ানমারকে ২-১ গোলে হারায় তারা।
ইয়াঙ্গুনের থুউন্না স্টেডিয়ামে শেষটা জয়ে রাঙানোর লক্ষ্যেই মাঠে নামে বাংলাদেশের মেয়েরা। ম্যাচের শুরুতেই দাপট দেখায় তারা। গোল উৎসবের শুরু হয়ে তৃতীয় মিনিটে। তহুরার কাট ব্যাকে বক্সের বাইরে থেকে জোরালো শটে লক্ষ্য ভেদ করেন স্বপ্না। দুই মিনিট পরই ব্যবধান হয় দ্বিগুণ। সতীর্থের ক্রসে আফঈদার হেড গোলকিপার ফেরানোর পর বক্সে জটলার ভেতর থেকে নিখুঁত টোকায় জালে বল জড়ান শামসুন্নাহার জুনিয়র। ১৩ মিনিটে আবারও তুর্কমেনিস্তানের জালে বল। ডান দিক থেকে শামসুন্নাহার সিনিয়রের ক্রস ঝাঁপিয়েও নাগাল পাননি গোলরক্ষক, আলগা বল অনায়াসে জালে পাঠান শামসুন্নাহার জুনিয়র। একটু পরই বক্সের ওপরে বল পেয়ে প্রথম ছোঁয়াল একটু এগিয়ে দৃষ্টিনন্দন শটে স্কোরলাইন ৪-০ করেন মনিকা। ১৭ মিনিটে বক্সের বেশ বাইরে এক ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে শট নেন ঋতুপর্ণা। বলের লাইনে থাকা গোলরক্ষকের হাত ফসকে বল জড়ায় জালে। এই গোলের পরই আইশা আমানবেরদুয়েভাকে তুলে পোস্ট আগলানোর দায়িত্ব এলনুরা মাকসুয়েতোভাকে দেন তুর্কমেনিস্তান কোচ। কিন্তু এসেই গোল হজম করেন এলনুরা। আক্রমণ ফিরিয়ে দেওয়ার সুযোগ পেলেও ঠিকঠাক শট নিতে পারেননি তিনি। ছুটে গিয়ে বলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আড়াআড়ি ক্রস বাড়ান ঋতুপর্ণা। গোলমুখ থেকে দরকারি টোকা দেন তহুরা। ৩৫ মিনিটে ঋতুপর্ণার শট ক্রসবারের ওপরের দিকে লেগে বেরিয়ে যায়। পাঁচ মিনিট পর বক্সের ঠিক ওপর থেকে এই ফরোয়ার্ডের বাঁ পায়ের শট বাঁক খেয়ে গোলকিপারের গ্লাভস ছুঁয়ে জালে জড়ায়। প্রথমার্ধেই জয় অনেকটা নিশ্চিত হয়ে যাওয়ায় দ্বিতীয়ার্ধে গোলের জন্য মরিয়া ছিল না দল। তরুণদের সুযোগ দিতে তিনটি পরিবর্তন আনেন বাটলার। রুপনা চাকমা, ঋতুপর্ণা ও শিউলি আজিমকে তুলে স্বপ্না রানী মণ্ডল, উমহেলা মারমা ও হালিমা আক্তারকে নামান। এর মধ্যেও সুযোগ আসতে থাকে মাঝেমধ্যে। ৫৭তম মিনিটে বুক দিয়ে বল রিসিভ করে বক্সে ভালো জায়গায় থেকেও শট নিতে পারেননি শামসুন্নাহার জুনিয়র। একটু পর মনিকার দূরপাল্লার শট গ্লাভস গলে বেরিয়ে যাওয়ার পর দ্বিতীয় প্রচেষ্টায় আটকান তুর্কমেনিস্তান গোলকিপার। ৬১তম মিনিটে স্বপ্নাকে তুলে শাহেদা আক্তার রিপাকে নামান বাটলার। এরপর শামসুন্নাহার জুনিয়রের বদলি নামেন সুলতানা। ৮০ ও ৮২তম মিনিটে মারিয়া মান্দার দুটি শট আটকান গোলকিপার। বাকিটা সময়ে ব্যবধান বাড়াতে না পারলেও বাংলাদেশের জয়ের আনন্দে ভাটা পড়েনি একটুও।