গানের ব্যান্ড মানেই কি কেবল মঞ্চে সুরের ঝংকার? কেবল কণ্ঠের প্রতিযোগিতা আর করতালির বাহবা? না, কখনো কখনো একটি ব্যান্ড হয়ে ওঠে সমাজের নিস্তব্ধ কোণে আলো ফেলার মতো এক মানবিক নাম, এক বন্ধুত্বের যাত্রা, এক সুরের ভেতর জেগে ওঠা আত্মার গল্প। এমনই একটি গল্পের নাম ‘দ্য মর্ফিন ইন্ডিয়া’।
২০১৩ সালের ২ জুলাই যাত্রা শুরু করেছিল এই ব্যান্ডটি। তখনকার কিছু তরুণ শুধু ভালোবাসার তাড়নায় এক হয়েছিলেন। গান ছিল তাদের আশ্রয়, বলিউডের জনপ্রিয় সব কভার গান দিয়ে তারা ধীরে ধীরে গড়ে তুলেছিলেন নিজেদের একটি স্বতন্ত্র শ্রোতাবলয়। পরিচিত সুরকে নতুন প্রাণ দিয়ে তারা পৌঁছে গেছেন নানা শহর, নানা মঞ্চে।
কিন্তু ‘দ্য মর্ফিন ইন্ডিয়া’র গল্প এখানেই শেষ নয়, বরং এই গল্প এবার বাঁক নিল নতুন স্বর, নতুন চিন্তার দিকে। ২০২৫ সালের ২ জুলাই ‘দ্য মর্ফিন ইন্ডিয়া’ পেরিয়ে গেল তাদের ১২ বছরের পথ। এই বিশেষ দিনটিকে কেবল কেক কাটা আর কনসার্টেই সীমাবদ্ধ না রেখে তারা হাতে নিল এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ।
তারা পাশে দাঁড়াল সমাজের সেই মানুষদের, যাদের দিকে খুব কম মানুষই ফিরে তাকায়, প্রান্তিক শিশু-কিশোর, ভবঘুরে মানুষ, অসহায় নারী, বয়স্ক, ও বিশেষভাবে সক্ষম মানুষের জন্য তারা আয়োজন করেছিল খাবারের ব্যবস্থা। ব্যান্ডের সদস্যদের মতে, ‘এটা আমাদের ক্ষুদ্রতম শ্রদ্ধা।
জীবনকে, মানুষকে, আর এই পথচলাকে।’ তবে শুধু মানবিকতায় থেমে নেই তারা। ১২ বছরের এই মাইলফলক পেরিয়ে এবার তারা এগোতে চায় নিজেদের মৌলিক সংগীতের দিকে। খুব শিগগিরই তারা প্রকাশ করতে যাচ্ছে তাদের প্রথম হিন্দি মৌলিক গান “বাকি হ্যায়”।
এটি শুধু একটি গান নয়, বরং এটি তাদের নতুন অভিযাত্রার প্রতীক। গানটির সঙ্গে তৈরি হচ্ছে একটি মিউজিক ভিডিও। এ ছাড়াও ভবিষ্যতে আরও মৌলিক হিন্দি গানের কাজ চলছে, যার মাধ্যমে তারা নিজেদের কণ্ঠে, নিজেদের ভাষায় গড়ে তুলতে চায় শ্রোতার হৃদয়ে এক নতুন স্থান। এই যাত্রার এক নিখুঁত উদযাপন হিসেবে আগামী ২ আগস্ট তারা আয়োজন করতে যাচ্ছে একটি বিশেষ কনসার্ট। যেখানে থাকবে তাদের জনপ্রিয় কভার গানগুলোর পরিবেশনা, পাশাপাশি থাকবে “বাকি হ্যায়”-এর মতো মৌলিক গানের প্রথম প্রকাশও।
এ বিষয়ে দৈনিক রূপালী বাংলাদেশের সঙ্গে কথা বলেছেন ব্যান্ড দ্য মর্ফিন ইন্ডিয়া।
তারা বলেন, ‘আমরা কখনো বড় স্বপ্ন দেখিনি। কিন্তু এত বছর একসঙ্গে পথ চলতে পেরেছি, এটাই আমাদের কাছে স্বপ্নের মতো। কভার গান দিয়ে শুরু করলেও এখন চাই, আমাদের নিজেদের গান দিয়েই যেন মানুষের মনে জায়গা করে নিতে পারি।’