ঢাকায় চলমান অনূর্ধ্ব-২০ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে গতকাল এক অদ্ভুত ঘটনা ঘটল। এক ম্যাচ হলো দুই মাঠে! অর্থাৎ, খেলার প্রথমার্ধ বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় হয়েছে। আর ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধের খেলা হয়েছে তাদের প্র্যাকটিস মাঠে। ভেন্যু বদলের এমন নাটকীয় ম্যাচে জিতল বাংলাদেশই। তারা ৪-১ গোলে হারাল ভুটানকে। শান্তি মার্ডি হ্যাটট্রিক করেছেন। আরেকটি গোল পান মুনকি আক্তার। এই জয়ে তিন ম্যাচ খেলা বাংলাদেশের পয়েন্ট হলো সর্বোচ্চ ৯। ১৭ জুলাই নিজেদের চতুর্থ ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ভুটানই। বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় ম্যাচটি হওয়ার কথা রয়েছে।
বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় গতকাল সকাল থেকেই বৃষ্টি হানা দেয়। তবে বৃষ্টির মধ্যেই ফ্লাড লাইট জ্বালিয়ে শুরু হয় বাংলাদেশ ও ভুটানের ম্যাচ। ভারী বর্ষণে সারা মাঠ কাদাময় ছিল। বল পানির মধ্যে আটকে যায়। কোনো দলের খেলোয়াড়রাই তাদের নিজেদের স্বাভাবিক ছন্দে খেলতে পারেনি। মাঠেই লুটিয়ে পড়ে যান অনেকে। শট নিতে গিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেননি। এ ম্যাচে কোচ পিটার বাটলার বেঞ্চের ফুটবলারদের পরখ করেছেন। নেপালের বিপক্ষে ম্যাচের ফুটবলারদের মধ্যে একাদশে রাখে মাত্র দুজনÑ বন্যা খাতুন ও শান্তি মার্ডি। গোলকিপার পজিশনে স্বর্ণা রাণী মন্ডলের পরিবর্তে দেখা মিলল মিলি আক্তারের। অধিনায়ক আফঈদা খন্দকারের বদলে সুরমা জান্নাতের হাতে দেখা গেল আর্ম ব্যান্ড। লাল কার্ডের কারণে এমনিতেই দলে নেই মোসাম্মৎ সাগরিকা। খেলার শুরুতেই তৃষ্ণা রাণীর শট আটকে যায় কাদায়। এরপর ৭ মিনিটে শান্তি মার্ডি তিনবারের চেষ্টায় গোল দিয়েছেন। ভেজা মাঠে বল আটকে যাচ্ছিল বক্সের মধ্যে। প্রথমবার ভুটানের গোলকিপার পেমা ইয়াংজম শান্তির শট আটকে দেন। পরের দুবার চেষ্টা করে অবশেষে গোল পান শান্তি। ম্যাচের বাকি সময়ে আসলে কাদাময় মাঠে দুই দলের ফুটবলাররা শুধু বলের পেছনে দৌড়েছেন। কিন্তু স্বাভাবিক খেলাটা ঠিকমতো খেলতে পারেননি। এরপরও বাংলাদেশই বেশি আক্রমণ করেছে। বিরতির খানিক আগে বাম প্রান্ত দিয়ে শান্তি মার্ডি কয়েকবার আক্রমণ শাণান। সেই বলে ঠিকমতো কানেক্ট করতে পারেননি বন্যা আক্তার ও রূপা আক্তার।
তিন ঘণ্টা পর কিংসের অনুশীলন মাঠে বিরতির পর শুরু হওয়া ম্যাচে স্বাগতিকেরা দাপট দেখিয়েছে। তবে শুরুতে গোল শোধ দিয়ে ভুটান ম্যাচে ফেরার ইঙ্গিত দেয়। ৫৩ মিনিটে সমতায় ফেরে ভুটান। তেলদেন আগুয়ান গোলকিপারকে কাটিয়ে শট নিলেও তা ঠিকঠাক হয়নি। ওয়াংমো বল পেয়ে দারুণ প্লেসিং শটে গোল করেন। তবে এরপর বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়িয়ে ৩ গোল আদায় করে নেয়। চার মিনিট পর কর্নার থেকে শান্তি মার্ডি দ্বিতীয় গোল করে বাংলাদেশকে আবারও এগিয়ে নেন। ৭৬ মিনিটে বদলি মুনকি আক্তার স্বাগতিকদের তৃতীয় গোল উপহার দেন। একক প্রচেষ্টায় বল নিয়ে বাম দিক দিয়ে ঢুকে মুনকি গোলকিপারের পাশ দিয়ে নিখুঁত ফিনিশ করেন। ৭৯ মিনিটে শান্তি মার্ডি হ্যাটট্রিক করেন। উমেলহার ক্রসে শান্তি বক্সে ঢুকে জোরালো শটে জাল কাঁপান। বাংলাদেশ ৪-১ গোলে জয় নিশ্চিত করে।
আপনার মতামত লিখুন :