ওভাল টেস্টে জয়ের জন্য ভারতের চাই ৪ উইকেট আর ইংল্যান্ডের দরকার ৩৫ রান। এ সমীকরণ সামনে রেখে রোমাঞ্চ ছড়িয়ে ৬ রানের অবিশ^াস্য জয় তুলে নেয় ভারত। নিজেদের টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসে সবচেয়ে কম রানে জিতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের সিরিজ ২-২ ব্যবধানে ড্র করল ভারতীয়রা। অ্যান্ডারসন-টেন্ডুলকার ট্রফিকে দুদল দুটি করে ম্যাচ জিতেছে। একটি ম্যাচ ড্র হয়।
শেষ দিন ভাঙা কাঁধ নিয়ে এক হাতে ব্যাটিংয়ে নামা ক্রিস ওকসের সঙ্গে শেষ জুটিতে চেষ্টা করেন অ্যাটকিনসন, কিন্তু অল্পের জন্য পারলেন তিনি। ভারতের অবিশ্বাস্য এই জয়ের নায়ক সিরাজ। শেষ দিনে তিনটিসহ ইনিংসে তার শিকার ৫ উইকেট। ম্যাচে ৯ উইকেট নিয়ে ‘ম্যান অব দ্য ম্যাচ’ তিনিই। সিরাজ নায়ক হলে পার্শ্বনায়ক আরেক পেসার প্রসিদ্ধ কৃষ্ণা। দুই ইনিংসেই চারটি করে ম্যাচে তার প্রাপ্তি ৮ উইকেট। ইংল্যান্ডের জন্য শেষ দিনের শুরুটা ছিল আশা জাগানিয়া। দিনের প্রথম বলে প্রাসিধকে পুল করে চার মারেন জেমি ওভারটন। পরের বল তার ব্যাটের কানায় লেগে বাউন্ডারি হয়ে যায় উইকেটের পেছনে দিয়ে। পরের ওভারে জেমি স্মিথকে কট বিহাইন্ড করে ফেরান সিরাজ। পরের বলে অল্পের জন্য আরেকটি উইকেট পাননি তিনি। অ্যাটকিনসনের ব্যাট ছুঁয়ে যাওয়া বল অল্পের জন্য স্লিপে লোকেশ রাহুলের মুঠোয় যায়নি। সিরাজ নিজের পরের ওভারে এলবিডব্লিউ করে ফেরান ওভারটনকেও। এরপর প্রসিদ্ধের বলে জশ টংকে এলবিডব্লিউ দিয়েছিলেন আম্পায়ার আহসান রাজা। তবে রিভিউ নিয়ে বাঁচেন টং। রিপ্লেতে দেখা যায়, বল স্টাম্প মিস করে যেত। নিজের পরের ওভারে এসেই টংকে বোল্ড করে দেন প্রসিদ্ধ। তখনো ইংল্যান্ডের দরকার ১৭ রান। এরপরই সিøংয়ে ঝুলিয়ে রাখা বাঁ হাত সোয়েটারের ভেতরে ঢেকে রেখে, আরেক হাতে ব্যাট নিয়ে ওকস ২২ গজে নামেন দর্শকদের তুমুল করতালির মাঝে। সিরাজকে ছক্কায় উড়িয়ে ব্যবধান কমিয়ে আনেন অ্যাটকিনসন। ওভারের শেষ বলে ‘বাই’ থেকে রান নিয়ে স্ট্রাইকও ধরে রাখেন তিনি। পরের ওভারে প্রথম বলে দুই রান নেওয়ার পর শেষ বলে এক রান নিয়ে ফের একই কাজ করেন তিনি। এরপরই শেষের সেই মুহূর্ত। পরের ওভারে প্রথম বলে অ্যাটকিনসনকে (২৯ বলে ১৭) বোল্ড করে রোমাঞ্চকর ম্যাচের ইতি টেনে দেন সিরাজ। ওকসকে কোনো বল খেলতে হয়নি। অথচ আগের দিন একসময় অনায়াস জয়ের পথে ছিল ইংল্যান্ড। সিরাজের সেই ব্যর্থতায় ১৯ রানে জীবন পেয়ে হ্যারি ব্রুকের ১১১ রানের বিধ্বংসী ইনিংসের পর জো রুটের আরেকটি সেঞ্চুরিতে, ৬ উইকেট হাতে রেখে জয় থেকে ৪২ রানে দূরে ছিল ইংলিশরা। এরপরই নিজের টানা দুই ওভারে জ্যাকব বেথেল ও রুটকে ফিরিয়ে ভারতকে লড়াইয়ে ফেরান প্রসিদ্ধ। আলোকস্বল্পতা ও বৃষ্টির কারণে ম্যাচ গড়ায় শেষ দিনে। সেখানে স্মরণীয় এক জয়ের গল্প লিখল শুবমান গিলের নেতৃত্বাধীন ভারত।
আপনার মতামত লিখুন :