সোমবার, ০২ জুন, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


সিলেট ব্যুরো

প্রকাশিত: এপ্রিল ২৪, ২০২৪, ০২:৫২ এএম

গ্যাস সংকটে উৎপাদন বন্ধ শাহজালাল সার কারখানায়, বাড়ছে দেনা

সিলেট ব্যুরো

প্রকাশিত: এপ্রিল ২৪, ২০২৪, ০২:৫২ এএম

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

সংকট গ্যাসের। তাই বন্ধ সার উৎপাদন। এক মাসেরও বেশি সময় ধরে বসে আছে শাহজালাল সার কারখানা। ফলে এ মুহুর্তে বেশ বিপাকে আছে প্রতিষ্ঠানটি। একই সাথে অনিশ্চয়তার মুখে ইউরিয়া সার উৎপাদন। গত এক বছরে এ নিয়ে দু’দফা উৎপাদনের বাইরে গেলো কারখানাটি।
এদিকে কবে নাগাদ কারখানাটি উৎপাদনে ফিরবে তা জানেন না প্রতিষ্ঠানের কর্তারা। আধুনিক ওই সারকারখানা দীর্ঘদিন এভাবে বন্ধ থাকলে এর স্বয়ংক্রিয় মেশিনগুলোতে ত্রুটি দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কাও রয়েছে।

কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক জিয়াবুল হোসেন জানান, সারকারখানা শুধুমাত্র গ্যাস সংকটে বন্ধ আছে। গ্যাস পেলেই পুনরায় কারখানা চালু করা হবে। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগোযোগ করা হচ্ছে। সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার শাহজালাল ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড-এসএফসিএল দেশের বৃহৎ ইউরিয়া সার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান। ইউরিয়া সার উৎপাদনের অন্যতম কাঁচামাল প্রাকৃতিক গ্যাস।

সূত্র জানায়, বাপেক্সের নিয়ন্ত্রণাধীন জালালাবাদ গ্যাস জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ করে দিলে গত ১৩ই মার্চ বন্ধ হয়ে যায় শাহজালাল সারাকারখানার সার উৎপাদন। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় ইতিমধ্যে ১২৫ কোটি টাকা মূল্যের প্রায় ৫০ হাজার টন সার উৎপাদন ব্যাহত হয়। এভাবে বন্ধ রাখার ফলে অর্থবছরে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে না। চলতি অর্থবছর শাহজালালের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ ছিল ৩ লাখ ৮০ হাজার টন। মার্চ পর্যন্ত এ কারখানায় উৎপাদন হয়েছে প্রায় ২ লাখ ৪০ হাজার টন। বিদ্যমান পরিস্থিতি দীর্ঘায়িত হলে ২ মাস পর আগত নতুন অর্থবছরেও এর বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা সংশ্লিষ্টদের।

গ্যাস সরবরাহ বন্ধ প্রসঙ্গে বাপেক্সের পরিচালক (অপারেশন) ইঞ্জিনিয়ার কামরুজ্জামান জানান, শাহজালাল সারকারখানার জন্য বর্তমানে গ্যাস সরবরাহের বরাদ্দ নেই, তাই বন্ধ করা হয়েছে। মন্ত্রণালয় বরাদ্দ দিলে গ্যাস সরবরাহ পুনরায় দেয়া হবে। শাহজালাল সারকারখানার কাছে জালালাবাদ গ্যাসের বিপুল বকেয়া পাওনা জমা হয়েছে। সরকার গ্যাসের মূল্য পুনঃনির্ধারণ করে প্রতি ঘনমিটার ১৬ টাকা করলেও শাহজালাল সারকারখানা আগের দর ঘনমিটার প্রতি ৪ টাকা করে পরিশোধ করছে। ফলে বিপুল পাওনা জমা পড়েছে শাহজালাল ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেডের কাছে। গ্যাস সরবরাহের ব্যাপারে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে তিনি জানান।

এ প্রসঙ্গে কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক জিয়াবুল হোসেন বলেন, বিষযটি সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের সিদ্ধান্তের ব্যাপার। গ্যাসের মূল্য ইউনিট প্রতি ৪ টাকা থেকে ১৬ টাকায় করা হয়েছে। শাহজালাল সারকারখানায় বর্তমানে প্রতিটন সার উৎপাদনে খরছ হয় প্রায় ৩৬ হাজার টাকা। কিন্তু সরকার নির্ধারিত প্রতিটন সারের বিক্রয় মূল্য ২৫ হাজার টাকা। প্রতি টনে প্রায় ১১ হাজার টাকা ঘাটতি। অন্তত এই ঘাটতি কীভাবে পুষিয়ে নেয়া যায় সেই চেষ্টায় শিল্প, কৃষি এবং অর্থ মন্ত্রণালয় কাজ করে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, গ্যাসের মূল্য ইউনিট প্রতি ৪ টাকা দর দিয়ে উল্লেখিত ঘাটতি, এর বেশি দিলে সারকারখানার ফান্ডে কোনো টাকাই থাকবে না। সারকারখানা পুনরায় চালুর ব্যাপারে এখন পর্যন্ত তার কাছে কোনো তথ্য আসেনি বলেও তিনি জানান। শাহজালাল সারকারখানার জিএম
(একাউন্ট) মো: আব্দুল বারিক জানান, প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের মূল্য ১৬ টাকা ধার্য্য করা হয়েছে। জুন ২০২২ থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত জালালাবাদ গ্যাস শাহজালাল ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেডের কাছে বকেয়া পাওনা পাবে ৭৭৯ কোটি টাকা। শাহজালাল সারকারখানার
উৎপাদনের সফলতা নিয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, নির্মাণের পর এ পর্যন্ত শাহজালাল ফার্টিলাইজার কোম্পানি সরকারের কোষাগারে সার বিক্রি করে অর্থ জমা দিয়েছে ৫৫৫ কোটি টাকা।

সারকারখানার উৎপাদন বিভাগ সুত্র জানায়, বর্তমানে দৈনিক ১৩-১৪শ’ টন ইউরিয়া উৎপাদন হয় শাহজালাল সারকারখানায়। নির্মাণের পর ২০১৬ সালে শাহজালাল সারাকারখানা পুরোদমে উৎপাদনে যায়। যাত্রার পর থেকে এ সারকারখানায় নিরবচ্ছিন্ন উৎপাদন দিয়ে আসছিল।

জানা যায়, চলতি অর্থবছরের অক্টোবরে শাহজালাল সারকারখানার বিদ্যুতের সাব স্টেশনে গোলযোগ থেকে সৃষ্ট ফ্লাশিংয়ে কারখানার পাওয়ার হাউজের বয়লার শাটডাউন হয়ে পুরো সারকারখানার সবকটি প্ল্যান্ট বন্ধ হয়ে যায়। ওই সময় একটানা ৩৩দিন বন্ধ ছিল সারকারখানার উৎপাদন।

সূত্র মতে, বাংলাদেশে বিদ্যমান সারকারখানাগুলো উৎপাদনোক্ষম রাখা দরকার, কারণ দেশে এক টন ইউরিয়া সার উৎপাদনে খরচ হয় ৩৫-৩৬ হাজার টাকা, অপরদিকে বিদেশ থেকে ইউরিয়া আমদানি করতে প্রতি টনের খরছ হয় ৬০-৬৫ হাজার টাকা।

Link copied!