এক নারীকে দিয়ে ফাঁদ পেতে পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতে নেওয়া হয় আলী আকবর ওরফে ঢাকাইয়া আকবরকে। আর সেখানে তাকে ব্রাশ ফায়ার করে দুর্বৃত্তরা। চিকিৎসাধীন অবস্থায় আকবরের মৃত্যু হয়। ঘটনার ছয়দিন পরও সেই নারীর পরিচয় বা সন্ধান পায়নি পুলিশ। যদিও ওই ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শীর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদ বাহিনী গত ১০ মাসে প্রকাশ্যে গুলি ও ব্রাশ ফায়ার করে ৬ জনকে হত্যা করেছে। ছোট সাজ্জাদ স্ত্রীসহ জেলে বন্দি থাকলেও জেলের বাইরে তার বাহিনীর দাপট থামেনি। তাদের কোনোভাবেই দমাতে পারছে না আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
এদিকে, চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদকে ধরিয়ে দেওয়ায় প্রতিনিয়ত হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছে এক নারীকে। ওই নারী উদ্যোক্তা পরিবার নিয়ে আত্মগোপনে রয়েছেন। তিনি বাদী হয়ে পাঁচলাইশ থানায় মামলা করেছেন। মামলায় ছোট সাজ্জাদসহ ১১ জনকে আসামি করা হয়েছে।
১০ মাসে যত খুন ও অপকর্ম
গত বছরের ২৯ আগস্ট নগরের বায়েজিদ বোস্তামি থানার অক্সিজেন কুয়াইশ সড়কে প্রকাশ্যে গুলি করে মাসুদ কায়সার ও মোহাম্মদ আনিস নামে দুজনকে হত্যা করে সাজ্জাদ ও তার লোকজন।
গত বছরের ২১ অক্টোবর চান্দগাঁও থানার অদুরপাড়ায় মাইক্রোবাসে এসে দিবালোকে গুলি করে আফতাব উদ্দিন তাহসীন নামে এক ব্যবসায়ীকে হত্যা করে সাজ্জাদ আবারও আলোচনায় আসেন।
গত ৫ ডিসেম্বর তাকে গ্রেপ্তার করতে গেলে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন সাজ্জাদ। এতে পুলিশ সদস্যসহ চারজন আহত হন।
২৮ জানুয়ারি ফেসবুক লাইভে এসে বায়েজিদ বোস্তামী থানার ওসিকে প্রকাশ্য পেটানোর হুমকি দেন। এরপর ৩০ জানুয়ারি তাকে ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণা করে সিএমপি।
১৫ মার্চ ঢাকার বসুন্ধরা শপিং সেন্টারে স্ত্রী তামান্নাকে নিয়ে শপিং করার সময় তাদের গ্রেপ্তার করে সিএমপি ও ডিএমপি পুলিশ। সাজ্জাদকে গ্রেপ্তারের ১৫ দিনের মধ্যে তার প্রতিদ্বন্দ্বী শীর্ষ সন্ত্রাসী সরোয়ার হোসেন বাবলাকে গুলি করা হয়।
৩০ মার্চ ভোর রাতে গুলিতে নিহত হন বখতিয়ার উদ্দিন মানিক ও মো. আবদুল্লাহ। আহত হন আরও দুজন। তবে প্রাইভেটকারে অক্ষত থাকেন সরোয়ার হোসেন বাবলা।
এর আগে, সাজ্জাদকে গ্রেপ্তারের পর ভিডিও বার্তায় প্রতিশোধ নেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন স্ত্রী তামান্না আক্তার। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন গ্রেপ্তার হলে তারা সাজ্জাদ-তামান্নার পরিকল্পনায় জোড়া খুন ঘটানো হয়েছে বলে দাবি করেন।
সিএমপির ডিসি (বন্দর বিভাগ) মোহাম্মদ বদরুল আলম মোল্লা বলেন, ঢাকাইয়া আকবরকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তদন্তাধীন বিষয় নিয়ে কিছু বলা সমীচীন হবে না।