সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় নিখোঁজের ছয় দিন পর রাশিদুল ইসলাম নামে এক যুবকের গলিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটার দিকে উপজেলার বাঙ্গালা ইউনিয়নের ভয়নগর গ্রামের একটি পরিত্যক্ত সেপটিক ট্যাংক থেকে লাশটি উদ্ধার হয়।
রাশিদুল ইসলাম (৩৫) ভয়নগর গ্রামের আবু সাঈদের ছেলে। তার পরিবার জানায়, গত শুক্রবার রাত আটটার দিকে খাবার খেয়ে ঘরে ছিলেন রাশিদুল।
এ সময় তার মোবাইল ফোনে একটি কল এলে তিনি ধামরাইকান্দি বাজারে যাচ্ছেন বলে বাড়ি থেকে বের হন। এরপর তিনি আর ফেরেননি। আত্মীয়স্বজনদের বাড়িতে খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান মেলেনি।
আজ দুপুরে এক প্রতিবেশীর বাড়ির পেছনের পরিত্যক্ত সেপটিক ট্যাংক থেকে দুর্গন্ধ ছড়াতে শুরু করলে স্থানীয়দের সন্দেহ হয়। বিষয়টি জানাজানি হলে তারা গিয়ে ট্যাংকের ভেতরে গলিত অবস্থায় রাশিদুলের লাশ দেখতে পান।
পরে পুলিশ গিয়ে তা উদ্ধার করে সিরাজগঞ্জ শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসীর মধ্যে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
নিহত রাশিদুল ইসলামের বাবা আবু সাঈদ জানান, তার ছেলে একজন সৎ ও ভালো মানুষ হিসেবে এলাকায় পরিচিত ছিলেন। কারও সঙ্গে তার কোনো বিরোধ ছিল না বলে তিনি জানান। কারা, কী কারণে এমন ভয়াবহভাবে তাকে খুন করল, তা বুঝে উঠতে পারছেন না তারা। রাশিদুলের একটি ছয় বছরের মেয়ে রাফিয়া ও পাঁচ মাস বয়সী ছেলে ইউসুফ রয়েছে।
রাশিদুলের স্ত্রী সুমাইয়া খাতুন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, একটি ফোন কল সবকিছু উল্টে দিল। তার স্বামীকে ডেকে নিয়ে যেভাবে হ'ত্যা করে বস্তায় ভরে টয়লেটের ট্যাংকে ফেলে দেওয়া হয়েছে, তা তিনি কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না। এখন দুই সন্তানকে নিয়ে কীভাবে জীবন চলবে, সে দুশ্চিন্তায় কাতর তিনি।
স্থানীয় ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আশিকুর রহমান রিপন বলেন, রাশিদুল ছিলেন অত্যন্ত ভদ্র ও শান্ত স্বভাবের মানুষ। তার নির্মম হত্যা এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। তিনি জানান, স্থানীয় বাসিন্দারা দ্রুত জড়িতদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছেন।
উল্লাপাড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাকিবুল হাসান জানান, ‘লাশটিতে অতিমাত্রায় পচন ধরায় শরীরের কোথাও আঘাতের চিহ্ন আছে কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ ও ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত চলছে।’