আকস্মিকভাবে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে বরিশালসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চলের নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অস্বাভাবিক জোয়ারে উপকূলীয় নদীতীরবর্তী জনপদ পানিতে তলিয়ে গেছে।
শুক্রবার (২৫ জুলাই) বিকেল চারটার কিছু পর কীর্তনখোলা নদীর জোয়ারের পানিতে সদর রোডসহ কয়েকটি প্রধান সড়ক জলমগ্ন হয়ে পড়ে। এতে নাগরিক জীবনে দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে, বিশেষ করে শহরের নিম্নাঞ্চলের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।
জানা গেছে, কীর্তনখোলা নদীর জোয়ারের পানি শহরের নিম্নাঞ্চল—পলাশপুর, মোহাম্মদপুর, রসুলপুর, সাগরদি ধানগবেষণা এলাকা—হাঁটুসমান জলাবদ্ধতা তৈরি করেছে। পাশাপাশি ভাটিখানাসহ শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কেও পানি ঢুকে পড়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিকেল সাড়ে তিনটার পরপরই নদীতে পানি বাড়তে শুরু করে এবং ঘণ্টাখানেকের মাথায় অর্থাৎ সাড়ে চারটার দিকে তা বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।
শুধু কীর্তনখোলা নয়, মেঘনা, তেতুলিয়াসহ দক্ষিণাঞ্চলের সব নদীর পানি বিকেল ৩টার পর থেকে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে ভাটা শুরু হলে নগরীর বাসাবাড়ি থেকে পানি নেমে যাবে বলে জানিয়েছেন বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-প্রকৌশলী তাইজুল ইসলাম।
নিম্নচাপের প্রভাবে বৃহস্পতিবার রাত থেকেই বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলে বৃষ্টি শুরু হয়। অনুরূপ বৃষ্টিপাত শুক্রবার সারাদিনও অব্যাহত থাকে। তবে বেলা ১টার পর দমকা হাওয়ার সঙ্গে বৃষ্টির তীব্রতা বাড়ে।

বরিশাল আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, শুক্রবার বিকেল ৩টায় সর্বোচ্চ ঘণ্টায় ১০ কিলোমিটার গতিতে বাতাস প্রবাহিত হয়, যা ছিল দিনের সর্বোচ্চ। এ সময় পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় ২১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
এই তথ্য নিশ্চিত করেন বরিশাল আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র পর্যবেক্ষক মিলন হাওলাদার। তিনি রূপালী বাংলাদেশকে জানান, আগামী ২৪ ঘণ্টায় বরিশাল বিভাগের সর্বত্র ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।

কীর্তনখোলাসহ দক্ষিণাঞ্চলের নদ-নদীতে অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধি পেলেও বরিশাল থেকে নৌযান চলাচলের ওপর কোনো নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়নি। এ তথ্য নিশ্চিত করেন বরিশাল বন্দর কর্মকর্তা শেখ সেলিম রেজা।
তিনি জানান, নদীতে পানি অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে, তবে কোনো ধরনের লঞ্চ চলাচলে নিষেধাজ্ঞা না থাকলেও স্পিডবোট চলাচল বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই বন্ধ রয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :