ফরিদপুর সদর উপজেলার শিবরামপুর এলাকায় একটি বেসরকারি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে সরকারি খাল ও সেতু-কালভার্ট দখলের অভিযোগ উঠেছে। এতে পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে চারটি বড় ফসলি মাঠে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন আশপাশের গ্রামের অন্তত ৮ হাজার কৃষক। মাঠের প্রায় ২ হাজার বিঘা জমিতে আমন ধানসহ অন্যান্য ফসল তলিয়ে গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ঢাকা-খুলনা মহাসড়কসংলগ্ন এলাকায় মামুন গ্রুপ নামের একটি প্রতিষ্ঠান কয়েক একর জায়গাজুড়ে শিল্প কার্যক্রম পরিচালনা করছে। ওই প্রতিষ্ঠানের ক্যানটিন ও গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য সরকারি খালের এক পাশ ভরাট করা হয়েছে। পাশাপাশি সাহাপাড়ার একটি কালভার্টের পাশেও বাঁধ দেওয়া হয়েছে। এতে পানি নামার স্বাভাবিক পথ বাধাগ্রস্ত হয়ে ঈশান গোপালপুর ও মাচ্চর ইউনিয়নের বাঁশগাড়ি খাদ, টেংরামারা বিল, আধারমারা বিল ও তলাপত্তর বিলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় কৃষকেরা জানান, ‘এসব মাঠে ধান, পাট, তিলসহ বিভিন্ন ফসলের চাষ হতো। এখন বছরের পর বছর জলাবদ্ধতার কারণে ফসল উৎপাদন প্রায় বন্ধ হওয়ার পথে।’
রসুলপুর গ্রামের বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘এই মাঠগুলো ছিল কৃষিবান্ধব। মামুন গ্রুপ খাল দখল করার পর থেকে প্রতি বছর ক্ষতির মুখে পড়ছি। ধানের চারা ডুবে গেছে, লাগানোর অবস্থা নেই। আগে খাল দিয়ে পানি কুমার নদে চলে যেত, এখন তা বন্ধ। প্রতিবছর ১০ হাজার মণ ধানের উৎপাদন কমে যাচ্ছে।’
একই অভিযোগ করেন সাহাপাড়ার কৃষক আক্তার হোসেন সিদ্দিক। তিনি বলেন, ‘বিষয়টি মামুন গ্রুপকে জানানো হলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এ বছর বেশি বৃষ্টির কারণে ক্ষতি অনেক বেশি।’
এ অবস্থায় গত রোববার ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সামনে জেলা কৃষক সমিতির উদ্যোগে মানববন্ধন করেন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা। তারা খাল পুনরুদ্ধার, জলাবদ্ধতা নিরসন এবং ক্ষতিপূরণ দাবিতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
অভিযোগ রয়েছে, প্রতিষ্ঠানটির মালিক প্রভাব খাটিয়ে দিনের পর দিন কৃষিজমির ক্ষতি করে যাচ্ছেন। প্রতিবাদ করলে কৃষকদের হুমকি-ধমকিও দেওয়া হয়।
অভিযোগ পাওয়ার পর সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. শফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইসরাত জাহান বলেন,
‘বিষয়টি জানার পরপরই তদন্তে কর্মকর্তাকে পাঠানো হয়েছে। সরকারি খাল দখলের প্রমাণ মিললে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জলাবদ্ধতা নিরসনের বিষয়েও পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।’
এ বিষয়ে মামুন গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শাহিন সাহাবুদ্দিন বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন দেশের বাইরে আছি, বিষয়টি জানি না। তবে পানি নিষ্কাশনের জন্য প্রায় ১ কোটি টাকা ব্যয়ে ড্রেন নির্মাণ করেছি। আমি কারও ক্ষতি করতে চাই না।’

 
                             
                                    -20250807034208.webp)

 সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন 
                                     
                                     
                                    -20251031233315.webp) 
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                    -20251031164732.webp) 
                                                                                     
                                                                                     
                             
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
       
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন