বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) থেকে সাগরে জেলেদের জালে ধরা পড়তে শুরু করেছে ইলিশ মাছ। এর ফলে পাইকারি বাজারে ইলিশের দাম কিছুটা কমেছে। তবে খুচরা বাজারে ইলিশের দাম এখনও সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের বাইরে রয়েছে।
পটুয়াখালীর মৎস্যবন্দর আলীপুর, মহিপুর ও কুয়াকাটায় গত দুই দিন ধরে ইলিশ নিয়ে আড়তগুলোতে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পাইকার ও মহাজনরা ট্রাকভর্তি ইলিশ নিয়ে আসছেন।
মৎস্য ব্যবসায়ীরা জানান, জ্যৈষ্ঠ থেকে আশ্বিন মাস পর্যন্ত ইলিশের মৌসুম হলেও, এইবার অর্ধেক মৌসুম পার হওয়া সত্ত্বেও পূর্বের তুলনায় কম ইলিশ পেয়েছেন জেলেরা। তবে বর্তমানে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সাগর শান্ত এবং সব ধরনের ট্রলার কমবেশি ইলিশ পাচ্ছে।
আড়তে এখন মুখরিত চিত্র দেখা যাচ্ছে। কেউ ট্রলার থেকে মাছ নামাচ্ছেন, কেউ ওজন দিচ্ছেন, কেউ হিসাব-নিকাশে ব্যস্ত। পাইকারি বাজারে দাম কমলেও খুচরা বাজারে তার প্রভাব পড়েনি। অনেক ক্রেতার অভিযোগ, খুচরা বিক্রেতারা বেশি দামে ইলিশ বিক্রি করছেন, যা সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি করছে।
রোববার পাইকারি বাজারে দেখা গেছে, ১ কেজি বা তার বেশি ওজনের ইলিশ প্রতি মণ (৪০ কেজি) ৭০ থেকে ৭৫ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ৬০০ থেকে ৯০০ গ্রাম সাইজের ইলিশের দাম প্রতি মণ ৫৮ হাজার টাকা, আর ৩০০ থেকে ৬০০ গ্রাম ওজনে ‘গোটলা’ ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২১ হাজার ৫০০ টাকায়। এই দাম গত ১০ দিনের তুলনায় প্রতি মণ ১০ থেকে ২০ হাজার টাকা কম। কিন্তু কলাপাড়া পৌর মাছবাজারে খুচরা বিক্রিতে দাম প্রায় অপরিবর্তিত রয়েছে। ১ কেজি ইলিশের দাম এখনও ২৩ হাজার টাকার কোঠায়।
স্থানীয় ক্রেতা বরুণ কর্মকার বলেন, পাইকারি দামে কিছুটা কমেছে ইলিশ, কিন্তু খুচরা বাজারে দাম অপরিবর্তিত থাকায় সাধারণ মানুষের পক্ষে এখনো ইলিশ কেনা কঠিন।
শিক্ষক মো. তরিকুজ্জামান মন্তব্য করেন, গোনা পয়সায় চলা পরিবারের জন্য ইলিশ এখন বিলাসিতা। জেলেদের ধরা মাছ বাইরের পাইকাররা বেশি দামে কিনে নিয়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষের পক্ষে পাওয়া দায় হয়ে যাচ্ছে।
মহিপুর মৎস্যবন্দরের হাওলাদার আ. জলিল হাওলাদার জানান, গত সপ্তাহের তুলনায় পাইকারি বাজারে মাছের দাম মণপ্রতি ১০ থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত কমেছে। মাছ ধরা এইভাবে ভালো থাকলে জেলেদের লোকসান কমবে এবং সাধারণ মানুষও ইলিশ খেতে পারবে।
আপনার মতামত লিখুন :