উজানের ঢল ও টানা বর্ষণের কারণে পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের চরাঞ্চলের নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে। এতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর ও শিবগঞ্জ উপজেলার প্রায় ৬ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
একই সঙ্গে ব্যাপক পরিমাণ ফসলি জমি পানির নিচে তলিয়ে গেছে। পাশাপাশি ৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ ও শ্রেণিকক্ষে পানি প্রবেশের কারণে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। ফলে ওই এলাকার মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থা দুর্বল হওয়া ছাড়াও স্বাভাবিক জীবনযাত্রাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
সোমবার (১১ আগস্ট) সকাল ৯টায় পদ্মা নদীর পানি ২১ দশমিক ৬২ সেন্টিমিটার প্রবাহিত হচ্ছে, যা বিপৎসীমার ৪৩ সেন্টিমিটার নিচে রয়েছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার নারায়ণপুর ও আলাতুলি ইউনিয়ন এবং শিবগঞ্জ উপজেলার পাঁকা, উজিরপুর ও দুলর্ভপুর ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের প্রায় সাড়ে ৬ হাজার পরিবার পানিবন্দি রয়েছেন। নারায়ণপুরে ৫০০ এবং আলাতুলিতে ৬০০ পরিবার, পাঁকা ইউনিয়নে ২ হাজার, উজিরপুরে ৪৫০ এবং দুলর্ভপুরে ৩ হাজার পরিবারের জীবনযাত্রা কঠিন হয়ে পড়েছে।
পদ্মা নদীর পানি বেড়ে ফসলি জমি ডুবে যাওয়ায় কৃষকরা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলায় ৪৩ হেক্টর এবং শিবগঞ্জে ৩৬০ হেক্টর জমির ফসলের ক্ষতি হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট কৃষি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় পদ্মার পানি ১০ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে।
পাঁকা ইউনিয়নের বাসিন্দা ইয়াকুব আলী বলেন, ‘আমাদের এলাকার ধানসহ সজীব জমি পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এতে কৃষকরা বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছেন। অনেক বাড়ির চারপাশ পানি নিয়ে ঘেরা, মাত্র বাড়ির জায়গাটুকু ডাঙ্গা রয়েছে।’
নারায়ণপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. নাজির হোসেন জানান, ‘পদ্মার পানি বৃদ্ধির কারণে ৫০০ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে, ফলে তাদের স্বাভাবিক জীবন ব্যাহত হচ্ছে। যদি পানি এমনভাবে বাড়তে থাকে, নিম্নাঞ্চলের বাড়িঘর ডুবে যেতে পারে।’
শিবগঞ্জের দুলর্ভপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোহা. আজম আলী বলেন, ‘আমাদের ইউনিয়নের দোভাগী ফিল্টেরহাট, নামোজগন্নাথপুর ও বাদশাপাড়া এলাকার নিম্নাঞ্চল পানির নিচে ডুবে গেছে। এখানে প্রায় ৩ হাজার মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় জীবন যাপন করছেন।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নয়ন মিয়া জানিয়েছেন, ‘বন্যার পানিতে শিবগঞ্জে ৩৬০ হেক্টর ধান, ভুট্টা ও শাকসবজির ক্ষতি হয়েছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা আনিসুল হক জানান, তাদের উপজেলায় ৪৩ হেক্টর জমির ফসল বন্যার পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জানান, ‘নিম্নাঞ্চলের ৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ ও শ্রেণিকক্ষে পানি ঢুকে যাওয়ায় পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। আশপাশের উঁচু এলাকায় পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনার চেষ্টা চলছে।’
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা ত্রাণ ও পূর্ণবাসন কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি ও নিম্নাঞ্চলের পানিবন্দি মানুষের বিষয়টি আমরা লক্ষ করছি। শিবগঞ্জ উপজেলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার রয়েছে। উপজেলার তালিকা প্রস্তুত করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তালিকা পাওয়া গেলে যাচাই-বাছাই শেষে তাদের ত্রাণ প্রদান করা হবে।’

 
                             
                                    

 সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন 
                                     
                                     
                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                             
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
       -20251025002118.webp) 
        
        
        
        
        
        
        
       
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন