বৃহস্পতিবার, ০২ অক্টোবর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী প্রতিবেদক ও রংপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: অক্টোবর ২, ২০২৫, ০২:১৩ এএম

বাড়ছে অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত, রংপুরে নতুন করে শনাক্ত ৩

রূপালী প্রতিবেদক ও রংপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: অক্টোবর ২, ২০২৫, ০২:১৩ এএম

অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত। ছবি- সংগৃহীত

অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত। ছবি- সংগৃহীত

রংপুরের কাউনিয়া উপজেলায় নতুন করে আরও দুজন এবং মিঠাপুকুর উপজেলায় একজনের শরীরে অ্যানথ্রাক্স শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে পুরো জেলায় এ পর্যন্ত মোট ১১ জন অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হলো।

বুধবার (১ অক্টোবর) রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা সিভিল সার্জন ডা. শাহীন সুলতানা।

এর আগে জেলার পীরগাছা উপজেলায় আটজনের শরীরে অ্যানথ্রাক্স শনাক্ত হয়। জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত জুলাই ও সেপ্টেম্বর মাসে পীরগাছায় অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ নিয়ে দুজন মারা যান। একই সময়ে উপজেলার চারটি ইউনিয়নে প্রায় ৫০ জন ব্যক্তি অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত হন।

পরে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)-এর একটি প্রতিনিধিদল গত ১৩ ও ১৪ সেপ্টেম্বর পীরগাছা সদর ও পারুল ইউনিয়নে গিয়ে অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ থাকা ১২ জন নারী-পুরুষের শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করে। পরীক্ষায় আটজনের শরীরে অ্যানথ্রাক্স শনাক্ত হয়। একই সময়ে প্রাণিসম্পদ বিভাগও অসুস্থ গরুর মাংসের নমুনা পরীক্ষা করে তাতে অ্যানথ্রাক্সের অস্তিত্ব নিশ্চিত করে।

অন্যদিকে, গত ১৫ সেপ্টেম্বর রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার ইমাদপুর ইউনিয়নের আমাইপুর গ্রামে কৃষক ইব্রাহিম মিয়ার একটি গরু অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে সেটি জবাই করার পর আশপাশের লোকজন মাংস কাটাকাটিতে অংশ নেন। ঘটনার দুই দিন পর স্থানীয় চারজন- সোহরাব হোসেন, আব্দুর রাজ্জাক, মনির হোসেন ও মজিবর রহমান চর্মরোগে আক্রান্ত হন। তাদের শরীর থেকে সংগৃহীত নমুনা আইইডিসিআরে পাঠানো হলে একজনের শরীরে অ্যানথ্রাক্স শনাক্ত হয়।

মিঠাপুকুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার (রোগ নিয়ন্ত্রণ) এম এ হালিম লাবলু জানান, ‘ইমাদপুরে যারা আক্রান্ত হয়েছেন, তারা মূলত অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত গবাদিপশুর শ্লেষ্মা, লালা, রক্ত, মাংস, হাড় ও নাড়িভুঁড়ির সংস্পর্শে এসে এ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। তবে সামাজিক বিবেচনায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের নাম প্রকাশ করা হচ্ছে না।’

অ্যানথ্রাক্স কীভাবে ছড়ায়?

অ্যানথ্রাক্সের জীবাণু সাধারণত আক্রান্ত প্রাণীর শরীর থেকে ছড়ায়। এমনকি জীবাণুটি মাটিতেও দীর্ঘদিন সক্রিয় অবস্থায় থাকতে পারে। কেউ যদি অসুস্থ গবাদিপশুর মাংস খান কিংবা শ্বাসের মাধ্যমে অ্যানথ্রাক্সের জীবাণু শরীরে প্রবেশ করে, তবে তার মধ্যে এ রোগ দেখা দিতে পারে। ত্বকে ক্ষত থাকলে সেই অংশ দিয়ে জীবাণু প্রবেশ করতে পারে।

তবে মানুষের হাঁচি-কাশির মাধ্যমে এই রোগ ছড়ায় না, যা অন্যান্য অনেক সংক্রামক রোগের ক্ষেত্রে দেখা যায় না।

উপসর্গ কী কী?

অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ নির্ভর করে জীবাণুটি দেহে কীভাবে প্রবেশ করেছে তার ওপর। মাংস খেয়ে আক্রান্ত হলে বমি, পেটব্যথা, মাথাব্যথা, রক্তবমি, ক্ষুধামান্দ্য, জ্বর, গলাব্যথা, ঘাড় ফুলে যাওয়া এবং রক্তমিশ্রিত পাতলা পায়খানার মতো উপসর্গ দেখা দেয়।

শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে সংক্রমিত হলে শুরুতে সাধারণ সর্দি-জ্বরের মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে- যেমন: গলাব্যথা, ক্লান্তি, পেশি ব্যথা। পরবর্তী সময়ে হতে পারে বুকে অস্বস্তি, শ্বাসকষ্ট, কফের সঙ্গে রক্ত, এবং জ্বর বেড়ে যেতে পারে। কখনো মস্তিষ্কের প্রদাহ এবং রক্তচাপ হ্রাস পাওয়ার মতো জটিলতা দেখা দেয়।

ত্বকের মাধ্যমে সংক্রমিত হলে আক্রান্ত স্থানে পোকার কামড়ের মতো ফোলাভাব ও চুলকানি হয়, যা পরে ব্যথাহীন কালো দাগে রূপ নেয়। আশপাশের ত্বক ফুলে যেতে পারে এবং সঙ্গে জ্বরও থাকতে পারে।

প্রতিরোধের উপায়

এই রোগ প্রতিরোধে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সতর্কতা মেনে চলা জরুরি। যেমন:

১) এমন মাংস খাবেন না যা ভালোভাবে সেদ্ধ করা হয়নি।

২) ত্বকে কাটাছেঁড়া থাকলে কাঁচা মাংস নাড়াচাড়া করার সময় গ্লাভস ব্যবহার করুন।

৩) গবাদিপশুকে নিয়মিত অ্যানথ্রাক্সের টিকা দিন।

৪) অসুস্থ গরুর মাংস খাওয়া, কাটাকাটি করা বা সংস্পর্শে আসা থেকে বিরত থাকুন।

৫) পশুর দেখাশোনার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করুন।

সচেতনতা ও দ্রুত চিকিৎসাই অ্যানথ্রাক্স প্রতিরোধের সবচেয়ে কার্যকর উপায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সময়মতো চিকিৎসা শুরু হলে এ রোগ সহজেই নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।

Link copied!