সোমবার, ১৭ নভেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


চট্টগ্রাম ব্যুরো

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৭, ২০২৫, ০৫:৩৭ পিএম

হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার, আদালতে পাঠানো হলো মাদকের মামলায়

চট্টগ্রাম ব্যুরো

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৭, ২০২৫, ০৫:৩৭ পিএম

নিহত বেলাল হোসেন ও আটক সুমন।

নিহত বেলাল হোসেন ও আটক সুমন।

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার সৈয়দপুর ইউনিয়নের মীরেরহাট বাজারে মানসিক ভারসাম্যহীন বেলাল হোসেনকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় গত শুক্রবার গ্রেপ্তারকৃত স্থানীয় ওয়ার্ড যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুমনকে গাঁজা উদ্ধারের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠিয়েছে সীতাকুণ্ড থানা পুলিশ। বিষয়টি নিয়ে মীরেরহাট এলাকায় আলোচনা–সমালোচনার ঝড় উঠেছে। হত্যা মামলায় আটক হওয়ার পর তাকে মাদক মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোয় স্থানীয়দের মধ্যে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

শনিবার (১৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় এলাকাবাসী ও ব্যবসায়ী ব্যানারে বাজারে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। বক্তারা অভিযোগ করেন, মানসিক ভারসাম্যহীন যুবক বেলালকে হত্যার অভিযোগে সুমনকে গ্রেপ্তার করা হলেও পরে তাকে কেন গাঁজা উদ্ধারের ঘটনায় আদালতে পাঠানো হলো, সেটি স্পষ্ট নয়।

গ্রেপ্তার সুমনের বিরুদ্ধে ১০০ গ্রাম গাঁজা উদ্ধারের অভিযোগে থানায় মামলা করেন এসআই রাসেল। ২০১৮ সালের মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলাটি শুক্রবার রেকর্ড করা হয়।

স্থানীয়দের দাবি, বেলাল হত্যাকাণ্ডে সুমনের গ্রেপ্তারের খবরে এলাকায় স্বস্তি নেমে এসেছিল। কিন্তু গ্রেপ্তারের পরপরই ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলামের নেতৃত্বে ২০–২৫ জনের একটি দল থানায় গিয়ে তাকে ছাড়ানোর চেষ্টা করেন। ছাড়াতে না পারলেও স্থানীয়দের অভিযোগ, টাকার বিনিময়ে মামলার ধরণ পাল্টে যায় এবং সকালে সুমনকে হত্যা মামলার বদলে মাত্র ১০০ গ্রাম গাঁজা উদ্ধারের মামলায় আদালতে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।

গ্রেপ্তার সুমন সৈয়দপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের আবুল মনসুরের ছেলে ও ওয়ার্ড যুবদলের সাধারণ সম্পাদক।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, সুমনকে মীরেরহাট বাজারে তার দোকানের সামনে থেকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং তার প্যান্টের পকেট থেকে গাঁজা উদ্ধার করা হয়। তবে সুমনের ছেলে সাকিল দাবি করেন, তার বাবা গাঁজা ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত নন।

স্থানীয়রা আরও অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের আগে সুমন নসিমন চালাতেন। সরকার পরিবর্তনের পর তিনি একটি “সন্ত্রাসী বাহিনী” গড়ে তোলেন, যা দিয়ে ইয়াবা, মাদক, দখল ও চাঁদাবাজির ব্যবসা চালাতেন। তার ভয়ে ব্যবসায়ীরা জিম্মি ছিলেন এবং পুলিশের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কারণে কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পেতেন না।

বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগে সুমনকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে চট্টগ্রাম উপজেলা যুবদলের সভাপতি হাসান মুহাম্মদ জসিম ও সাধারণ সম্পাদক এস এম মুরাদের স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

গত শনিবার রাতে এলাকাবাসীর উদ্যোগে মাদক, চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে এবং খুনের আসামি সুমনকে মাদক মামলায় চালান দেওয়ার প্রতিবাদে মীরেরহাট বাজারে প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

খুন হওয়া বেলালের মামাতো ভাই ও মামলার বাদী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সুমনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে, এটা শুনেছিলাম। পরে শুনছি তাকে মাদক মামলায় চালান দিয়েছে।’

বাজার কমিটির সভাপতি জামশেদ আলম বলেন, ‘যদি পুলিশ টাকার বিনিময়ে হত্যাকাণ্ডের আসামিকে মাদকের মামলায় চালান দেয়, তাহলে আমরা বিচারের জন্য কোথায় যাব?’

ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক কাজী এনামুল বারী বলেন, ‘পুলিশ যদি টাকার বিনিময়ে আসামিদের হালকা মামলায় পাঠায়, তবে আমরা থানা ঘেরাওসহ কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করব।’

প্রতিবাদ সভায় জামায়াত নেতা ও অতিরিক্ত জেলা পিপি অ্যাডভোকেট হুসাইন মুহাম্মদ আশরাফুদ্দীন বলেন, ‘খুনের মামলার আসামিকে যদি টাকার বিনিময়ে পুলিশ মাদক মামলায় দেয়, তাহলে সেই পুলিশদের থানার সামনে ভিক্ষার থালা নিয়ে বসার অনুরোধ জানাই।’

এই বিষয়ে সীতাকুণ্ড মডেল ওসি মুজিবুর রহমান বলেন, ‘তাকে বেলাল হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে ধরা হয়েছিল। তখন তার সঙ্গে গাঁজা পাওয়া যায়। কিন্তু প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি। এ কারণেই তাকে মাদক মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।’

Link copied!