বাগেরহাটের চিতলমারীতে সিলগালাকৃত ক্লিনিকে গোপনে এক প্রসূতির সিজার অপারেশনের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বিভিন্ন টেলিভিশন ও পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর টনক নড়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের। গেল ৯ অক্টোবর দৈনিক খবরের কাগজে 'সিলগালা ক্লিনিকে গোপন অপারেশন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে রোগী' শিরোনামে খবর প্রকাশিত হলে খুলনা বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) টেলিফোনিক নির্দেশে এই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
এ ঘটনা ধামাচাপা দিতে উঠেপড়ে লেগেছে চিতলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মরত ডা. মারুফা নাসরিন।
গত ৭ অক্টোবর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. মারুফা নাসরিন সিলগালাকৃত ক্লিনিকে মুর্শিদা বেগম নামে এক প্রসূতির সিজার অপারেশন করেন বলে অভিযোগ ওঠে। অপারেশনের পর তার অবস্থার অবনতি হলে খুলনা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়, যেখানে তিনি মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন।
ঘটনার পর খুলনা বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য)-এর নির্দেশে ডেপুটি সিভিল সার্জন বাগেরহাটকে প্রদান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটিকে ১০ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
চিতলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শর্মি রায় বলেন, ‘আমি কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি তাই কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করিনি।’
উল্লেখ্য, বাগেরহাটের চিতলমারীতে সিলগালা থাকা সত্ত্বেও মিম সার্জিক্যাল ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অবৈধভাবে সিজার অপারেশন করেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. মারুফা নাসরিন। বর্তমানে অপারেশনে গুরুতর অসুস্থ রোগী মুর্শিদা বেগম খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন।
জানা গেছে, মঙ্গলবার (০৭ অক্টোবর) দুপুরে চিতলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে মুর্শিদাকে খুলনা মেডিকেলে রেফার করা হয়েছিল। কিন্তু দালালের মাধ্যমে ডা. মারুফা তাকে নিয়ে যান সিলগালা করা মিম সার্জিকাল ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এবং সেখানে সিজার অপারেশন করেন। অপারেশনের একপর্যায়ে রোগীর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হলে ঘটনাস্থল ছেড়ে চলে যান ওই চিকিৎসক।
বাগেরহাট সিভিল সার্জন ডা. মো. মাহাবুল আলম বলেন, চিতলমারী মিম সার্জিক্যাল ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক ক্লিনিক দীর্ঘদিন যাবৎ সিলগালা করে রাখা হয়েছে। সেখানে কোনো চিকিৎসাকার্যক্রম চালানোর অনুমতি নেই, অপারেশন তো দূরের কথা। এ ঘটনায় সিভিল সার্জনকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই তদন্ত কমিটি আগামী ১০ কর্মদিবসের মধ্যে তাদের তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করবে।
খুলনা বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. মো. মুজিবুর রহমান বলেন, ‘সিভিল সার্জন সাহেবের সাথে কথা বলেছি। তদন্ত কমিটি গঠনসহ জরুরি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলেছি।’
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন