ঢাকা বুধবার, ১৩ আগস্ট, ২০২৫

৬ চিকিৎসক দিয়ে চলছে দুপচাঁচিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

উজ্জ্বল চক্রবর্ত্তী শিশির, দুপচাঁচিয়া
প্রকাশিত: আগস্ট ১৩, ২০২৫, ০৭:২৭ পিএম
দুপচাঁচিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক ও জনবলের তীব্র অভাবের কারণে স্বাস্থ্যসেবা কার্যত ভেঙে পড়েছে। ২০ জন সরকারি চিকিৎসক পদ থাকলেও বর্তমানে প্রকৃতপক্ষে সেবা দিচ্ছেন মাত্র ১০ জন। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ১০ পদের মধ্যে রয়েছেন ৬ জন, মেডিকেল অফিসার ৪ জন।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, শুধু পদই শূন্য নয়, কর্মকর্তাদের নিয়েও রয়েছে চরম অব্যবস্থাপনার অভিযোগ। 

প্রতিদিন গড়ে ২০০-৩৫০ রোগী বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসেন। ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৫৭ জন, এর মধ্যে ৩০ জন মহিলা, ১৬ জন পুরুষ ও ১১ জন শিশু। হাসপাতালটিতে ২০ জন চিকিৎসকের পদের বিপরীতে কাগজ-কলমে ১৪ জন কর্মরত থাকলেও প্রকৃতপক্ষে মাত্র ১০ জন চিকিৎসক চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন। বাকিরা ছুটি বা অনুপস্থিত। অর্ধেকেরও বেশি পদ শূন্য থাকায় হাসপাতালের কার্যক্রম অনেকাংশে বিঘ্নিত। এক্স-রে, অপারেশন থিয়েটার ছাড়া অন্যান্য বিভাগে চিকিৎসকের অভাবে সোনোলজি এবং কিছু পরীক্ষার কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, চিকিৎসক খুব কম থাকায় রোগীদের দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়। বিশেষ করে অন্তঃসত্ত্বা নারী এবং জরুরি রোগীদের জন্য সেবা প্রায় অপ্রাপ্য। দুর্ঘটনায় আহত রোগীদের প্রায় ২৪ কিলোমিটার দূরে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠাতে হয়।

একটি উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র গুনাহার ইউনিয়নেও মাত্র একজন ফার্মাসিস্ট ও অবসরপ্রাপ্ত এমএলএসএস দিয়ে কার্যক্রম চলছে। প্রধান অফিস সহকারী, অফিস সহায়ক, ক্যাশিয়ার ও পরিসংখ্যান কর্মকর্তার পদও দীর্ঘদিন শূন্য। পরিচ্ছন্নতার অভাবে ওয়ার্ড ও শৌচাগারের পরিবেশ শোচনীয়। নোংরা ও দুর্গন্ধময় পরিবেশে রোগীদের ভোগান্তি আরও বেড়েছে।

চিকিৎসক ও কর্মী সংকট প্রসঙ্গে আন্তঃবিভাগের দায়িত্বরত একজন নার্সের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, নতুন মিডওয়াইফ, ওয়ার্ড বয় ও আয়া দীর্ঘদিন সংকট রয়েছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শুধু এক্স-রে মেশিন ও অপারেশন থিয়েটার ছাড়া বাকি আল্ট্রাসনোলজিস্ট বিভাগে চিকিৎসকের অভাবে সোনোলজি মেশিনের কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে। বিশেষ করে কিছু চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য বিভিন্ন ক্লিনিকে ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পাঠান। 

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার শামসুন্নাহার জানান, শূন্য পদ পূরণের জন্য জেলা ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। সীমিত জনবল নিয়েও রোগীরা যাতে সর্বোচ্চ সেবা পান, সেই বিষয়ে নজর রাখা হচ্ছে। তিনি আশাবাদ প্রকাশ করেছেন যে, দ্রুত এই সংকট সমাধান হবে।