ঢাকা বুধবার, ১২ নভেম্বর, ২০২৫

ধুনটে ট্রান্সফরমার চুরির হিড়িক, অভিযোগেও মিলছে না সুরাহা

সুমন হোসেন, ধুনট (বগুড়া)
প্রকাশিত: নভেম্বর ১২, ২০২৫, ০৫:০৩ পিএম
গতকাল মঙ্গলবার চুরি হওয়া ট্রান্সফরমারের অবশিষ্টাংশ। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

বগুড়ার ধুনটে কৃষিতে সেচ কাজে ব্যবহৃত পল্লী বিদ্যুৎচালিত পাম্পের ট্রান্সফরমার চুরির ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। গত ছয় মাসে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে অন্তত ২০টির বেশি ট্রান্সফরমার চুরি হয়েছে। এসব ট্রান্সফরমারের বাজারমূল্য প্রায় ১২ লাখ টাকা বলে জানা গেছে। চুরির ঘটনায় থানায় অভিযোগ করেও সুরাহা মিলছে না ক্ষতিগ্রস্ত সেচ পাম্প মালিকদের।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ৩ জানুয়ারি ধুনট উপজেলার কালেরপাড়া ইউনিয়নের ঈশ্বরঘাট গ্রামের কৃষক ওসমান গণির সেচ পাম্পের ট্রান্সফরমার চুরি হয়। এ ঘটনায় তিনি থানায় অভিযোগ করেও কোনো ফল পাননি। পরে ফসল বাঁচাতে তিনি ধুনট পল্লী বিদ্যুৎ অফিস থেকে ৮০ হাজার টাকায় নতুন ট্রান্সফরমার কিনে স্থাপন করেন। কিন্তু মাত্র ১১ মাস পর, গত ১০ নভেম্বর রাত পৌনে ৯টার দিকে একই স্থান থেকে আবারও ট্রান্সফরমারটি চুরি হয়ে যায়। এতে তিনি শঙ্কিত এবং নতুন ট্রান্সফরমারের জন্য টাকা জোগাড়ের চিন্তায় পড়েছেন।

এ ছাড়া গত ৮ অক্টোবর গভীর রাতে গোপালনগর ইউনিয়নের বানিয়াগাতি গ্রাম থেকে আরও ৬টি ট্রান্সফরমার চুরি হয়। এর আগে ২৪ জুলাই মথুরাপুর ইউনিয়নের খাদুলি গ্রাম থেকে ৪টি ট্রান্সফরমার চুরি হয়, যার মধ্যে একটি সেচ পাম্পের ও তিনটি স্থানীয় রাইস মিলে ব্যবহৃত ছিল।

ভুক্তভোগী কৃষক ওসমান গনি বলেন, ‘একটি ট্রান্সফরমারের ওজন অনেক বেশি। এত ভারী জিনিস চুরি করা সাধারণ মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। আমার ধারণা, এ চুরির সঙ্গে পল্লী বিদ্যুতের কিছু অসাধু কর্মচারী জড়িত থাকতে পারে, কারণ অভিজ্ঞ না হলে কেউ ট্রান্সফরমার খুলতে পারবে না।’

চুরি হওয়া ট্রান্সফরমারের অবশিষ্টাংশ পড়ে আছে। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

সেচ পাম্প মালিকেরা জানান, ট্রান্সফরমারে মূল্যবান তামার কয়েলসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম থাকে, যার দাম বেশি হওয়ায় এগুলোই মূল টার্গেট হয় চোরদের। তাদের অভিযোগ, দক্ষ ব্যক্তি ছাড়া এসব ট্রান্সফরমার খোলা সম্ভব নয়, তাই এতে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির অসাধু কর্মচারীদের যোগসাজশ থাকতে পারে। চুরি হওয়া কোনো ট্রান্সফরমার এখনো উদ্ধার না হওয়ায় তারা ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন।

ধুনট পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসের ডিজিএম কামাল পাশা বলেন, ‘চলতি বছরে ২৫টির বেশি ট্রান্সফরমার চুরির ঘটনা ঘটেছে। আমরা প্রতিটি ঘটনার অভিযোগ থানায় করেছি। তবে এখন পর্যন্ত কোনো চুরি হওয়া ট্রান্সফরমার উদ্ধার হয়নি এবং কেউ গ্রেপ্তারও হয়নি।’

ধুনট থানার ওসি সাইদুল আলম বলেন, ‘বৈদ্যুতিক সেচ পাম্পসংক্রান্ত সব চুরির অভিযোগ গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে। চুরিকৃত সরঞ্জাম উদ্ধারে পুলিশ তৎপর রয়েছে।’