চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গবাদিপশুর মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে ভাইরাসজনিত লাম্পি স্কিন ডিজিজ। ছেংগারচর পৌরসভা, এখলাসপুর, মোহনপুর, সুলতানাবাদ ও কলাকান্দা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে অসংখ্য গরু এই রোগে আক্রান্ত হয়েছে। ফলে খামারি ও চাষিদের মধ্যে চরম উদ্বেগ ও হতাশা বিরাজ করছে।
এই ছোঁয়াচে রোগে গরুর শরীরে ফোস্কা ও গুটি দেখা দেয়, সঙ্গে থাকে জ্বর, ক্ষুধামান্দ্য এবং দুধ উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। অনেক সময় শরীর ফুলে গিয়ে গরু হাঁটাচলায় অক্ষম হয়ে পড়ে। চিকিৎসা না পেলে মৃত্যুঝুঁকিও দেখা দেয়।
স্থানীয় খামারি মো. রুহুল আমিন বলেন, ‘আমার খামারে পাঁচটি গরুর মধ্যে তিনটি লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত। খেতে পারছে না, পা ফুলে গেছে। পশু চিকিৎসকের কাছে গেলে ওষুধের সংকটের কথা বলা হয়েছে।’
ছেংগারচরের দেওয়ানজীকান্দি এলাকার গরু চাষি মমিনুল ইসলাম বলেন, ‘আমার একটি বকনা বাছুর গত এক সপ্তাহ ধরে আক্রান্ত। শরীরে খোসা পড়ে গেছে, গুটিগুলো গলে গিয়ে ক্ষত তৈরি হয়েছে। সেখানে পোকাও ধরেছে।’
কলাকান্দা ইউনিয়নের শাহিনুর বেগম জানান, ‘এই রোগে আক্রান্ত হয়ে কয়েদিন আগে আমাদের একটি গরু মারা গেছে।’
এ বিষয়ে মতলব উত্তর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. শ্যামল চন্দ্র দাস বলেন, ‘লাম্পি স্কিন ডিজিজ একটি ছোঁয়াচে ভাইরাসজনিত রোগ, যা মূলত মশা, মাছি ও অন্যান্য বাহকের মাধ্যমে দ্রুত ছড়ায়। আমরা আক্রান্ত এলাকাগুলোতে ওষুধ ও ভ্যাকসিন সরবরাহ করছি। আক্রান্ত পশুগুলোকে আলাদা রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘গত তিন মাস আগে উপজেলায় এ রোগ ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছিল, এখন কিছুটা কমেছে। পরিচ্ছন্নতা ও সচেতনতাই এই রোগ প্রতিরোধে প্রধান উপায়। আক্রান্ত পশুকে চিকিৎসা দেওয়ার পাশাপাশি আশপাশের পশুগুলোকে প্রতিরোধমূলক টিকা দেওয়া হচ্ছে। প্রতিদিন টিম করে এলাকাগুলো মনিটরিং করা হচ্ছে।’
মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদা কুলসুম মনি বলেন, ‘লাম্পি স্কিন রোগের বিষয়ে আমরা অবগত। প্রাণিসম্পদ বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করে আক্রান্ত এলাকায় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। খামারিদের আতঙ্কিত না হয়ে সচেতনভাবে পশু চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। প্রশাসন পাশে আছে।’
আপনার মতামত লিখুন :