বাঁশখালীর বিভিন্ন পাহাড়ে লুকায়িত রয়েছে বিপুল পরিমাণ প্রাকৃতিক সম্পদ তেল ও গ্যাস। অনেক আগে খনন করা তিনটি কূপ অদৃশ্য কারণে সিসা ঢালাই দিয়ে সিল করা হলেও কূপগুলোর বিভিন্ন লিকেজ দিয়ে বুঁদ বুঁদ করে গ্যাস ওঠায় এখানে তেল ও গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনাকে আরও জাগিয়ে তুলেছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ১৯৬০ সালে তৎকালীন পাকিস্তান সরকার ‘অয়েল অ্যান্ড গ্যাস ডেভেলপমেন্ট করপোরেশনে’র মাধ্যমে বাঁশখালীর পাহাড়ে খনন করে তিনটি কূপ। খননের পর তারা সেখানে বিপুল পরিমাণ প্রাকৃতিক সম্পদ তেল ও গ্যাসের সন্ধান পান। বাঁশখালী পৌর সদর থেকে দুই কিলোমিটার পূর্বে গহীন অরণ্যে জলদী রেঞ্জ ও লোহাগড়া চুনতি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য রেঞ্জের মাঝামাঝি দো-চাইল্লা নামক পাহাড়ে এ প্রাকৃতিক সম্পদের অবস্থান।
আরও জানা যায়, ওই সময় ‘অয়েল অ্যান্ড গ্যাস ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন’ কোরিয়া ও রাশিয়ার তেল এবং গ্যাস বিশেষজ্ঞ দলের মাধ্যমে খনন করা হয় আরও পাঁচটি কূপ। পাঁচটি কূপের মধ্যে তিনটিতে জরিপ চালায় বিশেষজ্ঞ দল। তারা জরিপ চালিয়ে নিশ্চিত হন কূপগুলোতে রয়েছে বিপুল পরিমাণ তেল ও গ্যাস। বিশেষজ্ঞরা সে সময় প্রায় তিনশ’ ব্যারেল অপরিশোধিত তেলও উত্তোলন করতে সক্ষম হন। তারা পাকিস্তান সরকারের কাছে জরিপের ফলের প্রতিবেদনও জমা দেন। ওই প্রতিবেদন আলোর মুখ না দেখলেও হঠাৎ করে অদৃশ্য কারণে বিদেশি বিশেষজ্ঞ দল এসে খননকৃত প্রতিটি কূপই সিসা ঢালাই করে সিল করে দেয়। বর্তমানে কূপের ঢালাইকৃত অংশ ছাড়াও পাহাড়ের বিভিন্ন ফাটল থেকে বের হচ্ছে গ্যাস।
একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, খননকৃত প্রতিটি কূপে প্রচুর পরিমাণ তেল ও গ্যাস মজুত রয়েছে। যা উত্তোলন করা হলে কয়েকটি দেশের তেল ও গ্যাস উত্তোলন বন্ধ হয়ে যেতে পারে। তাই বিদেশি বিশেষজ্ঞরা তাদের ভবিষ্যৎ চিন্তা করে ওই কূপগুলো সিসা ঢালাই করে দেন, যাতে ভবিষ্যতে কেউ এখান থেকে তেল বা গ্যাস উত্তোলন করতে না পারে।
এদিকে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেডের (বাপেক্স) ভূতত্ত্ব বিভাগের ব্যবস্থাপক আলমগীর হোসেন বাঁশখালীর জলদী পাহাড়ে তিনটি কূপ খননের কথা জানালেও ১৯৬০ সালে চালানো জরিপের পর থেকে অদ্যাবধি ওই এলাকা থেকে তেল গ্যাস উত্তোলনের কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি এবং সিসা ঢালাই করার রহস্যও উদ্ঘাটিত হয়নি। অথচ খননকৃত প্রতিটি কূপের লিকেজ থেকে বুঁদ বুঁদ করে নির্গত হচ্ছে গ্যাস।
বিষয়টি সংশ্লিষ্ট বিভাগের খতিয়ে দেখা প্রয়োজন বলে মনে করেন বাঁশখালীর সচেতন জনগণ।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন