ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর, ২০২৫

মুড়ির মতো অস্ত্র ঢুকছে চট্টগ্রামে

চট্টগ্রাম ব্যুরো
প্রকাশিত: নভেম্বর ২০, ২০২৫, ০৬:৪১ পিএম
চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ কার্যালয়ে ব্রিফ করেন জেলা পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম সান্তু। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

চট্টগ্রাম জেলার রাউজান উপজেলায় যেন মুড়ির মতো অস্ত্র ঢুকছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী রাত-দিন অভিযান চালিয়ে এসব অস্ত্র উদ্ধার করলেও আধুনিক অস্ত্র ঢোকার প্রবাহ থামানো যাচ্ছে না। এক রাতেই রাউজান থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

উদ্ধার করা অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে: ৮টি এলজি, ৬ রাউন্ড কার্তুজ, ১৪টি ছোরা, ৩টি রামদা, ২টি চাপাতি, ২টি তলোয়ার, ১টি কিরিচ ও ১টি ইলেকট্রিক কাটার। র‌্যাব-৭ উদ্ধার করেছে ৩টি এলজি, ২টি তলোয়ার ও একটি কিরিচ।

জেলা পুলিশ সূত্র জানায়, শুধু রাউজানই নয়, অস্ত্র মজুদের তালিকায় রয়েছে সাতকানিয়ার নামও। সেখানে অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করা হয়েছে একটি বিদেশি পিস্তল ও ২টি শর্টগানের কার্তুজ।

বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) বিকালে জেলা পুলিশ কার্যালয়ে এসব তথ্য জানান জেলা পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম সান্তু।

পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম জানান, চট্টগ্রাম জেলার রাউজান থানার বিভিন্ন এলাকায় জেলা পুলিশ, র‌্যাব-৭, নৌপুলিশ এবং ৯ এপিবিএন-এর যৌথ বিশেষ অভিযানে দেশি-বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র-গুলি উদ্ধার এবং ৫ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। 

নিয়মিত আইনশৃঙ্খলা রক্ষার অংশ হিসেবে ১৯ নভেম্বর রাত থেকে ২০ নভেম্বর সকাল পর্যন্ত নোয়াপাড়া, বাগোয়ান, পূর্ব-পশ্চিম গুজরা, সুলতানপুর, কদলপুর, রাউজান ইউপি ও রাউজান পৌরসভায় এ অভিযান পরিচালিত হয়।

 

তিনি জানান, অভিযানের সময় বিভিন্ন স্থানে ১৭টি চেকপোস্ট বসিয়ে মোটরযান আইনে ৩৭টি মামলা করা হয় এবং ২৮টি মোটরসাইকেল ও একটি ট্রাক আটক করা হয়। বিভিন্ন অপরাধে ৫ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

অন্যদিকে সাতকানিয়া থানা পুলিশের অভিযানে গ্রেপ্তার করা হয় মো. তারেক ও মো. মিনারুল আলমকে। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় একটি বিদেশি পিস্তল, ২টি শর্টগানের কার্তুজ, লোহা-স্টিক ও মোবাইল ফোন। গ্রেপ্তার তারেকের বিরুদ্ধে হত্যা মামলাসহ ৪টি মামলা রয়েছে। একই রাতে আন্তঃজেলা ডাকাত আয়ুবকেও গ্রেপ্তার করে সাতকানিয়া থানা পুলিশ।

রাউজানের আলোচিত ব্যবসায়ী হাকিম হত্যা মামলায় পুলিশ ইতোমধ্যে ৬ আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের মধ্যে ২ জন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। মামলার তদন্তে উদ্ধার হয়েছে ৪টি বিদেশি পিস্তল, ১টি রিভলভার, ১টি চায়না রাইফেল, ১টি শর্টগানসহ মোট ৮৫ রাউন্ড গুলি ও ৭টি ম্যাগাজিন।

জেলা পুলিশের তথ্যমতে, নভেম্বর মাসে রাউজান থানার অভিযানে ১০টি অস্ত্র মামলা হয়েছে, গ্রেপ্তার হয়েছে ৮ জন, উদ্ধার করা হয়েছে ২৪টি আগ্নেয়াস্ত্র, ৮৫ রাউন্ড গুলি এবং ৩২টি কার্তুজ।

চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ জানায়, চলতি বছর জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত জেলায় ৫৭৭টি আগ্নেয়াস্ত্র, ৪৬২টি গুলি এবং ২০৬ রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার করা হয়েছে। অস্ত্র আইনে দায়ের হওয়া ৯৬টি মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে ১৪০ জনকে।