বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত এলাকায় স্থলমাইন বিস্ফোরণে আহত একটি বন্য হাতির চিকিৎসা দিতে গিয়ে হাতিটির আক্রমণে বন বিভাগ ও সাফারি পার্কের ১৫ জন কর্মকর্তা ও কর্মচারী আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে গুরুতর আহত তিনজনকে আজ শনিবার (১৬ আগস্ট) বিজিবির (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) হেলিকপ্টারে করে ঢাকায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) পাঠানো হয়েছে।
আহতদের মধ্যে রয়েছেন ডুলাহাজরা সাফারি পার্কের ভেটেরিনারি সার্জন ডা. হাতেম সাজ্জাদ মো. জুলকারনাইন, গাজীপুর সাফারি পার্কের ভেটেরিনারি সার্জন ডা. মো. মোস্তাফিজুর রহমান এবং কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের রাজারকুল রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. আলী নেওয়াজ।
বিজিবির সদর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম জানান, ‘আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রামু ক্যান্টনমেন্ট এলাকা থেকে হেলিকপ্টারে করে তাদের ঢাকায় পাঠানো হয়। এর আগে শুক্রবার বিকেলে কক্সবাজারের রামু উপজেলার মায়ানমার সীমান্তবর্তী রাজারকুল থোয়াইংগ্যকাটা এলাকার বালুচড়া দক্ষিণের পাহাড়ে হাতিটি চিকিৎসার সময় হঠাৎ ক্ষিপ্ত হয়ে আক্রমণ চালায়।’
বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, গত রোববার নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে স্থলমাইন বিস্ফোরণে হাতিটির সামনের ডান পা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরপর থেকেই বন বিভাগের দল তাকে চিকিৎসা দিয়ে আসছিল। তবে শুক্রবার বিকেলে আহত হাতিটি রামু এলাকায় ঢুকে পড়লে সেখানে পুনরায় চিকিৎসার চেষ্টা করা হয়। তখনই হাতিটি হঠাৎ আক্রমণ চালিয়ে ১৫ জনকে আহত করে।
আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজন কক্সবাজারের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। এছাড়া, হাতির আক্রমণের সময় সে একজন বন কর্মকর্তার কাছ থেকে একটি বন্দুক শুঁড় দিয়ে কেড়ে নেয়। পরে সেটি বন বিভাগের কর্মীরা উদ্ধার করতে সক্ষম হন।
কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা মো. নুরুল ইসলাম জানান, ‘হাতিটির অবস্থা গুরুতর হলেও তাকে বাঁচাতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে। আহতদের চিকিৎসার বিষয়েও বন বিভাগ সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে।’
বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আবু নাছের মোহাম্মদ ইয়াসিন নেওয়াজ জানান, ‘রামু সেনানিবাসে প্রাথমিক চিকিৎসার পর তিনজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। বিজিবির সহযোগিতায় এই চিকিৎসা ব্যবস্থা সম্ভব হয়েছে।’