টানা দুই দিনের বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ ক্যাম্পাস ও ছাত্রাবাস। এতে হাঁটু পর্যন্ত পানি উঠে ক্লাস রুমে। আর পানিতে বসেই স্নাতক ভর্তি পরীক্ষা দিচ্ছেন প্রায় ৪ হাজার শিক্ষার্থী।
এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন ভর্তি-ইচ্ছুক পরিক্ষার্থী ও তাদের সঙ্গে আসা অভিভাবকরা। এ ছাড়াও ক্যাম্পাসের বাহিরে বিভিন্ন কেন্দ্রে প্রায় ১০ হাজারেও বেশি শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন।
শনিবার (৩১ মে) সরজমিন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ ধর্মপুর ক্যাম্পাসে গিয়ে এমন চিত্র দেখা গেছে।
ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা গেছে, কলা ভবন, বিজ্ঞান ভবন-১, বিজ্ঞান ভবন-২, মিলিনিয়াম ভবন ও অর্থনীতি ভবনের নিচতলায় ১৫টিরও বেশি পরীক্ষা কক্ষ হাঁটু পানিতে থই থই করছে। এর মাঝেই বসে পরীক্ষা দিচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।
এ ছাড়াও কলেজের প্রধান ফটক, অশোকতলা রেলগেট এলাকা ও ধর্মপুরের তিনটি ফটকেই হাঁটু পানি মাড়িয়ে শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে দেখা গেছে। এতে বিভিন্ন ভোগান্তি শিকার হয় ভর্তি-ইচ্ছুক পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কলেজের একাধিক শিক্ষক কালের গণমাধ্যমকে বলেন, ভিক্টোরিয়া কলেজের জলাবদ্ধতা দীর্ঘ দিনের। অধ্যক্ষসহ দায়িত্বে থাকা কর্তা-ব্যক্তিদের অবহেলায় গত দুই দিনের বৃষ্টিতে পুরো ক্যাম্পাস পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
ক্যাম্পাস থেকে পানি নিষ্কাশনের জন্য তিনটি মোটর থাকলেও তাদের গাফেলতির কারণে সেগুলি ব্যবহার করা হয়নি। আজ স্নাতক ভর্তি পরীক্ষায় হাজার হাজার শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং কলেজের শিক্ষাকরা জলাবদ্ধতার কারণে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। সামনে বর্ষা আসছে। আমরা দ্রুত জলাবদ্ধতা সমস্যার স্থায়ী সমাধান চাই।
জেলার লাকসাম থেকে আসা আছমা আক্তার নামের এক পরীক্ষার্থী জানান, স্বপ্ন নিয়ে ভিক্টোরিয়া কলেজে ভর্তি পরীক্ষা দিতে এসেছি। কিন্তু স্বপ্নের ক্যাম্পাসে প্রথম এসেই জলাবদ্ধতার চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। দুর্ভাগ্যের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, আমার রুমের মধ্যে হাটু সমান পানি। সেই পানিতে বসেই পরীক্ষা দিতে হয়েছে।
চৌদ্দগ্রামের মাসকরা থেকে আসা পরীক্ষার্থী খাদিজা আক্তার বলেন, দেশের প্রাচীন কয়েকটি সরকারি কলেজের মধ্যে ভিক্টোরিয়া অন্যতম। আজ প্রথম এসেই যে দুরাবস্থা দেখেছি, পুরো ক্যাম্পাস পানিতে থই থই করছে।
জলাবদ্ধার বিষয়ে জানতে কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আবুল বাশার ভূঁঞা গণমাধ্যমকে বলেন, কলেজের জলাবদ্ধতা সমস্যা দীর্ঘ ২০ বছরের। আমি অধ্যক্ষ হিসেবে জয়েন্ট করেছি মাত্র কয়েক মাস হলো। এই সমস্যা সমাধান করা সময়ের ব্যাপার। তারপর সমাধানের লক্ষ্যে একাধিক পরিকল্পনা শিক্ষা প্রকৌশলী অফিসে জমা দেওয়া হয়েছে। প্লান পাশ হলে আশা করি কলেজের সকল সমস্যার সমাধান হবে।
শিক্ষকদের করা গাফেলতির অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তারা না বুঝেই কথা বলে। মোটর ব্যবহারের কোনো পরিস্থতি ছিল না। যার কারণে মোটর ব্যবহার করা হয়নি।