আওয়ামী লীগের মান্নান এখন বিএনপির সভাপতি

বাংলাদেশের রাজনীতিতে দলবদলের ঘটনা নতুন নয়। পুরোনো সেই ‘ঐতিহ্যকে’ যেন ধরে রাখলেন আব্দুল মান্নান মিয়া। আগে করতেন আওয়ামী লীগের রাজনীতি। ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পরপরই বদল ঘটালেন নিজের রাজনৈতিক অবস্থানের। যে ওয়ার্ডে তিনি ছিলেন আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক, এখন তিনি সেই ওয়ার্ডে বিএনপির সভাপতি।

ঘটনাটি কুমিল্লার মেঘনা উপজেলার বড়কান্দা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের। এ ঘটনা তৃণমূল বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।

জানা গেছে, বড়কান্দা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক আব্দুল মান্নান মিয়াকে এবার একই ওয়ার্ডে বিএনপির সভাপতি ঘোষণা করা হয়েছে। গত ১৭ জুন ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে ওয়ার্ড বিএনপির এক সভায় উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক আব্দুল অদুদ মুন্সির উপস্থিতিতে তাঁকে এ পদে মনোনীত করা হয়।

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মাহফুজুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মমিন মেম্বারসহ স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীরা।

সভা চলাকালে মান্নান মিয়াকে সভাপতি ঘোষণা করলে উপস্থিত অনেক নেতা-কর্মী হতভম্ব হয়ে পড়েন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক স্থানীয় বিএনপি নেতা বলেন, ‘বছরের পর বছর হামলা-মামলা সহ্য করে দলের পাশে থেকেছি। অথচ ত্যাগীদের উপেক্ষা করে একসময়কার আওয়ামী লীগ নেতাকে পদ দেওয়া হয়েছে—এটি ত্যাগী কর্মীদের প্রতি বড় রকমের অবিচার। যাঁদের কারণে এক সময় নিপীড়নের শিকার হতে হয়েছে, তাঁরাই আজ নেতৃত্বে। এতে দলের ভাবমূর্তিও প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।’

তাঁদের দাবি, দলে বহু ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতা রয়েছেন, যাঁরা প্রকৃত অর্থে নেতৃত্বের উপযুক্ত। কিন্তু বারবার বিতর্কিত ব্যক্তিদের দিয়ে নেতৃত্ব গড়ার প্রবণতায় তৃণমূলে অসন্তোষ বাড়ছে।

নেতাদের মতে, এমন সিদ্ধান্ত দলের অভ্যন্তরীণ ঐক্য এবং স্থানীয় রাজনৈতিক ভারসাম্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এখন দেখার বিষয়, বিএনপির কেন্দ্রীয় বা জেলা পর্যায়ের সিনিয়র নেতৃত্ব এ বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেন।

এদিকে, আওয়ামী লীগ নেতা থেকে বিএনপির সভাপতি হলেন—এই বিষয়ে জানতে একাধিকবার চেষ্টা করেও আব্দুল মান্নান মিয়ার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

মেঘনা উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক আব্দুল অদুদ মুন্সি মোবাইল ফোনে জানান, তিনি বর্তমানে একটি দরবারে আছেন, পরে কথা বলবেন। 

তবে ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘যদি প্রমাণিত হয় মান্নান মিয়া আওয়ামী লীগের লোক, তাহলে এই কমিটি বাতিল করে নতুন কমিটি গঠন করা হবে।’