ঢাকা মঙ্গলবার, ০১ জুলাই, ২০২৫

এখনো কেন ডাক্তারি পরীক্ষা হয়নি মুরাদনগরের সেই নারীর

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ১, ২০২৫, ১২:০০ পিএম
ভুক্তভোগী নারী। ছবি- সংগৃহীত

কুমিল্লার মুরাদনগরে সংঘটিত ধর্ষণ মামলায় পাঁচ দিন পার হলেও ভুক্তভোগী নারীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়নি। ভুক্তভোগী শুক্রবার (২৭ জুন) থানায় মামলা দায়ের করলেও তার সম্মতি না থাকায় মেডিকেল পরীক্ষা করাতে পারেনি পুলিশ। এতে মামলার তদন্ত কার্যক্রমে বড় ধরনের জটিলতা দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছে সংশ্লিষ্টরা।

মুরাদনগর থানার ওসি জাহিদুর রহমান জানান, পুলিশ ভুক্তভোগীকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলেও তিনি মত পরিবর্তন করায় তার ডাক্তারি পরীক্ষা করা সম্ভব হয়নি।

ভুক্তভোগীর এক ঘনিষ্ঠ আত্মীয় জানান, ধর্ষণ মামলার মূল আসামি ফজর আলীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে ব্যাপক নির্যাতন চালায় বলে গুজব ছড়িয়ে পড়ে। এতে আশঙ্কা করা হয় যে, ফজর আলী মারা যেতে পারেন। ফলে ভুক্তভোগী নারী ও তার পরিবার ভয় পেয়ে যায় এবং মামলা ও তদন্ত কার্যক্রমে সহযোগিতায় অনীহা প্রকাশ করে।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, এ ঘটনায় ফজর আলীসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ধর্ষণের পর ঘটনার ভিডিও ধারণ ও ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে তাদের মোবাইল ফোন ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। তবে ভিডিওটি প্রথমে কার আইডি থেকে ছড়ানো হয়েছিল, তা এখনো নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি।

আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) প্রতিনিধি অ্যাডভোকেট শিল্পী সাহা বলেন, ধর্ষণের মামলার ক্ষেত্রে ভিকটিমকে ডাক্তারি পরীক্ষার বিষয়টির গুরুত্ব বুঝিয়ে ঘটনার পরদিনই পরীক্ষা করানোর দরকার ছিল। এখন দেরিতে হলেও ওই নারীর ডাক্তারি পরীক্ষাসহ তার বস্ত্রের ডিএনএ নমুনা দেওয়া জরুরি। না হলে মামলার ক্ষেত্রে বড় ধরনের ত্রুটি থেকে যাবে।

এ বিষয়ে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. শারমীন সুলতানা বলেন, ভুক্তভোগী নারী যদি পরীক্ষা করাতে না চান, তাহলে জোর করে তা করানোর সুযোগ নেই। আইনে স্পষ্টভাবে এটি নিষিদ্ধ।

মুরাদনগর থানার ওসি জাহিদুর রহমান বলেন, আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি। কিন্তু ভুক্তভোগীর সম্মতি না থাকায় ডাক্তারি পরীক্ষা করানো সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মুরাদনগর সার্কেল) এ কে এম কামরুজ্জামান বলেন, ভুক্তভোগী মানসিকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত। তাকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে পরিবার ও সমাজের সমর্থন জরুরি। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণে পুলিশ বদ্ধপরিকর।