ফরিদপুরের সালথা উপজেলার বড় কামদিয়া গ্রামের দিনমজুরের ছেলে মো. মোশারফ শেখ এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। এক সময়ের হোটেল বাবুর্চি থেকে তিনি হয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাসার ব্যক্তিগত বাবুর্চি। আর এ সূত্রেই ভাগ্যের চাকা ঘুরে বর্তমানে তিনি কয়েকশ কোটি টাকার মালিক এমনটাই দাবি এলাকাবাসীর।
বিভিন্ন সময় হাসিনা নিজেও তার পুরোনো সহকর্মীদের নিয়ে বক্তব্যে বলেছিলেন, ‘আমার বাসায় কাজ করেছে সে এখন ৪০০ কোটি টাকার মালিক।’
জানা যায়, ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনার বাসার বাবুর্চির চাকরি পান মোশারফ। তিনি এখন কয়েক কোটি টাকার সম্পদের মালিক। গ্রামে ও শহরে রয়েছে তার বাড়ি-গাড়ি। অভিযোগ রয়েছে, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নিজ গ্রামের প্রতিবেশী কৃষকের জমি দখলসহ সাধারণ মানুষকে নানাভাবে হয়রানি করেছেন বাবুর্চি মোশারফ।
সম্প্রতি বড় কামদিয়া গ্রামের কৃষক মো. চাঁনমিয়া ফকিরের ছেলে সাগর মিয়া সালথা থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন মোশারফের বিরুদ্ধে।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালে কৃষক চাঁনমিয়া ফকিরের বড় কামদিয়া ৮১ নম্বর মৌজার ৬১৮ নম্বর দাগের ৪৩ শতাংশ জমি জোর করে দখল করে বাড়ি নির্মাণ করেন মোশারফ। বিভিন্ন সময় ওই জমি ছেড়ে দিতে বললে হুমকি-ধমকি ও মারধর করে চাঁনমিয়া ও তার পরিবারকে এলাকাছাড়া করেন। ১ জুন চাঁনমিয়ার পরিবারের লোকজন জমি উদ্ধারের চেষ্টা শুরু করলে মোশারফের লোকেরা ফের ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে যাচ্ছে।
চাঁনমিয়ার ভাতিজা সেন্টু ফকির বলেন, ‘আমার চাচার জমি দখল করে মোশারফ সেখানে ঘর বানিয়েছেন, এমনকি ঘরের ছাদে নৌকা টানিয়ে রাখেন যেন কেউ কিছু করতে না পারে। মামলা করলেই আমাদের গ্রামছাড়া করা হতো।’
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, মোশারফ শেখ ফরিদপুর শহরের হাড়োকান্দি ও রাজবাড়ী সড়ক এলাকায় দুটি বাড়ির মালিক। কামদিয়ায় রয়েছে বাড়ি ও অন্তত পাঁচ বিঘা জমি। এছাড়া ঢাকায়ও ফ্ল্যাট ও গাড়ি আছে বলে তিনি নিজেই দাবি করেছেন বলে জানান প্রতিবেশীরা।
মোশারফের প্রতিবেশী জামাল শেখ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর বাবুর্চির চাকরি পাওয়ার পর মোশারফ যেন আলাদিনের চেরাগ পেয়ে যান। গ্রামের সাধারণ মানুষকে ভয় দেখিয়ে জমি দখল ও নির্যাতন চালাতেন।’
তবে এসব অভিযোগের বিষয়ে মোশারফ শেখের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায় এবং বাড়িতেও কাউকে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে সালথা থানার ওসি মো. আতাউর রহমান বলেন, ‘জমি দখলের অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
আপনার মতামত লিখুন :