ঢাকা রবিবার, ০২ নভেম্বর, ২০২৫

গাজীপুরে আলোচিত রনি হত্যা মামলার মূল আসামি গ্রেপ্তার

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: নভেম্বর ২, ২০২৫, ০৯:৩৩ এএম
ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

গাজীপুরে আলোচিত ও রহস্যঘেরা রনি হত্যা মামলার দীর্ঘদিনের পলাতক প্রধান আসামি ফাহাদ সরকার টুটুলকে (৩১) গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)-১।

শুক্রবার (১ নভেম্বর) দুপুরে গাজীপুর মহানগরের সদর থানাধীন মনুরখোলা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

র‌্যাব-১ এর পোড়াবাড়ি ক্যাম্পের একটি বিশেষ আভিযানিক দল তথ্যপ্রযুক্তি ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এ অভিযান পরিচালনা করে।

অভিযানের সময় টুটুলের কাছ থেকে দুটি মোবাইল ফোন, একটি মোটরসাইকেল, একটি চাইনিজ ফোল্ডিং নাইফ এবং নগদ ৫৭০ টাকা জব্দ করা হয়।

গত বছরের ২৯ আগস্ট-২০২৪ গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গের সামনে থেকে এক অজ্ঞাত ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করে সদর থানা পুলিশ। পরে নিহতের স্ত্রী মোছা. সাবিনা আক্তার (৩৯) মরদেহ শনাক্ত করে জানান, নিহত ব্যক্তি তাঁর স্বামী রনি।

পরিবারের ধারণা, ওই দিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টার মধ্যে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা পরিকল্পিতভাবে রনিকে হত্যা করে। পরে ঘটনাটিকে আত্মহত্যা বা দুর্ঘটনা হিসেবে দেখানোর উদ্দেশ্যে মরদেহটি হাসপাতালের জরুরি বিভাগের বারান্দায় ফেলে রেখে যায়।

আরও জানা যায়, রনির পিঠ, ঘাড় ও উরুতে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন ছিল। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে গাজীপুর সদর থানায় হত্যা মামলা করেন (মামলা নং–২০, তারিখ: ৩১ আগস্ট ২০২৪; ধারা: ৩০২/২০১/৩৪ দণ্ডবিধি)।

ঘটনাটি তৎকালীন সময়ে স্থানীয় ও জাতীয় গণমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করে। র‌্যাব পরবর্তীতে ছায়া তদন্ত শুরু করে ও দীর্ঘ সময় ধরে আসামিদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে।

র‌্যাব-১ এর কমান্ডার লেফটেন্যান্ট নাফিজ বিন জামাল বলেন, দীর্ঘদিন আত্মগোপনে থাকা ফাহাদ সরকার টুটুলকে আমরা প্রযুক্তিগত সহায়তা ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে শনাক্ত করতে সক্ষম হই। শুক্রবার দুপুরে মনুরখোলা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

তিনি আরও বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে টুটুল রনি হত্যাকাণ্ডে সরাসরি সম্পৃক্ত থাকার কথা স্বীকার করেছে। হত্যার পর ঘটনাটিকে আত্মহত্যা বা দুর্ঘটনা হিসেবে উপস্থাপনের চেষ্টা করা হয়েছিল, যাতে তদন্ত ভিন্ন খাতে প্রবাহিত হয়।

র‌্যাবের প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব ও আর্থিক লেনদেনের বিরোধের জের ধরে রনিকে হত্যা করা হয়। ফাহাদ টুটুলসহ আরও কয়েকজন পরিকল্পিতভাবে রনিকে ডেকে নিয়ে যায়। পরে নির্মমভাবে হত্যা করে মরদেহ হাসপাতালের সামনে ফেলে দেয়, যাতে ঘটনাটিকে সাধারণ মৃত্যু বা দুর্ঘটনা বলে মনে হয়।