গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বরমী ইউনিয়নের বরকুল গ্রামে যৌথবাহিনীর অভিযানে অস্ত্র ও গুলিসহ সাতজনকে আটক করা হয়েছে। আটক ব্যক্তিদের মধ্যে আছেন গাজীপুর-৩ (শ্রীপুর-সদরের একাংশ) আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রার্থী এনামুল হক মোল্লা।
বৃহস্পতিবার (০৬ নভেম্বর) ভোররাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে যৌথবাহিনী বরমী ইউনিয়নের বরকুল গ্রামে অভিযান চালায়। অভিযানে এনামুল হক মোল্লাসহ শওকত মীর, জাহিদ, মোস্তফা, সিদ্দিক, বুলবুল ও তোফাজ্জলকে আটক করা হয়। তাদের কাছ থেকে দুটি পিস্তল, তিনটি ম্যাগাজিন, চার রাউন্ড গুলি, চারটি ওয়াকিটকি, চারটি বেটন, দুটি ইলেকট্রিক শক মেশিন, একটি হ্যামার নেল গান ও একটি ছুরি উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয় সূত্র জানায়, এনামুল হক মোল্লা দীর্ঘদিন ধরে সৌদি আরবের মক্কায় ব্যবসা করতেন। প্রায় ১৬ বছর পর ২০২৪ সালের শেষের দিকে তিনি দেশে ফেরেন। সেই দিনই হেলিকপ্টারে করে নিজ গ্রাম বরকুলে পৌঁছান তিনি। হেলিকপ্টারে আগমনের ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয় এবং এলাকায় তাকে ঘিরে শুরু হয় নানা আলোচনা।
দেশে ফেরার পর তিনি ঘোষণা দেন যে, তিনি আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গাজীপুর-৩ আসনে বিএনপির দলীয় প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চান। পরে মনোনয়ন না পাওয়ায় তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দেন। তার এই রাজনৈতিক অভিষেকের পর থেকেই এলাকায় অচেনা লোকজনের আনাগোনা ও রাতের বৈঠক নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে সন্দেহ সৃষ্টি হয়।
অভিযানের পর স্থানীয় প্রশাসন নিশ্চিত করেছে যে, উদ্ধার করা অস্ত্র ও সরঞ্জাম এনামুল হক মোল্লার নিয়ন্ত্রণে ছিল। স্থানীয়দের অভিযোগ, দেশে ফেরার পর এনামুল হক মোল্লা এলাকায় আধিপত্য বিস্তার এবং নির্বাচনি প্রস্তুতির নামে সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তোলার চেষ্টা করছিলেন।
শ্রীপুর থানার ওসি মহম্মদ আবদুল বারিক বলেন, যৌথবাহিনীর অভিযানে সাতজনকে আটক করা হয়েছে। আটককৃতদের থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, উদ্ধার হওয়া অস্ত্রগুলো এনামুল হক মোল্লার নিয়ন্ত্রণেই ছিল। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করছে পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থা।

