হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার বহরা ইউনিয়নের দলাগাঁও গ্রামে এক ভিক্ষুকের মৃত্যুর পর তার ঘর থেকে বস্তাভর্তি টাকা উদ্ধার হয়েছে। এ ঘটনায় পুরো গ্রামজুড়ে কৌতূহল ও আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
মৃত ভিক্ষুকের নাম নাসির মিয়া (৭০)। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ভিক্ষা করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। মিতব্যয়ী ও নিরহঙ্কার জীবনযাপনের কারণে গ্রামের মানুষ তাকে চিনতেন একজন সৎ ও শান্ত-স্বভাবের মানুষ হিসেবে।
পরিবারের সদস্যরা জানান, গত ৯ অক্টোবর বার্ধক্যজনিত কারণে নাসির মিয়া মারা যান। পরদিন ঘর পরিষ্কার করতে গিয়ে তারা একটি পুরনো বস্তা দেখতে পান। সন্দেহবশত সেটি খুললে ভেতরে পাওয়া যায় গুচ্ছ গুচ্ছ টাকার নোট।
পরে স্থানীয় মুরব্বিদের উপস্থিতিতে টাকা গোনা হলে দেখা যায়, বস্তার ভেতরে রয়েছে মোট ২ লাখ ২৪ হাজার টাকা। ধারণা করা হচ্ছে, নাসির মিয়া দীর্ঘদিন ধরে ভিক্ষা ও অনুদানের টাকা অল্প অল্প করে জমিয়ে রেখেছিলেন। কেউ কেউ মনে করছেন, তিনি কাউকে বিশ্বাস করতে না পেরে সেই টাকা নিজের ঘরেই লুকিয়ে রেখেছিলেন।
স্থানীয় বাসিন্দা শাহ আলম বলেন, নাসির মিয়া খুব সৎ ও সরল মানুষ ছিলেন। কারও কাছে হাত পাতলেও কখনো বাড়তি কিছু চাইতেন না। অবাক লাগে, এত টাকা তার কাছে ছিল, অথচ কেউ জানত না।
বহরা ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন বলেন, ঘটনাটি সত্য। মৃত্যুর কিছুদিন আগেও তিনি আমার কাছে এসে বয়স্ক ভাতার আবেদন করেছিলেন। আমরা কিছুটা সহযোগিতাও করেছিলাম। এখন তার মৃত্যুর পর ঘরে এত টাকা পাওয়া সত্যিই বিস্ময়কর।
স্থানীয়রা বলছেন, ঘটনাটি কেবল কৌতূহল নয়-সমাজের জন্য একটি বার্তা। দরিদ্র হয়েও সততা, মিতব্যয়িতা ও আত্মসম্মানবোধ কেমন হতে পারে, তার বাস্তব উদাহরণ হয়ে রইলেন ভিক্ষুক নাসির মিয়া।
বর্তমানে উদ্ধার হওয়া টাকাগুলো তার পরিবারের হেফাজতেই রয়েছে বলে জানা গেছে।