ঢাকা সোমবার, ০৪ আগস্ট, ২০২৫

প্রধান শিক্ষককে পেটানোর অভিযোগ সাবেক ইউপি সদস্য ও তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: আগস্ট ৩, ২০২৫, ০৯:৪৮ পিএম
দরিবিন্নি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার দরিবিন্নি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমানকে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে সাবেক ইউপি সদস্য ও বিএনপি নেতা আনোয়ার হোসেন এবং তার ভাই বাবুলের বিরুদ্ধে।

রোববার (৩ আগস্ট) সকালে উপজেলার দরিবিন্নি মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এ ঘটনা ঘটে।

আহত প্রধান শিক্ষককে উদ্ধার করে ঝিনাইদহ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন বিদ্যালয়ে কর্মরত অন্যান্য শিক্ষকরা।

প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমি সকালে স্কুলে যাচ্ছিলাম। রাস্তা থেকে স্কুলের মাঠে প্রবেশ করার সময় সাবেক মেম্বার আনোয়ার ও তার ভাই বাবুল এসে লোহার রড ও লাঠি দিয়ে অতর্কিতে হামলা চালায়। এরপর স্কুলের শিক্ষকরা আমাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। আনোয়ার মেম্বারের মেয়ে উর্মি এই বিদ্যালয়ের সভাপতি প্রার্থী ছিল। বিদ্যালয় থেকে তার নাম তিনবার পাঠানো হলেও যেকোনো কারণে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে তা বাতিল হয়। এ কারণে তারা আমার ওপর ক্ষিপ্ত।

এ ছাড়া, আনোয়ার মেম্বার ও বাবুল গত কয়েকদিন ধরে আমার কাছে এক লাখ টাকা দাবি করে আসছিল। আজ হঠাৎ করেই তারা হামলা চালায়।’

বিদ্যালয়ের ইংরেজি বিষয়ের সহকারী শিক্ষক মো. ফারুক হোসাইন বলেন, ‘সকালে অফিসকক্ষে বসে ছিলাম। হঠাৎ দেখি স্যার রক্তাক্ত অবস্থায় হেঁটে আসছেন। পরে আমরা তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাই।’

বিদ্যালয়ের নবগঠিত এডহক কমিটির সভাপতি আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘গত তিন দিন আগে বিদ্যালয়ের নতুন এডহক কমিটি গঠিত হয়েছে। আনোয়ার মেম্বার তার মেয়ে উর্মিকে সভাপতি করার চেষ্টা করেন। তিনবার তার নাম পাঠানো হলেও জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে তা প্রত্যাখ্যান করা হয়।’

তিনি বলেন, ‘এ কারণে প্রধান শিক্ষকের ওপর তারা ক্ষুব্ধ ছিল। হেডমাস্টার আমাকে জানিয়েছেন, বাবুল কয়েকদিন ধরে ফোন করে খাওয়া-দাওয়ার কথা বলে এক লাখ টাকা দাবি করে আসছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাবুলের বিরুদ্ধে এলাকায় বহু অভিযোগ রয়েছে। বিএনপির রাজনীতি করার সুবাদে তিনি বিভিন্ন সালিশ-দরবারের নামে মানুষের কাছ থেকে অর্থ আদায় করে থাকেন বলে অভিযোগ আছে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আনোয়ার হোসেন মেম্বার বলেন, ‘হেডমাস্টার ভালো মানুষ নন। তিনি সমিতির কিস্তির জন্য আমার কাছ থেকে বিভিন্ন সময়ে দুই লাখ টাকা নিয়েছেন। সেই টাকা ফেরত দিচ্ছেন না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আজ আমি সেই টাকা চাইতে গেলে আমার ভাই বাবুলের সঙ্গে তার ঝামেলা হয়। তবে আমি মারামারিতে জড়িত ছিলাম না।’

হরিণাকুণ্ডু থানার ওসি এম. এ. রউফ খান বলেন, ‘ঘটনাটি সম্পর্কে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহোদয় আমাকে অবহিত করেছেন। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’